শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

নৌকা ও ধানের শীষের জমজমাট ভোটের প্রচার

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের বাকি আর মাত্র নয় দিন। ২৭ জানুয়ারি ভোটের দিনকে সামনে রেখে নগরীতে চলছে জোরদার প্রচার। বেশ জমে উঠেছে নৌকা আর ধানের শীষের প্রচার লড়াই। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী এবং বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন
বিরামহীন প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের পক্ষে মাঠে দলের কেন্দ্রীয়, মহানগরী এবং জেলা নেতারাও। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা গণসংযোগ করে চলছেন দলীয় মেয়র প্রার্থী ও দলীয় প্রতিক নৌকা এবং ধানের শীষের পক্ষে।

অন্য দলের মেয়র প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারাও গণসংযোগ এবং পথসভায় বক্তব্য রাখছেন। নগরী ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ড এবং সংরক্ষিত ১৪টি মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরাও ভোটের প্রচারে ব্যস্ত। প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচার মাইকিং, পোস্টার, ফেস্টুন নগরীতে ভিন্ন আবহের সৃষ্টি হয়েছে। সর্বত্র উৎসবের আমেজ। তৃণমূলের নেতা কর্মীরা এখন দারুণ ব্যস্ত। ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে প্রচার। সেই সাথে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী বিশেষ করে সরকার দলীয় এবং বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। আর তাতে ভোটারদের মধ্যে বাড়ছে উদ্বেগ উৎকন্ঠা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ মাঠে নেমেছে। আচরণবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে কিনা তা দেখতে আছেন ১৪ জন নির্বাহী হাকিমের নেতৃত্বে টিম। এদিকে ভোট গ্রহণের যাবতীয় প্রস্তুতি এগিয়ে চলছে। আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ। চলবে আগামী ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত।

নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী গতকাল শনিবার মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের মতবিনিময় সভার মাধ্যমে দিনের প্রচার শুরু করেন। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ড ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির যৌথ উদ্যোগে মতবিনিময় সভা দারুল ফজল মার্কেটস্থ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এতে মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয় আমাদের অহংকার। এ অহংকারকে ভুলুন্ঠিত হতে দেয়া যাবে না।

স্বাধীনতার শত্রুদের সাথে যাদের আঁতাত গণরায়ে তাদের প্রত্যাখ্যান করতে হবে। দেশ মাতৃকার প্রতি ভালবাসা, দেশের মানুষের প্রতি ভালবাসা থেকে মরণপণ যুদ্ধে হানাদারের বিরুদ্ধে লড়েছি। গণঅধিকারের আন্দোলনে সবসময় নিজেকে ব্যাপৃত রেখেছি। আজকে দাফতরিকভাবে চট্টগ্রামের গণমানুষের কল্যাণে কাজ করার জন্য দলীয় মনোনয়ন নিয়ে ভোট যুদ্ধে নেমেছি। স্বাধীনতার শক্তি আমার এই ভোট যুদ্ধের মূল প্রেরণা ও শক্তি। এই শক্তিতে আগামী ২৭ তারিখের নির্বাচনী যুদ্ধে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের সম্মান রাখতে চাই। সকলের ভোট, দোয়া সমর্থন আদায়ে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করলে সিটি নির্বাচনের বিজয়কে মুজিব শতবর্ষ, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও জননেত্রীর উন্নয়নের অগ্রযাত্রার যুগপূর্তির মহাআনন্দের সাথে যুক্ত করতে সক্ষম হব ইন্শাল্লাহ্। এতে মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বক্তব্য রাখেন ।
অপরদিকে মতবিনিময় সভা এবং গণসংযোগ করেন ধানের শীষের প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন । এ সময় তিনি বলেন, চসিক নির্বাচনের পরিবেশ এখনো সবার জন্য সমান হয়নি। ভয়ভীতি প্রদর্শন করে সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি কমনোর পায়তারা করছে। ২৭ জানুয়ারি কেন্দ্র দখল ও ভোট কারচুপি ঠেকিয়ে চসিক নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে হবে। সে জন্য ছাত্রদল নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ ত্যাগ শিকারে প্রস্তুত থাকতে হবে। সর্বশক্তি দিয়ে এ নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে নির্বাচনী মাঠে ছাত্রদলকে আরো বেশি কৌশলী ও সক্রিয় হয়ে কাজ করার বিকল্প নেই। মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় ছাত্রদলকে ভ্যানগার্ডের ভূমিকা পালন করতে হবে। চসিক নির্বাচন উপলক্ষে নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয় মাঠে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অথিতির বক্তব্য রাখেন তিনি। পরে তিনি মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাদের নিয়ে নগরীর ওয়াসা মোড়, দামপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন।
নৌকার প্রচারে দুগ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫ নগরীর টাইগারপাস এলাকায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিমের প্রচারে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় টাইগারপাস বটতল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান লালখানবাজার এলাকায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিমের গণসংযোগ ছিল বিকেলে। এ সময় তার সঙ্গে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাইনুদ্দিন হাসান চৌধুরী যোগ দেওয়ার কথা ছিল।

অতিথিরা আসার আগে লালখান বাজার ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল হাসনাত মো. বেলাল ও লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুম তাদের অনুসারীদের জমায়েত করতে থাকেন।
এ সময় দুই পক্ষ মুখোমুখী হলে উত্তেজনা বেড়ে যায়। দুই পক্ষই একে অপরকে পাথর নিক্ষেপে করেন। পরে সংঘর্ষে জড়ান। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন।

কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল হাসনাত মো. বেলাল অভিযোগ করেছেন দিদারুল আলম মাসুম কাউন্সিলর পদে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করছে। মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিমের প্রচার উপলক্ষে কর্মীরা জমায়েত হলে মাসুমের অনুসারীরা হামলা করে। এতে কর্মী মোজাম্মেল হোসেন সোহাগ, মাহমুদ ও শাহীন আহত হন। তাদের চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুম বলেন, নির্বাচনী প্রচারণায় আমাদের কর্মীরা জমায়েত হওয়ার সময় বেলাল গ্রুপের লোকজন পেছন দিক দিয়ে অতর্কিত হামলা করে। এতে ১২ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

খুলশী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আফতাব হোসেন বলেন, বেলাল আর মাসুম গ্রুপের মধ্যে ঝামেলার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন