বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সঙ্ঘাতে বাড়ছে উদ্বেগ

হকারবান্ধব নীতিমালা হবে : রেজাউল নগরী হবে পানিবদ্ধতামুক্ত : শাহাদাত

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে সংঘাত-সহিংসতার ঘটনা বাড়ছে। আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দল এবং দলীয় ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। বিএনপির মেয়র এবং কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারেও সরকারি দলের সমর্থকদের হামলার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এতে ভোটের দিন এগিয়ে আসার সাথে সাথে জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে।

তবে নগর পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, সংঘাত-সহিংসতা করে কেউ পার পাবে না। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তাও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কঠোর হওয়ার কথা বলছেন। এরপরও সংঘাত বাড়ছে। নগরীর টাইগারপাসে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘাতে অন্তত ১৫ জন আহত হন শনিবার বিকেলে। এ ঘটনায় ওই এলাকায় গণসংযোগ কর্মসূচি বাতিল করেন নৌকার মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। এ ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ। এলাকায় বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি।

একই দিন নগরীর হালিশহরে নিজের প্রচার বহরে আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলার অভিযোগ করেন ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন। তার অভিযোগ ভোটকেন্দ্রে না যেতে সরকারি দলের ক্যাডাররা বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের হুমকি-ধমকি দিতে শুরু করেছে। তিনি নগরীর তিনটি ওয়ার্ডে পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা ও মাইক ভাঙচুরেরও লিখিত অভিযোগ করেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, শাহাদাত হোসেনের অভিযোগসহ তিনি বেশ কয়েকজন প্রার্থীর অভিযোগ পেয়েছেন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কমিশন সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে বলেও জানান তিনি।

গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেছেন, যেসব কর্মকান্ড নির্বাচনকে সহিংস করতে পারে সেগুলো আগাম প্রতিরোধ করার চেষ্টা চলছে। কাউকেই সহিংসতা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেয়া হবে না। এ পর্যন্ত যে কয়টি ঘটনা ঘটেছে পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছে। যারা ঘোষিত অপরাধী ও বিভিন্ন মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামি তাদের নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারেও পুলিশ সক্রিয় রয়েছে। পাঠানটুলীতে নির্বাচনী সহিংসতায় একজন নিহতের ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার না হলেও পুলিশ অস্ত্রধারীদের নজরদারিতে রেখেছে। চট্টগ্রামে দুই হাজার ৪৭৭টি বৈধ অস্ত্র রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন এসব অস্ত্র জমা দেয়ার সিদ্ধান্ত জানালে তা থানায় জমা নেয়া হবে।

এদিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থীসহ মেয়র এবং ৫৫টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচার অব্যাহত রেখেছেন। প্রতিশ্রুতির জোয়ারে ভাসছে চট্টগ্রাম নগরী। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের গণসংযোগ, পথসভা, মাইকিংয়ে সরগরম নগরী। কর্মী-সমর্থকেরা নিরলস প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারাও সক্রিয় হয়েছেন। বসে নেই অঙ্গ ও সহযোগী এবং পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও।

গতকাল নগরীর হকার্স মার্কেট ও নিউমার্কেট এলাকায় গণসংযোগকালে নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী চট্টগ্রামকে আধুনিক এবং মানবিক নগরী হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, গণমানুষের কল্যাণে কাজ করাই আমার রাজনৈতিক অঙ্গীকার। মেয়র নির্বাচিত হয়ে আমি ফুটপাতে যারা ব্যবসা করে জীবিকা চালায় তাদের ব্যাপারে সুস্পষ্ট একটি নীতিমালা প্রণয়ন করব। যাতে হকাররা ব্যবসা চালাতে পারেন এবং জনসাধারণের চলাচলেও বিঘ্ন না ঘটে। একটি আধুনিক, মানবিক, ব্যবসাবান্ধব ও গতিময় নগরী গড়তে আগামী ২৭ জানুয়ারি নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। রেজাউল করিম বলেন, আমি একজন কাজ পাগল মানুষ, আমি কাজ করতে চাই। এ সময় তার সাথে ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা মশিউর রহমান, আবুল কালাম আজাদ, এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, মোতালেব চৌধুরী প্রমুখ।

বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন নগরীর ষোলশহর, মোহরা এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি পানিবদ্ধতামুক্ত চট্টগ্রাম নগরী গড়তে ভরাট হয়ে যাওয়া খাল সংস্কার ও নতুন খাল খনন, আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেন। তিনি বলেন, বৃহত্তর চাঁন্দগাও-মোহরাসহ নগরীর বিশাল এলাকা জোয়ারে প্লাবিত হয়। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে সৌন্দর্যবর্ধন করে পর্যটনবান্ধব মহানগরী গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এ সময় নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, বিএনপি নেতা আবু সুফিয়ান, এরশাদ উল্লাহ প্রমুখ তার সাথে ছিলেন।

আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় কিশোর গ্যাং লিডার গ্রেফতার
নগরীর টাইগারপাসে নৌকার গণসংযোগে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে পুলিশের তালিকাভুক্ত ‘কিশোর গ্যাং লিডার’ মো. শরীফকে। শনিবার বিকেলে সংঘর্ষের ঘটনার পর রাতে নগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম লালখান বাজারে অভিযান চালিয়ে সংঘর্ষে একপক্ষের নেতৃত্বদাতা হিসেবে অভিযুক্ত শরীফকে গ্রেফতার করে। লালখান বাজার ওয়ার্ডের দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল হাসনাত মো. বেলাল এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুমের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, সংঘর্ষের ঘটনায় আবুল হাসনাত বেলালের পক্ষে মোহাম্মদ আলী এবং দিদারুল আলম মাসুমের পক্ষে মো. মাঈনুদ্দিন হাবিব বাদি হয়ে পৃথক মামলা দায়ের করেছেন। এর আগেই নগর গোয়েন্দা পুলিশ শরীফকে আটক করে। মো. শরীফ (২৮) লালখান বাজারের বাঘঘোনার মো. রহিমের ছেলে। এলাকায় শরীফ ‘ডেকচি শরীফ’ নামে পরিচিত এবং প্রায় ৫০জনের একটি কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান হিসেবে পুলিশের তালিকাভুক্ত। শরীফ আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুমের অনুসারী। ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল লালখান বাজারে যুবলীগ নেতা শরীফ আহমেদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি সে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
মোঃ দুলাল মিয়া ১৮ জানুয়ারি, ২০২১, ১:৩১ এএম says : 0
ফালতু একটি নির্বাচন সরকারের হাতে খমতা রাখিয়া যে কেন নির্বাচন আবার সরকারি দলের পক্ষে নির্বাচন এইটা কি নিবাচন (সংসদ নির্বাচন হবে দলীয় ভাবে)কিন্তু বাকি নিবাচন দলীয় ভাবে হয়া এইটা কি নিবাচন এই গুলি হবে নিদলীয় সেইটাই হবে নির্বাচন। আমার দৃষ্টিতে এই নির্বাচন গুলি দলীয় ভাবে করলে কেমন লাগে। আমার কাছে লাগে কচুর নির্বাচন অরথাত ফালতু বেকবাস নির্বাচন।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন