শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

উত্তরাঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ

সারাদেশে কুয়াশার বিস্তার

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

বিদায়কালে পৌষ মাসের ‘স্বাভাবিক’ শীতের কাঁপন শুরু হয়েছে গতকাল রাজশাহী বিভাগ থেকে। তবে গতকাল সন্ধ্যায় সর্বশেষ আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে দেশে তাপমাত্রা আবারও বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, বঙ্গোপসাগর হয়ে আসা হালকা ও নিচু মেঘের সাথে উষ্ণ-তপ্ত বায়ু প্রবাহ, বাতাসে অধিক হারে জলীয়বাষ্প রয়েছে। উত্তরের হিমেল হাওয়া জোরালো নয়। তাছাড়া ঊর্ধ্বাকাশের শীতল জেটবায়ু স্থলভাগের দিকে নামেনি এখনও। এর ফলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহের আবহ তৈরি হয়নি।

গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল নওগাঁ জেলার বদলগাছীতে ৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় রাতে ছিল ১৫.৬, চট্টগ্রামে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৯.৮ এবং ঢাকায় সর্বোচ্চ ছিল ২২.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল তথা রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের বেশিরভাগ জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায় এবং তা অব্যাহত রয়েছে। এ সময় উত্তর জনপদের ব্যাপক এলাকা মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে। তাছাড়া দেশের অনেক অঞ্চলে বিশেষত নদ-নদী অববাহিকায় ও মধ্যাঞ্চলে কুয়াশা বিস্তৃত হচ্ছে। অনেক এলাকা আংশিক মেঘলা রয়েছে।
আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, সৈয়দপুর অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত ও বিস্তার লাভ করতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। এরপরের ৫ দিনে তাপমাত্রা আবারও বৃদ্ধি পেতে পারে।

অস্থায়ীভাবে আকাশ আংশিক মেঘলাসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। সেই সাথে দেশের উত্তরাঞ্চলে দুপুর পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশাপাত অব্যাহত থাকতে পারে। উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে হিমেল হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা জানান, কুড়িগ্রামে আবারো তাপমাত্রা কমে প্রচন্ড ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। আরেক দফা মৃদু শৈত্য প্রবাহ শুরু হয়েছে। গতকাল দিনভর সুর্যের মুখ দেখা যায়নি। ঘন কুয়াশায় ছেয়ে যায় গোটা জনপদ। রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা অনেক কমে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এটি গত এক সপ্তাহে সবচেয়ে কম তাপমাত্রা। তবে দু’একদিনের মধ্যে তাপমাত্রা আরো অনেক মাত্রায় কমে আসবে বলে জানান তিনি।

এদিকে, গত তিনদিন ধরে ঘন কুয়াশার প্রভাব বেড়ে জনজীবনে অস্বস্তি নেমেছে। মৃদু শৈত্য প্রবাহে এখানকার জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয়ে রাতভর এবং সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকে উত্তরের এ জনপদ। দুপুর গড়িয়ে গেলেও সুর্যের মুখ দেখা যায়নি। ফলে শীতে প্রচন্ড ঠান্ডা অনুভূত হয় বেশি। এ কারণে এখানকার খেটে খাওয়া দিনমজুররা পড়েছে চরম বিপাকে। উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের দলন গ্রামের বাসিন্দা মোজাফফর আলী বলেন, ‘এত শীত পড়চে হামার এটে বাহে। হামরা গরিম মানুষ কটে যামু। এলাও কাইয়ো শীতের একনা কাপড়ও দিল না। হামরা শীতের কাপড় চাই’। অন্যদিকে, সদরের হালাবট এলাকার কৃষক মজিদ মিয়া জানান, এক দফা শৈত্য প্রবাহ হয়ে জমির বোরো বীজতলা কিছু ক্ষতি হয়। আবার শৈত্য প্রবাহ শুরু হয়েছে এবার যে কী হবে জানি না। বোরো আবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছি বীজতলা ক্ষতি হলে রোপন করা অসম্ভব হবে।

এছাড়াও শৈত্য প্রবাহ ও ঘন কুয়াশায় সুর্যের আলো না থাকায় হেড লাইট জ্বালিয়ে অনেককেই যানবাহন চালাতে দেখা যায়। ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ নানা শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও বিগত সময়ের চেয়ে হাসপাতালসমূহে বেড়েছে। তবে এ অবস্থা বিরাজ করলে রোগীর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন