শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বাড়িকে আদালত বানিয়ে অন্যের জমি দখলের পাঁয়তারা!

সিংড়া (নাটোর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০২১, ২:০৮ পিএম

দলিল সম্পাদনার পর জমির দাগ-খতিয়ান ভুল হলে দেওয়ানী আদালতে মামলা করলে আদালত ইচ্ছে করলে দাগ-খতিয়ান ঠিক করে দিতে পারে। তবে নাটোরের সিংড়া উপজেলার আগপাড়া শেরকোল গ্রামের মৃত ইয়াতুল্লাহ মোল্লার ছেলে আফছার আলী বাড়িকে আদালত বানিয়ে জমির মুল দলিলের দাগ-খতিয়ান তিনি নিজেই ওভার রাইটিং করে নিয়েছেন। ঢাকা সুপ্রিম কোর্ট ও নাটোর জজ কোর্টের আইনজীবি জানান,জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে৪৬৭/৪৬৮ ধারায় আদালতে মামলা করা যেতে পারে।

জানা যায়,উপজেলার শেরকোল ইউপির আগপাড়া শেরকোল গ্রামের মৃত আজগর আলী ও তার স্ত্রী মৃত নকিরন নেছা ১১-০৩-১৯৫৭সালে সাবেক ৯৫৮দাগের ২৯শতাংসের কাত ২০শতাংস এবং ৬৯২দাগের ৩৩শতাংসের কাত ১৩শতাংস জমি কিনে ভোগদখল ও বসবাস করতে থাকেন। রেকর্ডে স্বামীর অংশসহ পুরো জমি নকিরন নেছার একক নামে হয়। নকিরন নেছার পেটের সন্তানাদি না থাকায় স্বামীকে দ্বিতীয় বিয়ে দিয়ে সতিনের ছেলেকে তার দলিল মোতাবেক ওই দাগের অংশ লিখে দেন। এরপর ২৯/০১/১৯৭৩সালে খোদাবস্ক ও খলিল মন্ডলের কাছে ৬৯২দাগের ৩৪শতাংসের কাত ২৬শতাংস জমি বিক্রি করার ৪/৫মাসের মাথায় মারা যান নকিরন নেছা। তার মৃত্যুর পর প্রতিবেশী মৃত ইয়াতুল্লাহ মোল্লার ছেলে আফছার আলী ০৪/০৯/১৯৭৫সালে অন্যলোককে নকিরন নেছা সাজিয়ে ৯৫৮দাগের ২৯শতাংসের কাত.২৫শতাংস জমির ভুয়া দলিল করে। তাড়াহুড়া করে দলিল করায় দাগ-খতিয়ান ভুল হয়। পরে দলিলের ফটোকপিতে দাগ ও খতিয়ান “ওভার রাইটিং” করে গোপনে নামজারী করে নেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে আনোয়ার হোসেন,আফছার আলীর নামজারী বাতিল চেয়ে সিংড়া উপজেলা ভূমি অফিসে একটি মিসকেস মামলা দায়ের করে। প্রায় দুই বছর উভয় পক্ষের দালিলিক প্রমানাদি ও সাক্ষ্য প্রমানের ভিক্তিতে আফছার আলীর নামজারী বাতিল করে উপজেলা ভূমি অফিস। এবার ভুমিদুস্য আফছার আলী তার মুল দলিলের দাগ ও খতিয়ান “ওভার রাইটিং” করে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে (রাজস্ব) বিভাগে আপিল করেছেন।

“১৯৫০সালের রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্রের ভূমি আইনের (১৫০)’র” উপ-ধারায় বলা হয়েছে,দলিল সম্পাদনার পর যদি কোন দলিলের খতিয়ান, দাগ অথবা নামের বানান ভুল হলে দুই-তিন বছরের মধ্যে দেওয়ানী আদালতে ভুল সংশোধনের মামলা করলে আদালত ইচ্ছে করলে ভুল দাগ-খতিয়ান ঠিক করে দিতে পারে। উল্লেখ্য দেশ স্বাধীনের পর থেকে অদ্যবদি ওই জমির খাজনা পরিশোধ করে আসছেন আনোয়ার হোসেন। তবে আফছার আলী আদালতের তোয়াক্কা না করে বাড়িতে বসে নিজেই তার মুল দলিলের দাগ-খতিয়ান “ওভার রাইটিং” করে নিয়েছেন। শেরকোল ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফুল হাবিব জানান, আফছার আলীর দলিলের দাতা নকিরন নেছা ১৯-৭২-৭৩সালে মারা গেছেন। সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তদন্ত প্রতিবেদনেও একই সাল উল্লেখ করা হয়েছে। ঢাকা সুপ্রিম কোটের আইনজীবি শাহ্ আহমেদ বাদল এবং নাটোর জজ কোর্টের আইনজীবি সাইদুর রহমান সৈকত বলেন, আদালতে মামলা না করে নিজে নিজে দাগ-খতিয়ান ওভার রাইটিং করলে ওই দলিল বাতিল যোগ্য এবং জাল দলিল হিসেবে গণ্য হবে। জালিয়াতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ৪৬৭/৪৬৮ ধারায় মামলা করা যেতে পারে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন