বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

অভিভাবকদের হিমশিম অবস্থা

খুলনায় অনলাইন কোচিং বাণিজ্য

খুলনা ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১২ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

খুলনায় করোনাকালীন সময়ে অনলাইন কোচিং বাণিজ্যে দিশেহারা হয়ে পড়েছে অভিভাবকরা। বিশেষ করে মধ্য ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির পরিবারগুলোকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। একদিকে নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধিতে সংসার খরচ চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে সন্তানের লেখাপড়ার ব্যয়ভার মেটাতে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছে এসব পরিবারগুলো।
অভিভাবকরা জানায়, করোনাকালীন সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সন্তানের লেখাপড়ার কথা ভেবে অনলাইন নির্ভর কোচিং সেন্টারমুখী হতে বাধ্য হয়েছেন তারা। এ সুযোগে নগরীর বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের শিক্ষকরা অনলাইনে প্রতি বিষয় পড়াতে এক থেকে দেড় হাজার টাকা মাসিক আদায় করছে। এতে একজন অভিভাবককে শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীর মোবাইল ডাটাসহ মাসে গড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ করতে হয়। এছাড়া মাসের শেষে অনলাইন ক্লাসের পাঠ মূল্যায়ন নোট নিতে অতিরিক্ত আরো ৫ হাজার টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। ফলে অধিকাংশ মধ্যবিত্ত শ্রেণির অভিভাবক সংসার খরচ এবং সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এনজিও অথবা স্থানীয় সুদের কারবারিদের ঋণের জালে আটকা পড়ছে।
নগরীর ময়লাপোতা এলাকার বাসিন্দা শিউলী আক্তার একটি হাসপাতালে সেবিকার চাকরি করেন। তার দুই সন্তানের একজন এবার নবম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণিতে উঠেছে এবং অন্যজন এইএসসি প্রথম বর্ষে। করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় দুই সন্তানকে অনলাইন কোচিংয়ে ভর্তি করিয়েছেন তিনি। শিউলী আক্তার বলেন, বেতন যা পাই তা দিয়ে কোন প্রকারে সংসার খরচ চলে যায়। এর আগে কোচিং সেনটারগুলোতে অনেকের সঙ্গে কম খরচে পড়াতে পারতাম। কিন্তু করোনাকালীন সময়ে আলাদাভাবে অনলাইনে কোচিং করাতে সাবজেক্ট প্রতি এক হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। এতে দুই সন্তানের পেছনে অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। কি করবো উপায় নেই। তাই ধার করে হলেও সন্তানের লেখাপড়া চালিয়ে যেতে হচ্ছে।
নগরীর বেনী বাবু রোডের বাসিন্দা বোরহান হোসেন বলেন, করোনার পর থেকে ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা খারাপ। এ অবস্থায় সন্তানের লেখাপড়া তো আর বন্ধ করা যায় না। এ সুযোগে কোচিং সেন্টারের শিক্ষকরা এক প্রকার জবরদস্তি চালাচ্ছে অভিভাবকদের সঙ্গে। তাদের ব্যয়ভার মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের মত মানুষকে। কোচিং সেন্টারগুলোর শিক্ষকরা যদি আমাদের দুর্দশার কথা ভেবে বেতন কমাতো তাহলে এই করোনাকালীন সময়ে আমরা একটু হলেও স্বস্তি পেতাম।
কোচিং সেন্টারের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান চালু রাখতে তারা সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। এতে হয়তো অভিভাবকদের সামান্য ব্যয়ভার বেড়ে যাচ্ছে। তবে তাদের সন্তানরা উপকৃত হচ্ছে এটা স্বীকার করতে হবে। কারণ, করোনাকালীন সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সে ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা।
খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. সাদিকুর রহমান খান বলেন, এ ধরনের নির্দিষ্ট কোন অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। তবুও এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন