শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

হাতকাটা রিকশাচালকই ছিনতাইকারী

হাইকোর্টের সামনে হামিদুল হত্যায় গ্রেফতার ৫

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০২ এএম

শাকিল ওরফে ডুম্বাস, তার ডান হাত কনুই থেকে কাটা। এজন্য তাকে ‘হাতকাটা শাকিল’ বলেও ডাকে অনেকে। রিকশাচালক হলেও তার মূল পেশা ছিনতাই। ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যও তিনি। গত ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর হাইকোর্টের সামনে খুন হওয়া ডিস ব্যবসায়ী হামিদুল ইসলাম হাতকাটা শাকিলের রিকশাতেই উঠেছিলেন। হাইকোর্ট মাজার থেকে সেগুনবাগিচায় যাওয়ার পথে জাতীয় ঈদগাহ মাঠের সামনের ফুটপাতে ওই রিকশার গতিরোধ করে ছিনতাইকারী সোহেল ওরফে এরাবিয়ান সোহেল, জাহিদ হোসেন ও শুক্কুর আলী। এসময় হামিদুলের কাছ থেকে একটি স্যামসাং ২১ এস মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। তখন হামিদুল চিৎকার করলে এরাবিয়ান সোহেল চাকু দিয়ে পায়ে আঘাত করে। এতে তার রগ কেটে রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। গতকাল মঙ্গলবার মিডিয়া সেন্টারে হামিদুল হত্যার সঙ্গে জড়িত ৫ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার ও এসব তথ্য কথা জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা হামিদুলকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। এদের মধ্যে শাকিল একজন রিকশাচালক। এরাবিয়ান সোহেল হচ্ছে মূলহোতা। তার সাথে জাহিদ ও শুক্কুর আলী সহযোগী। আর সোহেল মিয়া ছিনতাইয়ের মালামাল ক্রয়কারী। হামিদুলের ছিনতাই হওয়া মোবাইলও সোহেল মিয়াই কিনেছিলেন। তাদের সবার বাসা কামরাঙ্গীরচর এলাকায়।

অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার আরো বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানো শাকিলের ছদ্মবেশ। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় রিকশা চালাত এবং টার্গেট ব্যক্তিকে নির্জন জায়গায় নিয়ে ছিনতাই করতো। প্রতিবন্ধী হওয়ায় মানুষের সহানুভূতিও কাজ করতো তার প্রতি। পুলিশও সহজে তাকে কিছু বলতো না। যার ফলে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে সব সড়কে চলাচল করতে পারতো। গ্রেফতারকৃত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ১০টি করে ছিনতাই মামলা রয়েছে। প্রত্যেক মামলাতেই তারা জামিনে রয়েছেন। এরাবিয়ান সোহেল গত সাত মাস আগে জেল থেকে বের হয়েছেন আর হাতকাটা শাকিল এক বছর আগে বেরিয়েছিলেন। বের হয়ে পুনরায় তারা ছিনতাইয়ে নামে। হামিদুল হত্যার সাথে এরা সবাই জড়িত। ঘটনায় ব্যবহৃত একটি চাকু ও রিকশা জব্দ করা হয়েছে। আর হামিদুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে এই গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন কারণে ঢাকা শহরে ছিনতাই কিছুটা বেড়েছে। এর কারণে রাজধানীতে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। ডিবি পুলিশের ৩৩টি টিম কাজ করছে। ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলে অনেকে পুলিশের কাছে আসতে চান। তিনি ভুক্তভোগীদের অনুরোধ করেন যাতে থানায় গিয়ে মামলা করা হয়। কারণ ডিবি পুলিশ মামলা নিয়ে কাজ করে। গুরুত্ব দিয়ে প্রত্যেকটি মামলা ধরে ধরে কাজ করা হচ্ছে। ছিনতাই কিছুটা বাড়ার ফলে ডিবি পুলিশ গত ১৬ জানুয়ারি থেকে রাজধানীতে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে বলেও জানান তিনি।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে হাফিজ আক্তার বলেন, রাজধানীতে কতগুলো ছিনতাই স্পট আর কতগুলো ছিনতাইকারী গ্রুপ আছে তা বলা যাচ্ছে না। তবে ছোট ছোট কিছু গ্রুপ নতুন করে তৈরি হয়েছে তা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। আবার রাস্তার ধারে যারা নেশা করত তারাও ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত হচ্ছে। সেদিকেও নজর দেয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য গত ২৩ জানুয়ারী শনিবার রাতে হাইকোর্টের সামনে কদম ফোয়ারার কাছে ছুরিকাঘাতে নিহত হন ৫৫ বছর বয়সী হামিদুল ইসলাম। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কেবল টিভির সংযোগ দেওয়ার ব্যবসা করে আসছিলেন। তিনি জাসদের শাহবাগ থানা এলাকার সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। পরিবার নিয়ে তোপখানা রোডের ‘বসতি ময়ূরীতে’ থাকতেন তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
Kiron Hossain ২৬ জানুয়ারি, ২০২১, ৯:৫০ পিএম says : 0
কি এক অবস্হা বিরাজ করছে দেশে কোথাও নিরাপত্তা নেই
Total Reply(0)
Azad mullah ২৭ জানুয়ারি, ২০২১, ১০:৫৪ পিএম says : 0
আরে ভাই রকক যখন ভকক হয়ে যায় তখন আর নিরাপত্তার আসা করে লাভ কি
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন