শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বর্তমান-সাবেক মেয়রের বাহাস

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

গুলিস্তান এলাকায় সিটি করপোরেশনের মার্কেটগুলোতে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ নিয়ে বাহাস তৈরি হয়েছে- ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এবং সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের মধ্যে। যে দোকানগুলো অবৈধ বলে উচ্ছেদ করছেন- মেয়র তাপস, সেই দোকানগুলো বৈধ বলে দাবি করেছেন সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। এদিকে মোহাম্মদ সাঈদ খোকন তাপসকে নিয়ে নানা অভিযোগ করে বলেছেন, তিনি মেয়র পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। মেয়র তাপস মোহাম্মদ সাঈদ খোকনকে নিয়ে কোনো মন্তব্য না করে বলেছেন, এটি তার ব্যক্তিগত বিষয়। ইতোমধ্যে মোহাম্মদ সাঈদ খোকনকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবিও উঠেছে। এমন অবস্থায় বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে আওয়ামী লীগ। দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, এটি বর্তমান মেয়র ব্যারিস্টার তাপস ও সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের ব্যক্তিগত বিষয়, দলীয় কোনো বিষয় নয়।

গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) শেখ ফজলে নূর তাপস সাংবাদিকদের বলেন, সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন বর্তমান মেয়রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে অভিযোগ করেছেন, তা কোনোভাবেই বস্তুনিষ্ঠ নয়। এটি তার ব্যক্তিগত অভিমত। কেউ যদি ব্যক্তিগত আক্রোশের বশবর্তী হয়ে কোনো কিছু বলে থাকে সেটার জবাব আমি দায়িত্বশীল পদ থেকে দেয়াটা সমীচীন মনে করি না। তিনি আরো বলেন, যদি কেউ উৎকোচ গ্রহণ করে, যদি কেউ ঘুষ গ্রহণ করে, যদি কেউ কোনো কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য কমিশন বাণিজ্য করে, যদি কেউ সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে, বিল দেয়ার জন্য কমিশন বাণিজ্য করে, সরকারি প্রভাব কাজে লাগিয়ে কারও দিকে জিম্মি করে বা কোনো কিছু দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কিছু অর্থ নিয়ে থাকে, অর্থ আত্মসাৎ করে থাকে সে ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়।

এর আগে গত শনিবার হাইকোর্ট এলাকার কদম ফোয়ারার সামনে এক মানববন্ধনে সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন অভিযোগ করে বলেছিলেন, তাপস দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শত শত কোটি টাকা তার নিজ মালিকানাধীন মধুমতি ব্যাংকে স্থানান্তরিত করেছেন এবং এই শত শত কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লাভ হিসেবে গ্রহণ করছেন। এটি স্থানীয় সরকার আইন ভঙ্গ করার সামিল। এছাড়া সিটি করপোরেশনের কর্মীদের বেতন না দিতে পারার অভিযোগও করেছেন তিনি।
সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের এমন অভিযোগের পর দল থেকে তাকে বহিষ্কারের দাবি উঠেছে। গতকাল আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ দাবি তোলেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ড. মোমতাজ উদ্দিন মেহেদীর সভাপতিত্বে আইনজীবী একেএম তৌহিদুর রহমানের সঞ্চালনায় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে উপস্থিত আইনজীবীদের মধ্যে বক্তৃতা দেন- পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হুমায়ুন কবির, ব্যারিস্টার মো. সাজ্জাদ, ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, সুপ্রিম কোর্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ বাকের উদ্দিন ভূঁইয়া, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মফিজ উদ্দিন, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হাসিনা মমতাজ, নূরে আলম উজ্জ্বল, তাসনিম সিদ্দিকী লিনা, শামীম সরদার, মোছা পরভীন আক্তার, ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক উপদেষ্টা জগলুল কবির, আবুল কালাম আজাদ। এছাড়া সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মনিরুজ্জামান এবং আবু হানিফ বক্তৃতা করেন।

এমন পরিস্থিতি তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের বিষয়ে সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন যে বক্তব্য দিয়েছেন এগুলো তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। গতকাল সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নবনির্বাচিত পরিষদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন। এসময় তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান উপস্থিত ছিলেন।

নোয়াখালীতে ওবায়দুল কাদেরের ভাই মির্জা আবদুল কাদের বিভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছেন। এদিকে ঢাকা দক্ষিণের সিটি মেয়র ফজলে নূর তাপস ও সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিচ্ছেন- এতে দলীয় শৃঙ্খলায় কোনো সমস্যা তৈরি হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রথমতো মেয়র তাপসের বিষয়ে মোহাম্মদ সাঈদ খোকন যে বক্তব্য দিয়েছেন, এগুলো তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। এখানে দলের কোনো কিছু নেই। আর নোয়াখালীতে মির্জা কাদের সাহেব যে বক্তব্য দিয়েছেন, আমাদের দলে এরকম বক্তব্য বহু আগে অনেকেই দিয়েছেন। আমাদের দলে মুক্তভাবে কথা বলার অধিকার সবার আছে। তার বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে মির্জা কাদের সাহেবের বক্তব্য।

তিনি বলেন, কিন্তু আগের বক্তব্যগুলো এত প্রকাশ হয়নি। কারণ তখন যারা বক্তব্য দিয়েছেন তারা তো দলে সাধারণ সম্পাদকের ভাই ছিলেন না। এখন যেহেতু সাধারণ সম্পাদকের ভাই বক্তব্য দিয়েছেন এজন্য এগুলো প্রতিদিন প্রচার পায়। এই হচ্ছে পার্থক্য। আমাদের দলে যে মন খুলে সবাই কথা বলতে পারে সেটিরই বহিঃপ্রকাশ এটি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন