বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই এবং বসুরহাট পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেই যাব। অথচ, প্রশাসন থেকে কোন সহযোগিতা পাচ্ছি না। আমি সকল আনিয়মের বিরুদ্ধে জন প্রতিরোধ গড়ে তুলব। শনিবার বসুরহাট পৌরসভার কয়েকটি ওয়ার্ডে নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে তিনি বিভিন্ন পথসভায় বক্তব্য রাখেন।
আবদুল কাদের মির্জা বলেন, আমি যখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলি, অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলি, অপরাজনীতির বিরুদ্ধে কথা বলি, আমি নোয়াখালীর ত্যাগী নেতাদের পক্ষে কথা বলি, আমি যখন কবিরহাটের নীরিহ নেতাকর্মীদের কথা বলি, আমি যখন আমার কোম্পানীগঞ্জের অসহায় ছেলে মেয়েদের চাকরির কথা বলি, তখন আমাকে জাতীয়ভাবে বলা হয় পাগল ও উম্মাদ। আমি আগামী ১৬ তারিখে বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে প্রমাণ করব, আমি পাগল নাকি ভাল।
তিনি বলেন, গোপালগঞ্জে ৯৯ ভাগ লোক আওয়ামী লীগ করে, তিনি সেখানের এমপি, আগে মন্ত্রী ছিলেন এখন নেই। তিনি কি কি অনিয়ম করেছেন দেশবাসী জানেন। আনিয়ম না করলে তিনি মন্ত্রী হন নাই কেন? তিনি আমাকে বলেন আমি নাকি পাগল ও উম্মাদ। আমি আগামী ১৬ তারিখে বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে আমি তাকে বুঝিয়ে দিব আমি পাগল নাকি উম্মাদ।
তিনি আরো বলেন, আমাদের আরেকজন নেতা আমাকে বলে আমার মধ্যে নাকি দায়িত্বশীলতার অভাব আছে। তার বাড়ি কুষ্টিয়ায়। কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙে ফেলেছে, তখন তিনি কি করেছেন? তিনি কি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন? এগুলো বন্ধ করেন, আমাকে কি করবেন, আমাকে মেরে ফেলবেন, বহিষ্কার করবেন, জেলে দেবেন? অসুবিধা নাই আমি প্রস্তুত। আমি সারাদেশের কথা বলি নাই। আমি শুধু নোয়াখালী ও ফেনীর অপরাজনীতির কথা বলেছি। আজ আমার নেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র চলছে। মৌলবাদী অপশক্তির ষড়যন্ত্র করছে। সাম্প্রদায়িক শক্তি শেখ হাসিনাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে ফেলার ষড়যন্ত্র করছে। আমার নেত্রীকে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হচ্ছে, দল দেখতে হচ্ছে, দেশ দেখতে হচ্ছে, দেশের শিক্ষা, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান ঠিক রাখতে হচ্ছে। তার কি সময় আছে নোয়াখালী ও কোম্পানীগঞ্জ দেখার। এগুলো কার দায়িত্ব? কেন্দ্রীয় নেতাদের না? আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারা চাটুকার, তারা রাত দিন শেখ হাসিনাকে উত্যক্ত করছে, অধিকাংশ নেতা তাকে অসহযোগিতা করছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান হলো হাওয়া ভবনের জট। তারেক জিয়া দিয়ে দেশের ভালো কাজ হতে পারে না, তার মা খালেদা জিয়া ঘরে ঢুকে গেছে। হাসিনার পিতা এদেশে স্বাধীনতা দিয়েছে, হাসিনা ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। এখন শেখ হাসিনাকে ভোটের অধিকারের জন্য কাজ করতে হবে, আমরা কোম্পানীগঞ্জ থেকে সহযোগিতা করব।
রাতারাতি কিছুই করা সম্ভব হয় না। কিছু কিছু এমপি টাকা পয়সা দিয়ে নমিনেশন নিয়েছে, জীবনে কোন দিন এলাকায় যায় নাই, কাউকে চা খাওয়ায় নাই, গরিব মানুষ চিকিৎসার অভাবে মরে যায়, তাদেরকে সহযোগিতা করে নাই, গরিব মানুষের বিয়েতে সাহায্য করে নাই। তারা ভোটে ধারাইয়া মাস্তান ভাড়া করে পেশি শক্তি প্রয়োগ করে এমপি হয়ে যায়। আমি ভালো কে ভালো বলব, খারাপকে খারাপ বলব, কালোকে কালো বলব, সাদা কে সাদা বলব। আমি কাউকে ভয় পাই না। বাংলাদেশের কিছু কিছু জায়গায় ভালো ভোট হয়, যেমন আমাদের প্রেসিডেন্ট হামিদ সাহেব সব সময় এমপি হন, সরকারি দলে বানিয়েছেন। সত্য কথা বলে কবরে যেতেও প্রস্তুত আছি। আমি ৪৭ বছর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছি। সোনার চামুচ মুখে নিয়ে জন্ম নেইনি। আমি গরীব স্কুল শিক্ষকের সন্তান, আমি ছেঁড়া জামা কাপড় পরে স্কুল, কলেজে লেখাপড়া করেছি। গরিবের সাথে লড়াই করে শৈশবের দিনগুলো পার করেছি, আমার গরীব বাবা আমাকে জামা কিনে দিতে পারেনি, ঠিকমত ভাতও খেতে পারিনি, আমি না খেয়ে রাজনীতি করেছি। আমি কতদিন উপবাস করেছি, পবিত্র ঈদের দিন না খেয়ে কলেজের হোস্টেলে শুয়ে ছিলাম। ডিসি, এসপি কে বলছি নির্বাচনে কোন প্রকার অনিয়ম হলে, ১ নং আসামি হবেন ডিসি, ২ নং আসামি এসপি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার অনুরোধ সিনিয়র নেতারা অনিয়ম করলে তাদের বিচার করতে হবে। আমি ২ জেলার ১১ জনের নাম প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠিয়েছি। তারা দেশটাকে লুটেপুটে খাচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন