শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন করেছে যেসব দেশ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০২ এএম

লিঙ্গবৈষম্য থেকে শুরু করে ভাবমর্যাদা পরিবর্তন- এসব নানা কারণে বিভিন্ন দেশ তাদের জাতীয় সঙ্গীতে পরিবর্তন এনেছে। সম্প্রতি জার্মানিতেও জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তনের প্রস্তাব উঠেছে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের ঘোষণার পর ২০২১ এর ১ জানুয়ারি থেকে অস্ট্রেলিয়ানরা তাদের জাতীয় সঙ্গীতের একটি ভিন্ন সংস্করণ গাইবেন। জাতীয় সঙ্গীত অস্ট্রেলিয়াকে আর ‘ইয়াং অ্যান্ড ফ্রি’ হিসেবে অভিহিত করা হবে না। আদিবাসীদের সুদীর্ঘ ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রতিফলন ঘটানোর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই পরিবর্তন। জার্মানির সমতা বিষয়ক কমিশনার ক্রিস্টিন রোজে-ম্যোরিং জাতীয় সঙ্গীতে আরও বেশি লিঙ্গ সমতা আনার প্রস্তাব করেছেন। তিনি গানের যে অংশে ‘ফাটারলান্ড’ অর্থাৎ ‘পিতৃঊমি’ বলা হচ্ছে, সেখানে ‘হাইমাট’ অর্থাৎ ‘জন্মভূমি’ লেখার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলসহ অনেকে মনে করছেন, জাতীয় সঙ্গীতে পরিবর্তন আনার প্রয়োজন নেই। ২০১২ সালে অস্ট্রিয়ার জাতীয় সঙ্গীতে ‘ছেলেরা’-র জায়গায় ‘মেয়েরা এবং ছেলেরা’ লেখা হয়। উদ্দেশ্য লিঙ্গ সমতা আনা। উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডা সম্প্রতি তাদের জাতীয় সঙ্গীতকে আরও লিঙ্গ নিরপেক্ষ করেছে। সঙ্গীতের দ্বিতীয় লাইনে ‘তোমার সব ছেলেরা’-র জায়গায় ‘আমরা সবাই’ লেখা হয়েছে। ২০০৮ সালে নেপালে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয়। তার আগের বছর নেপালে নতুন একটি গানকে জাতীয় সঙ্গীতের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ১৯৬২ সালে গ্রহণ করা নেপালের আগের জাতীয় সংগীতে রাজতন্ত্রের প্রশংসা ছিল। তাই এতে পরিবর্তন আনা হয়। আফগানিস্তানে বেশ কয়েকবার জাতীয় সঙ্গীতে পরিবর্তন আনা হয়। তালেবান শাসনামলে আফগানিস্তানে কোনও জাতীয় সংগীতই ছিল না। তালেবানের পতনের পর ২০০২ সালে পুরনো জাতীয় সংগীতকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। পরে ২০০৬ সালে তৎকালীন কারজাই সরকার সবকিছু নতুন করে শুরু করতে জাতীয় সঙ্গীতেও পরিবর্তন করে। আফ্রিকান দেশ রুয়ান্ডার কথা উঠলেই গণহত্যার কথা মনে পড়ে। ১৯৯৪ সালে মাত্র একশ দিনের মধ্যে সে দেশে পাঁচ থেকে ১০ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। গণহত্যা পরবর্তী রুয়ান্ডার ভাবম‚র্তি গড়ে তুলতে দেশটি ২০০১ সালে একটি নতুন জাতীয় সঙ্গীত বেছে নেয়। দক্ষিণ আফ্রিকা ১৯৯৭ সালে আগের দু’টি জাতীয় সঙ্গীত থেকে কিছু অংশ নিয়ে নতুন একটি জাতীয় সংগীত তৈরি করে। আফ্রিকান্স ও ইংরেজি ভাষায় গানটি রচিত। তবে আফ্রিকান্স ভাষার অংশটি বর্ণবাদ আমলে ব্যবহৃত জাতীয় সঙ্গীতের অংশ হওয়ায় এর সমালোচনা করেন অনেকে। নেলসন ম্যান্ডেলা সেটি রিকনসিলিয়েটরি ব্যবস্থা হিসেবে বর্ণবাদ-পরবর্তী দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গীত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। ভ্লাদিমির পুতিন ২০০০ সালে রুশ প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৯৯০ সালের আগে ব্যবহৃত জাতীয় সঙ্গীত ফিরিয়ে আনেন। তবে গানের কথায় কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়। ১৯৯০ সালে যে জাতীয় সঙ্গীত গ্রহণ করা হয়েছিল তাতে কোনও কথা না থাকায় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া অ্যাথলেটরা এর সমালোচনা করেছিলেন। তাদের বক্তব্য ছিল, কথাবিহীন গান তাদের নাকি উদ্বুদ্ধ করতে পারেনি। ডয়েচে ভেলে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন