বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

অগ্রগতির খবর দিতে ডেকে শোনাল প্রশংসার খবর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০২১, ৮:২৯ পিএম

‘গুরুত্বপূর্ণ’ সংবাদ সম্মেলন ডেকে করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স নিয়ে গবেষণার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম সিএনএনের প্রশংসা পাওয়ার খবর দিলেও গবেষণায় অগ্রগতির কোনো খবর জানাল না বিসিএসআইআর। যুক্তরাজ্যে ধরা পড়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন বাংলাদেশেও শনাক্ত হওয়ার বিষয়েও স্পষ্ট কোনো বক্তব্য আসেনি এই সংবাদ সম্মেলনে।

বুধবার (১৩ জানুয়ারি) বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) এরই মধ্যে নতুন করোনাভাইরাসের তিন শতাধিক নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করেছে। সম্প্রতি তাদের একজন গবেষকের বরাত দিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে ধরা পড়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন বাংলাদেশেও শনাক্ত হওয়ার কথা জানানো হয়েছে।

সে কারণে প্রতিষ্ঠানটি ‘গুরুত্বপূর্ণ’ সংবাদ সম্মেলেনের আমন্ত্রণ জানালে আগ্রহী হয়ে ওঠেন ঢাকার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকরা। নানা প্রশ্ন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন তারা।

সংবাদ সম্মেলনের ব্যানারে লেখা ছিল ‘বিসিএসআইআরের জিনোমিক রিসার্চ ল্যাবরেটরির কোভিড-১৯ গবেষণার অগ্রগতি ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি’। শুরুতে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বিসিএসআইআরের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. আফতাব আলী শেখ। অত্যাধুনিক জিনোমিক গবেষণাগার স্থাপনের জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি। বিসিএসআইআর থেকে এখন পর্যন্ত ৩০৪টি জিনোম সিকোয়েন্সের তথ্য জিআইএসএইড-এ জমা দেয়া হয়েছে বলে জানান ডা. আফতাব আলী। লিখিত বক্তব্যে জিনোম গবেষণায় অগ্রগতি কিংবা করোনাভাইরাসের নতুন ধরন শনাক্তের বিষয়ে কোনো তথ্য না দেখে সাংবাদিকরা বিসিএসআইআরের চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চান- তাহলে অর্জন কী? তিনি তখন বলেন, সিএনএনের খবরে বাংলাদেশে ‘নূন্যতম’ সুযোগ-সুবিধা নিয়ে জিনোম গবেষণার দ্রুতগতির প্রশংসা করা হয়েছে।

সিএনএনের একটি প্রতিবেদনে জিনোম সিকোয়েন্সের জন্য নমুনা প্রক্রিয়াকরণে বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রশংসার একটি লাইন পড়ে শোনান আফতাব আলী। তিনি বলেন, বহুল প্রচারিত আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সিএনএন কোভিড-১৯ এর গবেষণায় অগ্রগতির জন্য বাংলাদেশের গবেষক দলের ভূয়সী প্রশংসা করেছে। সিএনএন তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, কম রিসোর্স থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও সুরিনামের মতো দেশগুলো স্যাম্পল প্রক্রিয়াকরণের দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকেও দ্রুত গতিতে কাজ করে। এছাড়া আন্তর্জাতিক সংস্থা জিসএইডের মুখপাত্র হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা দিয়েও প্রশংসা করেছেন সবার।

জিনোম সিকোয়েন্সের অগ্রগতি সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ডা. আফতাব বলেন, অগ্রগতি আগের মিটিংয়ে যেটি জানানো হয়েছিল সেটিই। গবেষণার ফলাফল তো আমরা গত মিটিংয়ে জানিয়েছি। আমরা আপনাদের ডাকার মূল কারণ কোভিড গবেষণায় আমরা একটা বড় ভূমিকা রাখছি। সারা পৃথিবীতে তিনটা দেশের নাম উল্লেখ করা হয়েছে যে তারা সর্বপ্রথম এবং সবচেয়ে বেশি ডেটা দিতে পেরেছে, তাতে বাংলাদেশের নামটা এসেছে। এতে বিসিএসআইআর গর্বিত এবং সেই সংবাদটা জানাতে আপনাদের ডেকেছি।

যেসব জিনোম সিকোয়েন্সের তথ্য জিআইএসএইড-এ জমা দেয়া হয়েছে, সেগুলোর ফলাফল জানতে চাইলে কোনো উত্তর দেননি বিসিএসআইআরের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, আমরা যদি নতুন ফল পাই, নতুন স্ট্রেইন পাই তাহলে সাথে সাথে আপনাদের জানাব।

বিসিএসআইআরের গবেষক দলের প্রধান ড. মো. সেলিম খান সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকলেও তিনি কথা বলার সুযোগ পাননি। এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে সংবাদ সম্মেলনস্থল ছেড়ে উঠে যান তিনি। যুক্তরাজ্যে পাওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরনটি ‘বাংলাদেশেও রয়েছে’- এমন একটি খবর গত ২৪ ডিসেম্বর কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

বিসিএসআইআরের জীবতাত্ত্বিক গবেষণা বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সেলিম খানের বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, গত নভেম্বরের শুরুতে বাংলাদেশ বিজ্ঞান এবং শিল্প গবেষণা পরিষদ করোনাভাইরাসের পাঁচটি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে। তাতে পাওয়া মিউটেশনের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাসের ‘মিল রয়েছে’।

ওই দিন বিসিএসআইআর চেয়ারম্যান মো. আফতাব আলী শেখ বলেছিলেন, অসমাপ্ত কাজের ভিত্তিতে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন নিয়ে ‘আতঙ্ক সৃষ্টি করা’ সমীচীন হবে না। পরে তিনিই আবার বলেছিলেন, জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের কাজটি ‘অনেক দূর’ এগিয়েছে। শিগগিরই সাংবাদিকদের ডেকে চুড়ান্ত ফল জানানো হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন