বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

সান্তাহারে আবাদি জমিতে ইটভাটা

আদমদীঘি (বগুড়া) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০২ এএম

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য সান্তাহার পৌর শহরের মধ্যে বশিপুর এলাকায় এবং এর পাশে ছোট্ট এক ফসলের মাঠে জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে একধিক ইটভাটা। দীর্ঘ দিন ধরে শহর এবং শহরের পাশে মাঠের তিন ফসলের জমিতে এসব ইটভাটা নির্মাণ করে উৎপাদন এবং বাজারজাত করে আসলেও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ, সরকারের কৃষি বিভাগ এবং পরিবেশ অধিদফতর রয়েছেন অন্ধের ভ‚মিকায়। 

গত ২৮ ডিসেম্বর পরিবেশ অধিদফতরের ভ্রাম্যমাণ আদালত শহরের পৌরসভা সড়কের সড়কের পাশে থাকা এই ইটভাটাগুলো টপকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে আদমদীঘির ছাতিয়ানগ্রাম এলাকায় গিয়ে দুটি অবৈধ ইটভাটাতে অভিযান পরিচালনা করে ভাঙচুর ও আর্থিক জরিমানা করে এবং ওই পথ দিয়ে ফের চলে যায়। উক্ত ভাটাগুলোতে অভিযান পরিচালনা না করার রহস্য কী তা নিয়ে স্থানীয় জনমনে নানা প্রশ্ন উঠে।
জানা গেছে, দেশে প্রচলিত আইন মোতাবেক তিন ফসলি জমিতে এবং পৌর এলাকার মধ্যে ইটভাটা নির্মাণের কোন অনুমোদন দেয়া হয় না। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ, কৃষি বিভাগ ও পরিবেশ অধিদফতরের নাকের ডগায় প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা বগুড়ার সান্তাহার পৌর শহরের বশিপুর এলাকার ছোট্ট এক মাঠের তিন ফসলি জমিতে কাছাকাছি একাধিক ইটভাটা নির্মাণ করেছেন। বছরের পর বছর ধরে এলাকার পরিবেশ দূষণ এবং কৃষি জমি কমিয়ে বীরদর্পে ইট ব্যবসা চালিয়ে আসছে। ফলে এই দুই ইটভার গ্যাস, বিষাক্ত ধোঁয়া ও জলন্ত কয়লা ও কাঠের কুচি উড়ে পরে আশেপাশের এলকার গাছপালা ও জমির চলতি ইরি-বোরো ধান, শাক-সবজি সব ধরনের ফসল নষ্টসহ এলাকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। জমির উর্বরতা শক্তি কমে ফসলের ফলন বিপর্যয় ঘটছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
স্থানীয়রা জানান, শুধু ধানের ক্ষতি হচ্ছে না আম, লিচু, কলা, পেয়ারা, পেপেসহ সকল ফল এবং গাছের ও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। গাছের ফল বড় না হতেই ভাটার গ্যাসও বিষাক্ত ধোঁয়াতে শুকিয়ে পাকার আগেই ঝরে পরে যায়। কমে যাচ্ছে মাঠের ধানের জমি। এছারও অবৈধভাবে রাস্তায় ভাটার ট্রাক্টর চলাচল করায় রাস্তা নষ্ট হচ্ছে।
সান্তাহার বিদ্যুৎ অফিসের জনৈক এক কর্মকর্তা জানান, অফিসের পাশেই ভাটা হওয়ায় এলাকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। এ বিষয়ে সংবাদপত্রে একাধিকবার খবর প্রকাশিত হলে পৌরসভা কৃষি ও পরিবেশ বিভাগের নজরে পড়ে না। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে ভাঁটা মালিকের আর্থিক দন্ড করলেও রহস্যজনক কারণে উচ্ছেদ এবং বন্ধ করার কোন উদ্যোগ নিতে দেখা যায় না।
সরেজমিন দেখা গেছে, ওই ছোট্ট একটি মাঠে পাশাপাশি রয়েছে বাবলু নামের দুটিসহ ৩টি ইটভাঁটি। এর একটি থেকে অপরটির দূরত্ব খুব বেশী হলে ৩০০-৫০০শ’ মিটার। স্থানীয়রা বলছেন, এই মাঠের জমিতে আমন, ইরি-বোরো এবং রবি শস্যের আবাদ করা হয়। এমন জমিতে পরিবেশ অধিদফতর এবং কৃষি বিভাগ কি ভাবে ইটভাঁটা নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছেন তা আমরা ভেবে অবাক হই। তারা আরো বলেন, পত্রিকায় খবর ছাপা হলে পর পরিবেশ অধিদফতরের লোকজন এসে ভাঁটা মালিকদের সাথে কথা বলে চলে যান। দেশের অন্যান্য জায়গার মত ভাঁটা গুঁড়িয়ে উচ্ছেদ করার উদ্যোগ নিতে দেখা গেলেও এই এলাকায় তা করা হচ্ছে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন