শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ধর্ম দর্শন

প্রশ্ন : ইসলাম কি দেশপ্রেমের প্রতি উৎসাহিত করে?

নাজমুল ইসলাম কাসিমী | প্রকাশের সময় : ২৮ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

উত্তর : এ দেশ আমাদের গৌরবের মিনার। ভালোবাসার গোলাব। সুতরাং দেশের প্রতি প্রতিটি নাগরিকের ভালোবাসা থাকা আবশ্যকীয়। এ ক্ষেত্রে কোরআন-সুন্নাহ আমাদেরে দেশপ্রেমের প্রতি উৎসাহ দেয়। ইসলামেও রয়েছে দেশপ্রেমের গুরুত্ব অত্যাধিক। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য কর এবং তোমাদের ন্যায়পরায়ণ শাসকের আদেশ মেনে চলো’ (সূরা নিসা : ৫৯) আরও ইরশাদ হয়েছে- ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি যাতে তোমরা একে অপরকে চিনতে পারো। আর তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সবচে মর্যাদাবান সে যে আল্লাহকে সর্বাধিক ভয় করে। (সূরা হুজুরাত, আয়াত : ১২) হাদিসে এসেছে; হযরত আনাস রা. বলেন, ‘আমি খেদমতের নিয়তে রাসুলের সাথে খায়বার অভিযানে গেলাম। অতঃপর যখন অভিযান শেষে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে এলেন, উহুদ পাহাড় তাঁর দৃষ্টিগোচর হলো তিনি বললেন, এই পাহাড় আমাদেরকে ভালবাসে, আমরাও একে ভালবাসি। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৮৮৯) এছাড়াও হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায়হজ্বের ভাষণে বলেন, ‘‘হে লোকসকল! জেনে রেখো! তোমাদের প্রতিপালক একজন, তোমাদের পিতা একজন। জেনে রেখো, অনারবের উপর আরবের, আরবের উপর অনারবের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই। সাদার উপর কালোর, কালোর উপর সাদার কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই। তবে তাকওয়ার ভিত্তিতে একজন আরেকজনের উপর শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করতে পারবে।’’ (মুসনাদে আহমদ, ৫/৪১১; বাইহাকির সূত্রে দুররে মানসুর ৬/১২২) । ইসলামের ইতিহাস পাঠে আমরা দেখতে পাই, পূর্বসূরি মনীষীরা স্বদেশ ও স্বজাতিকে নিজের সন্তান-পরিজনের মতো ভালোবাসতেন। হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) তার পরিবারের অনেক সদস্য, ওমর বিন আবদুল আজিজ (র.), মুহম্মদ বিন কাসিম, সাইয়্যেদ আহমদ শহিদ, ইসমাঈল শহিদ, মীর নিসার আলি তিতুমির, টিপু সুলতানসহ অসংখ্য মুসলিম নেতা দেশের স্বাধীনতা, মানুষের ধর্মীয় ও জাগতিক অধিকারের জন্য জীবন দান করে গোটা উম্মতের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। আরবিতে একটি বাণী স্বতঃসিদ্ধ আছে ‘হুব্বুল ওয়াতান মিনাল ইমান’। ‘দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ’। জন্মভূমি মক্কা মোকাররমার প্রতি মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অপরিসীম ভালোবাসার কথা কে না জানে। তাঁকে যখন প্রতিপক্ষের প্রভাবশালী লোকরা হিংস্রতা ও চরম নিষ্ঠুরতায় মক্কা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করল। তিনি যখন পবিত্র মদিনার উদ্দেশে যাচ্ছিলেন তখন পেছন ফিরে প্রিয় মাতৃভূমির দিকে তাকাচ্ছিলেন আর বলেছিলেন, ‘‘ভূখন্ড হিসেবে তুমি কতই না উত্তম, আমার কাছে তুমি কতই না প্রিয়। যদি আমার স্বজাতি আমাকে বের করে না দিতো তবে কিছুতেই আমি অন্যত্র বসবাস করতাম না।’’ (জামে তিরমিযি, হাদিস : ৩৯২৬)। 

উত্তর দিচ্ছেন : নাজমুল ইসলাম কাসিমী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন