স্ট্রোকের নাম শোনেনি এমন মানুষ এখন খুব কম পাওয়া যাবে। এমনকি সাধারণ মানুষের মুখেও এই স্ট্রোক কথাটি অনেক শোনা যায় । আমাদের মস্তিষ্কের কোনো অংশে রক্ত সরবরাহের ঘাটতি দেখা দিয়ে যদি আক্রান্ত অংশের কোষ নষ্ট হয় তবে তাকে স্ট্রোক বা ব্রেন স্ট্রোক বলে। অনেক সময় রক্তনালী ফেটে গেলেও দেখা দিতে পারে স্ট্রোক। বর্তমান বিশ্বে স্ট্রোক মানুষের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। মস্তিষ্কের অংশ বিশেষ নষ্ট হওয়ায় রোগীর দেহে বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।
স্ট্রোক হলে সবার যে একইরকম উপসর্গ দেখা দেয় তা কিন্তু নয়। একেকজনের ক্ষেত্রে আক্রান্ত হওয়ার স্থান ও পরিমানের উপর উপসর্গ একেকরকম হয়। কারো ক্ষেত্রে শরীরের ডান বা বাম অংশ অবস হয়ে যায়। আবার কারো কারো কথা বলতে বা কথা বুঝতে সমস্যা হয়। অনেক সময় রোগী বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে। কথা জড়িয়ে আসা, একটা চোখে অথবা দুই চোখে দেখতে সমস্যা হওয়া, চোখে ঝাপসা দেখা, চলাফেরা করতে না পারা, চলাফেরায় ভারসাম্য নষ্ট হওয়া, বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্রমে অসামঞ্জস্য দেখা দেওয়া, তীব্র মাথাব্যথা ইত্যাদিও কিন্তু স্ট্রোকের উপসর্গ । অনেক সময় আবার বড় কোন উপসর্গই থাকেনা।
বর্তমানে বিজ্ঞানীরা অন্য অনেক কারনের পাশাপাশি কম ঘুমের সাথে স্ট্রোকের সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। আমাদের অনেকেই বর্তমানে পারিবারিক বা পারিপার্শ্বিক নানা চাপের কারণে সঠিকভাবে ঘুমাতে পারেন না। আবার জীনগত কারণেও ঘুমের সমস্যা বা ইনসমনিয়া দেখা দিতে পারে। এরকম যদি চলতেই থাকে তবে দেখা দিতে পারে হার্টের সমস্যা বা মস্তিস্কের সমস্যা স্ট্রোক। সুইডেনের এক গবেষক অনেক মানুষের উপর গবেষণা করে এই তথ্য প্রমাণ করেছেন। তবে শুধু কম ঘুমের কারণেই এরকম হচ্ছে, না সাথে আর কোন সমস্যা জড়িত আছে এই বিষয়ে কিছুটা বিতর্ক থেকেই গেছে।
সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন আট ঘণ্টা ঘুম দরকার। অনেকেই এই সময়টা কমিয়ে দেন। আবার অনেকের ঘুমের নানা সমস্যা থাকে। অনিদ্রার নানাবিধ কারণ রয়েছে। তার মধ্যে আছে মানসিক চাপ, বিষন্নতা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ইত্যাদি। বিষণ্ণতায় খুব সকালেই ঘুম ভেঙ্গে যায়। অভ্যাসের পরিবর্তন এবং শোয়ার জায়গা পরিবর্তন হলে অনেকের ঘুম হয়না। চা-কফি বেশি পান করলে ঘুমের ব্যাঘাত হতে পারে। বর্তমান প্রজন্মের অনেকের রাত জাগার অভ্যাস আছে। এই অভ্যাস কিন্তু ক্ষতিকর হতে পারে। শোয়ার ঘরে টেলিভিশন দেখার অভ্যাস ইত্যাদি কারণেও ঘুমের সমস্যা তৈরি হয়ে থাকে।
স্ট্রোক থেকে মৃত্যু হতে পারে। হতে পারে প্যারালাইসিস। দেখা দিতে পারে নানা রকম জটিলতা। তাই সাবধান হতেই হবে। প্রতিদিন আট ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। ঘুমের সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন