ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর পারস্য উপসাগর থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি তেলবাহী জাহাজ আটক করার ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জাহাজটিকে অবিলম্বে মুক্তি দেবার দাবি জানিয়েছে দ. কোরিয়া কর্তৃপক্ষ।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক বিবৃতিকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, এ নিয়ে কথা বলতে হরমুজ প্রণালীতে মোতায়েন দক্ষিণ কোরিয়ার সেনা সদস্যদের একটি প্রতিনিধি দল ইরানে গেছে।
আইআরজিসি’র নৌ শাখা এক বিবৃতিতে বলেছে, দক্ষিণ কোরিয়ার হানকুক কেমি নামের একটি জাহাজ সৌদি আরবের জুবাইল বন্দর থেকে ছেড়ে আসে কিন্তু জাহাজ থেকে রাসায়নিক পদার্থ ছড়িয়ে পারস্য উপসাগরের পানি দূষিত করছিল। জাহাজটিতে সাত হাজার ২০০ টন ইথানল বহন করা হচ্ছিল এবং বর্তমানে সেটি ইরানের বন্দর আব্বাসে আটক রয়েছে। জাহাজটিতে দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম ও মিয়ানমারের ক্রু ছিলেন এবং তাদের সবাইকে আটক করা হয়েছে।
জাহাজটি ইরানের বন্দর শহর বান্দার আব্বাসে আটক রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে, দক্ষিণ কোরিয়ার জল-দস্যু মোকাবেলা ইউনিটের সদস্যদের নিয়ে চই ইয়ং নামে একটি ডেস্ট্রয়ার রণতরী হরমুজ প্রণালীর কাছাকাছি গিয়ে পৌঁছেছে।
দক্ষিণ কোরিয়া বলেছে তারা কোন সামরিক তৎপরতায় যেতে চায় না। তারা বিষয়টি দ্বিপাক্ষিকভাবে কূটনৈতিক উপায়ে সমাধানে আগ্রহী বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র চোই ইয়াং-সাম।
ইরানের ওপর আমেরিকান নিষেধাজ্ঞার কারণে দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যাংকে ইরানের ৭০০ কোটি ডলার আটকে থাকার বিষয়টি নিয়ে ইরানে যখন একটা উত্তেজনা বিরাজ করছে, তার মধ্যেই এই জাহাজ আটকের ঘটনা ঘটল। দক্ষিণ কোরিয়ার উপ পররাষ্ট্র মন্ত্রী চোই জং-কুন আগে থেকেই নির্ধারিত এক সফরে আগামী সপ্তাহে ইরানে যাচ্ছেন বলেও ওই মুখপাত্র জানান।
ইরান তাদের জব্দ করা অর্থ-সম্পদ ছাড়ানোর ব্যাপারে দক্ষিণ কোরিয়া কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ দিতে এই জাহাজ আটক করেছে এমন আঁচ অনুমান নাকচ করে দিয়েছেন দ. কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী কাং কিউং-হোয়া।
‘‘আমাদের আগে সব তথ্য যাচাই করে দেখতে হবে এবং আমাদের জাহাজের নাবিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে," তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন। "জাহাজটির দ্রুত মুক্তির জন্য আমরা কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেছি।"
মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল জলদস্যু মোকাবেলা ইউনিটের সদস্যদের নিয়ে তাদের যে ডেস্ট্রয়ার জাহাজটি হরমুজ প্রণালীর কাছে পৌঁছেছে, তার লক্ষ্য দক্ষিণ কোরীয় নাগরিকদের "নিরাপত্তা নিশ্চিত করা"। সূত্র: বিবিসি বাংলা
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন