বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ফেলানী হত্যার ৯ বছর : বিচার না পেয়ে হতাশ বাবা-মা

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি, ২০২১, ১০:০৬ এএম

৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী সীমান্তে কিশোরী ফেলানী হত্যার ৯ বছর। ২০১১ সালের এই দিনে ভারতীয় রক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র গুলিতে অনন্তপুর সীমান্তে নির্মম হত্যার শিকার হয় কিশোরী ফেলানী। দীর্ঘ সাড়ে চার ঘন্টা কাঁটা তারে ঝুলে থাকে তার মরদেহ।এনিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হলে বিশ্বের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মধ্যে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে ভারত। পরে বিএসএফ এর বিশেষ আদালতে দুই দফায় বিচারিক রায়ে খালাস পান অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ।পরে এ রায়কে প্রত্যাখান করে ভারতীয় মানবাধিকার সংগঠন মাসুম এর সহযোগিতায় ভারতীয় সুপ্রিমকোর্টে রীট আবেদন করে ফেলানীর পরিবার।এরপর কয়েক দফা ফেলানী হত্যার বিচার কার্য অনুষ্ঠিত হয়। তবে বিচার কার্য অমীমাংসিত থাকায় এখনও ফেলানীর বাবা ও মায়ের চরম ক্ষোভ।২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ফেলানী হত্যার বিচার পুনরায় শুরু ১৭ নভেম্বর আবারও আদালতে সাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা। ২০১৫ সালের ২ জুলাই এ আদালত পুনরায় আসামী অমিয় ঘোষকে খালাস দেয়। রায়ের পরে একই বছর ১৪ জুলাই আবার ‘মাসুম’ ফেলানীর বাবার পক্ষে দেশটির সুপ্রীম কোর্টে রিট পিটিশন করে।ওই বছর ৬ অক্টোবর রিট শুনানী শুরু হয়। পরের দুই বছর কয়েক দফা শুনানী পিছিয়ে যায়। পরে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারী শুনানী দিন ধার্য হলেও শুনানী হয়নি।এরপর ২০১৯ এবং ২০২০ সালে কয়েকবার শুনানীর তারিখ ধার্য্য হলেও শেষ পর্যন্ত তা সম্পন্ন হয়নি। এদিকে মেয়ের হত্যাকারীর বিচার না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ফেলানীর বাবা ও মা।বুধবার ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম জানান,আমি আমার মেয়ে ফেলানী হত্যার বিচার চেয়ে অনেক ঘুরেছি মানবাধিকার সংস্থাসহ বহুজনের কাছে গিয়েছি।কোন ফল পাইনি।মেয়ে আমার চলে যাওয়ার প্রায় ১০বছর হতে যাচ্ছে।আজও তার বিচার পেলাম না।বার বার বিচারের তারিখ বদলায়।তাহলে বিচার পামু ক্যামনে।২০২০ সালের ১৮ মার্চ করোনার পূর্বে শুনানীর তারিখ থাকলেও তা হয়নি।এখন আর কোন খোঁজ খবর জানিনা।ফেলানীর মা জাহানারা বেগম জানান,ফেলানী হত্যার এত বছর হয়ে গেছে আজও বিচার পাইলাম না। আমি দুই দেশের সরকারের কাছে সঠিক বিচার দাবী করছি।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এস এম আব্রাহাম লিংকন জানান,ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক যেমন রয়েছে তেমনি বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতও এর সুষ্ঠু বিচার আশা করে।ফেলানী হত্যার বিচার প্রথমত:ভারতেই শুরু করে।কিন্তু বিএসএফ সঠিক সিদ্ধান্ত না দেয়ায় সুপ্রিমকোর্টে বিচারটি গড়ায়।ফলে সেখান থেকেই রায়টি আসবে।তিনি বলেন,এ হত্যাকান্ডের কয়েক দফা শুনানীর তারিখ পিছিয়ে গেছে। বর্তমান কোভিট-১৯ এর জন্য সেখানে ভার্চুয়াল কোর্ট চলছে।যদি ভার্চুয়ালিও বিচারের শুনানি হয় তাহলে দ্রুত এর নিষ্পত্তি হতে পারে। অন্যথা পরিস্থিতি ভালো হলে রীটটি শুনানী হবে।আশা করছি ফেলানীর পরিবার ন্যায় বিচার পাবে।
উল্লেখ্য,কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনীটারী গ্রামের নুরুল ইসলাম নুরু পরিবার নিয়ে থাকতেন ভারতে দিল্লীতে।মেয়ে ফেলানীর বিয়ে ঠিক হয় বাংলাদেশে। তাই ২০১১সালের ৬ জানুয়ারি মেয়েকে নিয়ে চলে আসেন দেশে।কিন্তু ৭ জানুয়ারী ভোরে ফুলবাড়ী অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে কাঁটাতারের উপর মই বেয়ে আসার সময় বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে ফেলানীর।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন