শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

সিরিজ জয়ে বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৪৯

বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ওয়ানডে

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০২১, ২:৪৯ পিএম | আপডেট : ৩:১১ পিএম, ২২ জানুয়ারি, ২০২১

তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয়টিতে ১৪৮ রানে গুটিয়ে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ম্যাচে দাপুটে জয় পাওয়া বাংলাদেশের বিপক্ষে শুক্রবার মিরপুরে ৪৩.৪ ওভারে এই রান তোলে সফরকারীরা।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে পেসারদের স্পেল কোনোমতো সামলে উঠলেও স্পিনে ধসে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

এদিন রুবেলের পরিবর্তে ইনিংস শুরু করেন মোস্তাফিজ। আগের দিন এই পিচে ভেতরের দিকে সুইংয়ে চোখ জুড়িয়েছিলেন। এদিন গোড়াপত্তন করতে এসে শুরু থেকে সহজাত অ্যাঙ্গেল পান। বাইরের দিকে বেরিয়ে যাওয়া বলে দারুণ নিয়ন্ত্রণ রাখেন। দ্বিতীয় ওভারে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে একটা ভেতরের দিকে সুইং করান। অল্পের জন্য বেঁচে যান অভিষিক্ত ওতলি।

সাফল্য পান পঞ্চম ওভারে। স্টাম্পে পিচ করে একটু ভেতরে ঢোকে বল। বাড়তি একটু লাফিয়ে আমব্রিসের ব্যাটের কানায় লেগে বল উড়ে যায় গালিতে। দেখার মতো ক্যাচ নেন মিরাজ। ১৫ বলে ৬ করে ফেরেন আমব্রিস।

মিরাজ দুইজনকে ফেরান ১৪তম ওভারে। ঠিক পরের ওভারের শেষ ডেলিভারিতে সাকিব ফেরান আরেকজনকে। পরে যারা এসেছেন তারাও দাঁড়াতে পারেননি।

আগের ম্যাচে ৭.২ ওভারে মাত্র ৮ রান খরচ করে ৪ উইকেট নেয়া সাকিব এদিন ২ উইকেট নেন। ১০ ওভারে ৩০ রান দেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।

মুস্তাফিজের প্রথম চার ওভারের দুই ওভারই মেডেন। বাকি দুই ওভারে দুই রান দেন! দ্বিতীয় স্পেলে আর বল করতে আসেন ৮ উইকেট পড়ার পর। এই ওভারেও দেন এক রান।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের সবচেয়ে বেশি রান এসেছে নবম জুটিতে। জোসেফ এবং পাওয়েল ৪৭ বলে ৩২ রান তোলেন। এই জুটি ভাঙতে বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত নেন তামিম।

৩৮তম ওভারে ফের মোস্তাফিজকে আক্রমণে এনে শর্টগালিতে ফিল্ডার রাখেন। হালকা বেরিয়ে যাওয়া বলে সেখানেই ক্যাচ দেন জোসেফ। ২১ বলে ১৭ করে মোস্তাফিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি। মোস্তাফিজ ৮ ওভারে মোট ১৫ রান দেন।

মিরাজ ৯.৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন। রুবেল ৭ ওভারে ২৩ রান দিয়ে উইকেট বের করতে পারেননি।

অভিষেকে তিন উইকেট নেয়া হাসান ৯ ওভারে ৫৪ রান দিয়ে এক উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ৪৩.৪ ওভারে ১৪৮ (আমব্রিস ৬, ওটলি ২৪, জশুয়া ৫, ম্যাককার্থি ৩, জেসন ১১, মেয়ার্স ০, বনার ২০, পাওয়েল ৪১, রিফার ২, জোসেফ ১৭, আকিল ১২*; মুস্তাফিজ ৮-৩-১৫-২, রুবেল ৭-০-২৩-০, হাসান ৯-০-৫৪-১, মিরাজ ৯.৪-০-২৫-৪, সাকিব ১০-০-৩০-২)।

একশ পেরুল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

রান খরার ইনিংসে পরপর দুই ওভারে বাউন্ডারি পেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মিরাজকে বেরিয়ে এসে মাথার ওপর দিয়ে ছক্কায় ওড়ালেন রভম্যান পাওয়েল। পরের ওভারে সাকিবকে লং অন দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠালেন আলজারি জোসেফ।

এই চারে একশ স্পর্শ করল ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান, ৩২.২ ওভারে। ৩৫ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ১১১ রান।

নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে বিপর্যস্ত উইন্ডিজ

উইন্ডিজের খেলার গতি কোনোভাবেই ওয়ানডে মেজাজের নয়। এবার ইনিংসের ১৪ তম ওভারের প্রথম বলে দ্বিতীয় উইকেট শিকার করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দলীয় ৩৬ রানে মিরাজের বলে এক্সট্রা কাভারে অভিষিক্ত কেয়র্ন ওটলির (২৪) ক্যাচ নিয়েছেন তামিম ইকবাল।

একই ওভারের চতুর্থ বলে আবারও শিকার ধরেন মিরাজ। সরাসরি বোল্ড করে দেন ২২ বলে ৫ রান করা জসুয়া ডি সিলভাকে। ৩৭রানে তৃতীয় উইকেট হারায় উইন্ডিজ। সেই সাথে আরও একটি উইকেট নিলেন সাকিব আল হাসান। এরপর রান আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন কাইল মেয়ার্স। এরপর জেসন মোহাম্মেদ ও এনক্রুমা বনার চেষ্টা করছিলেন জুটি গড়ে তোলার। কিন্তু তাদের প্রচেষ্টা খুব দীর্ঘায়িত হতে দিলেন না সাকিব। আর্ম বলে ফেরালেন জেসনকে। সাকিবের বলটি টার্ন করবে ভেবে ব্যাট পেতে দিয়েছিলেন জেসন। কিন্তু বল পিচ করে সোজা গিয়ে লাগে তার প্যাডে। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের আবেদনে সাড়া দিতে খুব একটা সময় লাগেনি আম্পায়ার গাজী সোহেলের। জেসন রিভিউ নিয়েছিলেন। কাজ হয়নি তাতে, উল্টো হারাতে হয় রিভিউ।

বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে একটু বিবর্ণ ও খরুচে কেবল হাসান মাহমুদ। এবার তাকে উইকেট উপহার দিলেন এনক্রুমা বনার।

হাসানের এই ওভারের প্রথম বলেই দারুণ কাট শটে বাউন্ডারি আদায় করে নিয়েছিলেন বনার। ওভারের চতুর্থ বলটিও লেংথ বল পেয়ে কাট করতে যান। কিন্তু এবার বল ছিল ব্যাটসম্যানের আরও কাছে। জায়গা ততটা ছিল না। বল বনারের ব্যাটে লেগে আঘাত করে স্টাম্পে।

থিতু হয়ে যাওয়া আরেক ব্যাটসম্যান হারাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৫ বলে ২০ করে ফিরলেন বনার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০.৪ ওভারে ৭ উইকেটে ৭১।

মিরাজের জোড়া উইকেট, বিপদে ক্যারিবীয়রা

আমব্রিসের বিদায়ে ক্রিজে আসেন জশুয়া ডি সিলভা। আরেক ওপেনার জর্ন ওটলিকে সঙ্গে পাওয়ার প্লে শেষ করেন তিনি। তবে ১৩তম ওভারে এসে মেহেদি হাসান মিরাজের বলে তামিম ইকবালের হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন ওটলে। ২৪ রান করে ফিরে যান এই ব্যাটসম্যান। দুই বল পরেই সোজা বলে ডি সিলভাকে বোল্ড করেন এই স্পিনার। ২২ বলে ৫ রান করেন তিনি। এই মুহূর্তে ক্রিজে আছেন নতুন দুই ব্যাটসম্যান জেসন মোহাম্মদ এবং কাইল মায়ার্স। ১৫ ওভারে সফরকারীদের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩৯ রান।

প্রথম উইকেট মুস্তাফিজের

প্রথম ম্যাচের মতোই সুনিল আমব্রিসকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট এনে দিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। এবার অবশ্য অপেক্ষা করতে হয়েছে পঞ্চম ওভার পর্যন্ত। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান বেশি হয়নি, কেবল ১০।

স্টাস্পে পিচ করে একটু ভেতরে ঢোকে বল। বাড়তি একুট লাফিয়ে আমব্রিসের ব্যাটের কানায় লেগে বল উড়ে যায় গালিতে। চমৎকার রিফ্লেক্স ক্যাচ নেন মিরাজ। আমব্রিসের রান ১৫ বলে ৬।

টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিং বেছে নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ওয়ানডেতে ৯৭ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের দাপুটে জয় তুলে নিয়ে সিরিজে এগিয়ে আছে টাইগাররা।

ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে দিয়ে ১০ মাস পর দেশের মাটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরে বাংলাদেশ। ম্যাচটি দিয়ে দীর্ঘ বিরতির পর জাতীয় দলের জার্সিতে ফেরেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। প্রথম ম্যাচেই দুর্দান্ত বোলিংয়ে ম্যাচ সেরা হোন তিনি। এছাড়া ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে তামিম ইকবালের অভিষেক হয় এই সিরিজের প্রথম ম্যাচটি দিয়ে।

জৈব সুরক্ষা বলয়ে শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) মিরপুরে শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও থাকছে না দর্শকের উপস্থিতি। আজ জিতলেই এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জিতে নেবে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ একাদশ: লিটন দাশ, তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক) মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সৌম্য সরকার, মেহেদী হাসান মিরাজ, হাসান মাহমুদ, রুবেল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ: সুনীল আমব্রিস, জশুয়া দা সিলভা (উইকেটরক্ষক), আন্দ্রে ম্যাকার্টি, জেসন মোহাম্মদ (অধিনায়ক), কাইল মায়ার্স, নক্রুমাহ বোনার, রভমেন পাওয়েল, কিয়র্ন ওটলে, আকিল হোসেইন, আলঝেরি জোসেফ, রেইমন রেইফার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন