মাগুরায় সদরের বিভিন্ন মাঠে মাঠে এখন দিগন্তজোড়া সরিষা ফুল বাতাসে দোল খাচ্ছে। অবারিত এ সরিষা মাঠগুলো দেখলে মনে হবে যেন কেউ হলুদের গালিচা পেতে রেখেছে। বিস্তীর্ণ মাঠে এ হলুদ ফুলের সরিষার ক্ষেত দেখতে শহর থেকে উৎসুক মানুষ ছুটে আসছে মাঠে। হলুদ ফুলে বসেছে মৌমাছি আর তাদের গুনগুন শব্দে মুখর হচ্ছে প্রকৃতি।
মাগুরা কৃষি বিভাগ বলছে, এবার আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় জেলায় সরিষার বাম্পার ফলনের আশাবাদী তারা। জেলায় এবার মোট সরিষা আবাদ হয়েছে ১৩ হাজার ৪৯৫ হেক্টর জমিতে। তার মধ্যে সদরে আবাদ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। চলতি বছরে সদরে ৭ হাজার ২২০ হেক্টর, শ্রীপুরে ৬ শত হেক্টর, শালিখায় ৪ হাজার ৪৭৫ হেক্টর ও মহম্মদপুরে ১ হাজার ২শ’ জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এবার জেলায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১.৩২ হেক্টর। চলতি বছরে জেলায় বারি ৯,১৪ ও ১৭ জাতের সরিষার চাষ হয়েছে। তার মধ্যে বারি ৯ ও ১৭ জাতের সরিষার ফলন সবচেয়ে ভালো বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ। তারা বলেন, বারি ৯ ও ১৭ জাতের সরিষার ফলন প্রতি হেক্টরে ১.৩৫ মেট্রিক টন।
মাগুরা সদরের কার্পাসহাটি গ্রামের বাবলু শিকদার জানান, সে চলতি বছরে ২ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছে। এ চাষে খরচ কম কিন্তু লাভ বেশি। সরিষা আবাদের কিছুদিন বাড়তি যতœ ও নিয়মিত সেচ-সার দিলে ফলন ভালো হয়। এবার আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় সরিষার ফলন বাম্পার হবে বলে সে আশাবাদী।
সদরের বাঘবদাইড় ইউনিয়নের তেঘরিয়া গ্রামের সরিষা চাষি ছুরমান ও মালেক মোল্যা জানান, প্রতি বছরই সে সরিষার চাষ করে। এ চাষে ফলন ভালো হয়, পরিশ্রম কম। তাই তাদের এলাকার প্রায় অনেক চাষিরাই এখন এ চাষ করছে।
মাগুরা শহরের পাশের গ্রাম পারনান্দুয়ালী গ্রামের আব্দুল আজিজ জানান, বিভিন্ন চাষের পাশাপাশি প্রতি বছর সরিষা করে থাকে। এ বছর সে ১ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছে। সরিষা আবাদের পর বাড়তি পরিচর্যা ও নিয়মিত সার প্রয়োগ করে। আশা করছে এ বছর ফলন ভালো পাবে।
মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামানিক জানান, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জেলায় সরিষার বাম্পার ফলনের আশাবাদী তারা। সরিষার ভালো ফলনের জন্য এবার কৃষি বিভাগ থেকে জেলায় ৩ হাজার ৫শ’ জন চাষিকে এ চাষের উপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলার অধিকাংশ সরিষা চাষিদের মধ্যে বিনামূল্যে সার ও বীজ দেয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন