বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ওয়াশিংটন-বেইজিং কূটনৈতিক সম্পর্ক নতুন ক্রসরোডে

সাক্ষাৎকারে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের কূটনৈতিক সম্পর্ক এক নতুন ‘ক্রসরোডে’ বলে মন্তব্য করেছেন বেইজিংয়ের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, অনাকাক্সিক্ষত জটিল একটি পিরিয়ড শেষে এ সম্পর্ক সঠিক পথে ফিরে আসবে। করোনাভাইরাস ইস্যু, বাণিজ্য ও মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ বেশ কিছু ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় এ সম্পর্কের বেশি অবনতি হয়েছে। তার প্রশাসন চীনের কয়েক ডজন কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে এসব কোম্পানির সম্পর্ক আছে বলে অভিযোগ আছে।
চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া ও অন্য রাষ্ট্রীয় মিডিয়াকে গতকাল সাক্ষাৎকার দেন স্টেট কাউন্সিলর এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্র স¤প্রতি চীনের বিষয়ে যেসব নীতি গ্রহণ করেছে, তা উভয় দেশের স্বার্থের জন্যই ক্ষতিকর। এটা বিশ্বের জন্য বড় বিপদ ডেকে এনেছে। তিনি বলেন, তাই এখন উভয় পক্ষের সামনে সুযোগ এসেছে আশা নিয়ে সম্পর্কের নতুন জানালা খুলে দেয়ার এবং নতুন করে আলোচনা শুরু করার।
৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছেন জো বাইডেন। তিনি আগামী ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা হাতে নেবেন। তার বিজয়ে ব্যাপকভাবে আশা জেগেছে বৈশ্বিক রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে উত্থান ঘটবে। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতার মেয়াদে চার বছরে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে, তার উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত মাসে ওয়াং ই আশা প্রকাশ করেছিলেন যে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত বাইডেন ওয়াশিংটনের চীনা নীতিতে বাস্তবিক উন্নতি ঘটাবেন এবং আগের অবস্থানে নিয়ে যাবেন। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত বাণিজ্য ও অন্যান্য ইস্যুতে চীনের সমালোচনা অব্যাহত রেখেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প অথবা বাইডেন কারো নাম উল্লেখ না করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান ওয়াং ই। তিনি বলেন, চীন যে সামাজিক ও উন্নয়নের পথ বেছে নিয়েছে তার প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। তিনি আরো বলেন, ওয়াশিংটন যদি শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে তাহলে উভয় পক্ষের মধ্যকার সঙ্ঘাত সমাধান করা যাবে। তিনি আরো বলেন, আমরা জানি যুক্তরাষ্ট্রের কিছু মানুষ চীনের দ্রæত অগ্রগতি দেখে আতঙ্কিত। কিন্তু সবচেয়ে টেকসই নেতৃত্বের উচিত হবে নিজেকে অব্যাহতভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়া। এক্ষেত্রে অন্য দেশের অগ্রগতি আটকে দেয়া উচিত হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিকরা করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি প্রথম দিকে ধামাচাপা দিয়ে রাখার জন্য চীনকে দায়ী করেন। এর ফলে ব্যবস্থা গ্রহণ বিলম্বিত হয়েছে। কিন্তু ওয়াং ই বলেন, এই ভাইরাসের বিস্তার রোধে সর্বোত্তম লড়াই করেছে চীন। এর মধ্য দিয়ে বাকি বিশ্বকে সতর্ক করা হয়েছে। তার ভাষায়, আমরা সময়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। সবার আগে আমরা এই মহামারি সম্পর্কে রিপোর্ট করেছি।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, করোনাভাইরাস সম্পর্কে চীন প্রথম সতর্ক করলেও, প্রমাণ বাড়ছে যে বিশ্বজুড়ে একাধিক স্থানে এ প্যাথোজেনের উদ্ভব হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রথমেই এই মহামারি সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সতর্ক করতে ছুটে এসেছি। পরবর্তীতে অনেকগুলো গবেষণায় দেখা গেছে, মহামারিটি সম্ভবত বিশ্বের অনেক জায়গাতেই ছড়িয়ে পড়েছিল।’
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর উহান শহরে অজ্ঞাত নিউমোনিয়া জাতীয় রোগের প্রথম কেস সনাক্ত করে চীন এবং তড়িঘড়ি করে সেখানকার একটি সামুদ্রিক মাছের বাজার বন্ধ করে দেয়। এ ঘটনার তিন সপ্তাহ পর পর্যন্ত ভাইরাসটির মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণের তথ্য পায়নি চীন।
করোনার উৎপত্তি জানতে শিগগির একদল আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞকে ছয় সপ্তাহের জন্য উহানে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবি্লউএইচও)। বেইজিং বার বার বলছে, অন্যান্য দেশেও একই ধরনের গবেষণা চালানো উচিত। তবে ডব্উলিএইচও জানিয়েছে, এটি শুরু হবে উহান শহরে, যেখানে প্রথমে ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের খবর পাওয়া গিয়েছিল। সূত্র : সিনহুয়া।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন