শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আজ আসছে ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন

অবশেষে করোনার অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমোদন সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০২ এএম

করোনা প্রাদুর্ভাবের প্রায় ১০ মাস পর দেশে করোনার অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমোদন দিলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গতকাল রোববার সচিবালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, অনেকদিনের দাবি ছিল অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমতি দেয়ার। এখন এটা চালু করার অনুমতি দিয়ে দিয়েছি। তিনি আরো জানান সোমবার আরো ৫০ লাখ ভ্যাকসিন আসছে। এজন্য সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

এর আগে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটিসহ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা একাধিকবার অ্যান্টিবডি পরীক্ষার দাবি জানিয়ে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, দেশে ভ্যাকসিন দেয়ার আগে অ্যান্টিবডি টেস্ট চালু করা দরকার।

২০২০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় পরামর্শক কমিটি তাদের সভায় অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্টের ওপর গুরুত্বারোপ করে। কমিটি তাদের সভা শেষে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তখন বলেছিল, বর্তমানে পিসিআর টেস্টের মাধ্যমে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হচ্ছে, যার পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। কোভিড-১৯ পরীক্ষার পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারলে কোভিড-১৯ সংক্রমণ আরও বেশি শনাক্ত করার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য জাতীয় পরামর্শক কমিটি অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্টের জন্য একাধিকবার পরামর্শ দেয়। জাতীয় পরামর্শক কমিটি মনে করে, তিন পদ্ধতিতে (পিসিআর, অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্ট) কোভিড-১৯ পরীক্ষা কার্যক্রম পাশাপাশি থাকলে তা কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

এর আগে ২০২০ সালের ৩ জুন কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি করোনা শনাক্তে র‌্যাপিড টেস্টের জন্য সুপারিশ করে। তারা আরটি পিসিআর (রিভার্স ট্রান্সক্রিপটেজ পলিমারেজ রিঅ্যাকশন) পরীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করার পক্ষেও মত দেন।

কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, এখন সেরোসার্ভিল্যান্স নিয়ে কাজ করার সময় এসে গেছে। যার জন্য অ্যান্টিবডি টেস্ট চালু করাও প্রয়োজন। এটা করা গেলে বিশ্ব মহামারি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সংক্রমণ পরিস্থিতির একটি পরিষ্কার চিত্র পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, সংক্রমণ বুঝতে হলে অ্যান্টিবডি টেস্ট শুরু করা জরুরি। সেরোসার্ভিল্যান্স ছাড়াও অ্যান্টিবডি টেস্টের গুরুত্ব রয়েছে প্লাজমা থেরাপির জন্য।

কোভিড-১৯ ল্যাবরেটরি পরীক্ষা সম্প্রসারণ নীতিমালা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী বলেন, মহামারির সময়ে ইনফেকশন কত জনের হয়েছে, সেটা অ্যান্টিবডি টেস্ট ছাড়া বলা যায় না। তাই এ সময়ে অ্যান্টিবডি টেস্ট খুব জরুরি, নয়তো পরিসংখ্যান সঠিক হবে না। আসলে দেশে কত জন সংক্রমিত হয়েছে, আবার কত জনের শরীরে অ্যান্টিবডি গ্রো করেছে, কিন্তু পোস্ট কোভিড সিন্ড্রোমে মারা গেছেন, সেটা জানার জন্য হলেও অ্যান্টিবডি টেস্ট দরকার।

গতকাল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক সংবাদ সম্মেলন করে জানান, কিট দিয়ে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি পরীক্ষার অনুমতি দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক দিনের দাবি ছিল অ্যান্টিবডি পরীক্ষার বিষয়টি। আমরা এখন থেকে অ্যান্টিবডি টেস্ট করার অনুমতি দিচ্ছি। এটা অনেকেরই দাবি ছিল। তিনি আরো বলেন, ২০ লাখ ভ্যাকসিন আমরা পেয়েছি। সোমবার আমাদের আরও ৫০ লাখ ভ্যাকসিন আসবে আশা করছি। এজন্য সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

কবে নাগাদ অ্যান্টিবডি পরীক্ষা হবে, কত সংখ্যক কিট আছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এখন আপনাদের সামনে বললাম তখন থেকেই অনুমোদন দেয়া হয়ে গেল। বাজারে কী পরিমাণ অ্যান্টিবডি টেস্ট কিট আছে, এই পরিসংখ্যান আমি দিতে পারব না। যার প্রয়োজন হবে কিট নিয়ে আসবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এই কিট আমদানি করতে পারবে। পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন হাসপাতাল এটা নিতে পারবে। এটার মধ্যে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়নি। তিনি আরো বলেন, ভ্যাকসিন কোন জেলায় কোন উপজেলায় নিয়ে যাব, সেই পরিকল্পনাও করা হয়ে গেছে। ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার (সম্মুখসারির যোদ্ধা), যাদের আমরা প্রথমে ভ্যাকসিন দেব তাদের তালিকাও আমাদের হাতে আছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী আমাদের সময় দিয়েছেন। ভ্যাকসিন দেয়ার যে পরিকল্পনা সেটা উনি উদ্বোধন করবেন। ভ্যাকসিন দেয়ার কাজ শুরু হবে কুর্মিটোলা হাসপাতাল থেকে। সেখানে কিছু লোককে ভ্যাকসিন দেয়া হবে। এর মধ্যে যারা নার্স, রোগীর একদম পাশে থাকেন, তাদেরকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। তাদেরকেই আমরা প্রথমে ভ্যাকসিন দেব। পর্যায়ক্রমে আস্তে আস্তে সবাই পাবে।

এ সময় সরকারি টিকা দেয়ার একটা পর্যায়ে বেসরকারি টিকা আনার অনুমোদন দেয়া হবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এ সময় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
Towhidul Islam ২৫ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:২৩ এএম says : 0
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সবাইকে টিকা প্রয়োগ করার পরই জনগনকে টিকা প্রয়োগ করুন।
Total Reply(0)
Asish Barmon ২৫ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:২৫ এএম says : 0
ভ্যাকসিনের রিয়্যাকশন গবেষণা করা হোক,এবং যথাযথ ভাবে তা বিশ্লেষণ করে জনগণকে দেওয়া হোক।
Total Reply(0)
Razaul Karim Swapan ২৫ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:২৬ এএম says : 0
তা ঠিক আছে , বেসরকারি এজেন্ট হিসাবে বেক্সিমকো দায়িত্ব নিলো কিন্তু ২ ডলারের ভ্যাক্সিন ৫ ডলার কেনো ?
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন