বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্ম দর্শন

খতমে নবুওয়ত ইসলামের মৌলিক আকিদা

মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ | প্রকাশের সময় : ২৮ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

আল্লাহর একত্ববাদ ও পরকালে বিশ্বাসী হওয়ার পর ইসলামের মৌলিক আকিদা-বিশ্বাস যে সকল বিষয়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত, তার গুরুত্বপূর্ণ একটি আকিদা হলো ‘আকিদায়ে খতমে নবুওয়ত বা খতমে নবুওয়ত সম্পর্কে আকিদা’। অর্থাৎ নবুওয়ত ও রেসালাতের পবিত্র ধারা সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আগমনের মাধ্যমে পূর্ণ হয়ে গেছে। তাঁর পরে আর কেউ নবী হবে না, আর কারোর ওপর অহিও অবতীর্ণ হবে না। এমনকি কারো ওপর এমন কোনো ইলহামও হবে না, যা দীনের ব্যাপারে প্রমাণ হতে পারে। ইসলামের এ আকিদাই ‘খতমে নবুওয়ত’ নামে প্রসিদ্ধ। তাওহিদ, রেসালাত, আখেরাত, নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, কোরআন, কেবলা, ইত্যাদি বিষয় যে পর্যায়ের অকাট্য ও সন্দেহাতীত দলিল দ্বারা সুপ্রতিষ্ঠিত, খতমে নবুওয়ত তথা হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শেষ নবী হওয়ার আকিদাও অনুরূপ দলিল দ্বারা দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রমাণিত। এজন্যই তাওহিদ, রেসালাত, আখেরাত, নামাজ, হজ, জাকাত, কোরআন, ইত্যাদির অস্বীকারকারী যেমন স্পষ্ট কাফের, তেমনি খতমে নবুওয়ত অস্বীকারকারী এবং অবিশ্বাসীরাও কাফের। হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল- এ বিশ্বাস যেমন অকাট্য, তেমনি তিনি শেষ নবী, তাঁর পরে কেয়ামত পর্যন্ত আর কোনো নবী নেই- এ বিশ্বাসও অকাট্য। খতমে নবুওয়ত সরাসরি অস্বীকার করা হোক কিংবা অপব্যাখ্যার অন্তরালে করা হোক- সর্বাবস্থায় তা কুফর বলে গণ্য। এজন্য ইসলামের প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর (রা.) নবুওয়তের দাবিদার মুসাইলামা ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন। যদিও তারা মৌলিকভাবে তাওহিদ ও রেসালাতে বিশ্বাসী ছিলো। শুধু নবুওয়তের দাবি তোলার কারণেই সাহাবায়ে কেরাম (রা.) তাদের বিরুদ্ধে জিহাদে অবতীর্ণ হয়েছেন এবং তাদের কঠোর হস্তে দমন করেছেন। রাসুল (সা.)-এর জমানা থেকে এ পর্যন্ত গোটা উম্মত কোনো ধরনের ন্যূনতম বিবাদ ও মতনৈক্য ছাড়াই এ আকিদাকে ইমানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে মেনে আসছে। কোরআনে কারিমের বহু আয়াত এবং রাসুল (সা.)-এর অসংখ্য হাদিস এ ব্যাপারে সাক্ষ্য প্রদান করে। পূর্বে এক নবীর পর আরেক নবী আগমনের প্রয়োজন এ কারণে দেখা দিয়েছে, পূর্বের নবী সাময়িক ছিলেন বা বিশেষ কোনো ভূখন্ডের জন্য প্রেরিত হয়েছিলেন বা নবী তার সাহায্যার্থে আল্লাহর কাছে কোনো নবী চেয়ে নিয়েছিলেন অথবা পূর্ববর্তী নবীর শিক্ষা বিকৃত বা পরিবর্তনের শিকার হয়েছিলো কিংবা পূর্ববর্তী নবীর শিক্ষা অপূর্ণ ছিলো। আমাদের শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আগমনের পর এ ধরনের কোনো প্রয়োজন দেখা দেয়নি; দেবেও না।

যুগে যুগে নবুওয়তের দাবিদার ও তাদের ফলাফল
ইতিহাসের পাতায় তাকালে আমরা দেখতে পাই, যুগে যুগে যারাই নবুওয়তের দাবিদার হয়েছে, তারা নিজেকে মুসলমানরূপে প্রকাশ করে স্বীয় দাবি প্রচারের চেষ্টা করেছে। কিন্তু উম্মতে মুহাম্মদি এ ব্যাপারে কোরআন-হাদিসের দিক-নির্দেশনাপ্রাপ্ত হওয়ায় যখনই নবুওয়তের কোনো ভন্ড দাবিদার আত্মপ্রকাশ করেছে, তাকে কাফের সাব্যস্ত করেছে এবং ইসলামের গন্ডি থেকে বহিষ্কার করেছে। নববি যুগ থেকে যখনই কোনো ইসলামি রাষ্ট্রে বা ইসলামি আদালতে এ ধরনের মামলা উপস্থিত হয়েছে, তখনই বিচারকগণ তার দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রকার দলিল-প্রমাণ তলব না করে তার ব্যাপারে কাফের হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। যেমন- আসওয়াদ আনাসি, তুলাইহা, সাজাহ, হারেস। সাহাবায়ে কেরাম (রা.) তাদের কুফুরির ফয়সালা দেওয়ার পূর্বে কখনও নবুওয়তের দাবির ব্যাপারে তাদের থেকে কোনো প্রকার দলিলও তলব করেননি। যখনই কারো পক্ষ থেকে নবুওয়তের দাবির স্বপক্ষে প্রমাণ পাওয়া গেছে, তখনই সর্বসম্মতিক্রমে তাকে কাফের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এর কারণ হলো, খতমে নবুওয়তের আকিদা এতোটাই স্পষ্ট ও সর্বজন স্বীকৃত, এর খেলাফ যুক্তি-তর্ক সব প্রতারণার শামিল। এ সম্পর্কে রাসুল (সা.) উম্মতকে পূর্বেই অবগত করে গেছেন। যদি এ ধরনের সামান্য অবকাশ দেওয়া হয়, তাহলে তাওহিদ-আখেরাতসহ ইসলামের কোনো আকিদাই আর নিরাপদ থাকবে না। তাই কেউ যদি খতমে নবুওয়তের এই অপব্যাখ্যা দেওয়া আরম্ভ করে, ‘তাশরিঈ’ তথা শরিয়তধারী নবুওয়ত আসবে না; তবে ‘গায়রে তাশরিঈ’ তথা শরিয়তহীন নবুওয়ত এখনও আসতে পারে, তাহলে তার এ কথা এমনই হবে, যেমন কেউ দাবি করলো, তাওহিদের আকিদানুযায়ী বড় খোদা শুধু এক সত্তাই, কিন্তু ছোট ছোট মাবুদ অনেক হতে পারে এবং তারা সকলেই উপাসনার উপযুক্ত। (নাউজুবিল্লাহ)। যদি এ ধরনের অপব্যাখ্যার বিন্দুমাত্র সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে এর অর্থ দাঁড়াবে, ইসলামে স্বতন্ত্র কোনো আকিদা-বিশ্বাস, কোনো চিন্তা-চেতনা, কোনো বিধান এবং কোনো চারিত্রিক মাপকাঠি নির্ধারিত নেই; বরং এটা এমন একটা পোশাক, যা দ্বারা পৃথিবীর নিকৃষ্ট থেকে নিকৃষ্টতম বিশ্বাস পোষণকারী ব্যক্তিও নিজেকে আবৃত করতে পারে। (নাউজুবিল্লাহ)।

খতমে নবুওয়তের দলিল
আল্লাহতায়ালা মানবজাতির প্রয়োজনানুপাতে কালক্রমে তাদের বিভিন্ন শরিয়ত দিয়েছেন। আর এর পূর্ণতা ও শুভ পরিসমাপ্তি করেছেন হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মাধ্যমে। দীনের পূর্ণাঙ্গতা লাভের পর যেহেতু এতে কোনোরূপ সংযোজন ও বিয়োজনের প্রয়োজন নেই; তাই মানবজাতির জন্য নতুন শরিয়তেরও প্রয়োজন নেই। তাই আল্লাহতায়ালা নবী-রাসুল প্রেরণের ধারা চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছেন। এটা ইসলামের অন্যতম মৌলিক বিশ্বাস। এরশাদ হচ্ছে- ‘আজ আমি তোমাদের দীনকে পূর্ণতা দান করেছি, আর আমি তোমাদের জন্য আমার নেয়ামতকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছি এবং দীন হিসেবে ইসলামকে তোমাদের জন্য মনোনীত করেছি।’ (সুরা মায়িদা : ৩)। পবিত্র কোরআনের অন্যত্র বলা হয়েছে-‘মুহাম্মদ তোমাদের মধ্যকার কোনো পুরুষের বাবা নন; তবে তিনি আল্লাহর রাসুল এবং সর্বশেষ নবী।’ (সুরা আহজাব : ৪০)। এ ছাড়াও খতমে নবুওয়তের ব্যাপারে রাসুল (সা.) থেকে বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন-‘আমি এবং পূর্ববর্তী অন্য নবীদের উদাহরণ হলো, এক লোক একটি ঘর অত্যন্ত সুন্দর করে তৈরি করলো। কিন্তু ঘরের এক কোণে একটা ইট ফাঁকা রেখে দিলো। লোকজন চতুর্দিকে ঘুরে ঘরে তার সৌন্দর্য দেখে বিমোহিত হচ্ছে; কিন্তু বলছে, এ ফাঁকা স্থানে একটি ইট বসালে কতোই না সুন্দর হতো! আমি হলাম সেই ইট এবং আমি হলাম সর্বশেষ নবী।’ (বোখারি : ৩২৭১; মুসলিম : ৪২৩৯)। রাসুল (সা.) আরও বলেন-‘অন্যসব নবীর মোকাবেলায় আমাকে ছয়টি বিষয় দ্বারা বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করা হয়েছে, তার মধ্যে দুটি হলো- আমাকে সমগ্র সৃষ্টিজগতের রাসুলরূপে প্রেরণ করা হয়েছে এবং আমার দ্বারা নবীদের সিলসিলার পরিসমাপ্তি ঘটানো হয়েছে।’ (মুসলিম : ৫২৩)।

কাদিয়ানিদের আকিদা
কাদিয়ানিদের বইপত্রের মাঝে কাদিয়ানিকে যারা নবী হিসেবে স্বীকার করে না, তাদের কাফের আখ্যা দেওয়া হয়েছে। তাদের একটি প্রসিদ্ধ গ্রন্থ ‘হাকিকাতুন নুবুওয়াহ’-এ বলা হয়েছে-‘মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানি ঐ অর্থে নবী, যে অর্থে পূর্ববর্তী হজরত মুসা (আ.) ও হজরত ঈসা (আ.) নবী ছিলেন। যেমনিভাবে কোনো একজন নবীকে অস্বীকারকারী কাফের, তেমনিভাবে মির্জা গোলাম আহমদের নবুওয়ত অস্বীকারকারীও কাফের।’ এভাবে কাদিয়ানি স¤প্রদায় নিজেদের মুসলিম পরিচয় দিয়ে ধোঁকা ও মিথ্যাচারের মাধ্যমে ইসলামের নামে একটি নতুন ধর্মমতের প্রচারণা চালিয়ে সমাজে অশান্তি ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দিচ্ছে।

কাদিয়ানিদের ব্যাপারে মুসলিমবিশ্বের অবস্থান
প্রায় সব ক’টি মুসলিম দেশে কাদিয়ানিদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণা করে তাদের যাবতীয় বই-পুস্তক, ও কার্যক্রমকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যেমন- ১৯৫৭ সালে সিরিয়া সরকার কাদিয়ানিদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণা করেছে। কাদিয়ানিদের সংগঠনকে অবৈধ ও বেআইনি বলে ঘোষণা দিয়েছে। ১৯৫৮ সালে মিশর সরকার কাদিয়ানিদের সরকারিভাবে কাফের এবং তাদের সংগঠনকে বেআইনি সংগঠন বলে ঘোষণা দিয়েছে। ১৯৭৪ খৃস্টাব্দ মোতাবেক ১৩৯৪ হিজরির ১৪ রবিউল আউয়াল থেকে ১৮ রবিউল আউয়াল পর্যন্ত পাঁচ দিনব্যাপী ১০৪টি দেশের সম্মিলিত সংগঠন ‘রাবেতা আলমে ইসলামি’-এর অধিবেশনে কাদিয়ানিদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে-‘এ দল কাফের ও ইসলাম বহির্ভূত। তাদের সঙ্গে বিয়েশাদি হারাম এবং মুসলমানদের কবরস্থানে তাদের দাফন করা নাজায়েজ।’ ওই প্রস্তাবগুলো ১০৪টি দেশের প্রতিনিধিরা সম্মিলিতভাবে পাস করেছেন। তাদের মধ্যে সৌদিআরব, দুবাই, আবুধাবি, কাতার, ইত্যাদি দেশ অন্তর্ভুক্ত। ১৯৭৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের সংসদও কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ বাংলাদেশে তাদের আজও অমুসলিম ঘোষণা করা হয়নি। যে কারণে বর্তমানে তারা এ দেশে প্রকাশ্যে উস্কানিমূলক অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই বাংলাদেশ সরকারের উচিত, অনতিবিলম্বে কাদিয়ানিদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণা করে কাদিয়ানি অপতৎপরতা বন্ধ করা। কাদিয়ানিরা অমুসলিম নাগরিক হিসেবে এ দেশের সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারে; তবে মুসলিম হিসেবে অবশ্যই নয়।
লেখক : সিনিয়র শিক্ষক ও বিভাগীয় প্রধান; আল জামিআতুল ইসলামিয়া ইসলামপুর (ভবানিপুর মাদরাসা), গোপালগঞ্জ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
Mohammad Shahan Shah Azad ১০ এপ্রিল, ২০২১, ৪:৪৬ পিএম says : 0
কে মুসলমান কে মুসলমান নয় তা কোনো দেশের সরকার ঠিক করার অধিকার রাখেন না। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবমাননার জবাব দেবার জন্য মহান আল্লাহ পাক নিজেই যথেষ্ট। কোনো উৎসুক জনতার এই বিষয়ে কথা বলার প্রয়োজন নেই, আপনি আল্লাহর উপর ভরসা করে ‌অপেক্ষা করতে পারেন ।
Total Reply(0)
Jummon ১০ এপ্রিল, ২০২১, ৫:২০ পিএম says : 0
খাতামান্নাবীঈন (সা.) এর পর নবীর আগমনের ব্যাপারে বুযূর্গানে উম্মতের অভিমত ১. হযরত মুহিউদ্দিন ইবনে আরবী (রহ.) বলেন, ان الرسالۃ والنبوۃ قد انقطعت فلا رسول بعدی لا نبی ای لا نبی بعدی یکون علی شرح یخالف شرعی بل اذا کان یکون تحت حکم شریعتی– অর্থ: “নবুয়্যত এবং রিসালাতের পরিসমাপ্তি ঘটেছে। সুতরাং আমার পর কোন রসূল নেই- এর অর্থ হল, আমার পর এমন কোন নবী আসতে পারবে না যে আমার বিরুদ্ধ কোন নূতন শরীয়ত নিয়ে আসবে, বরং কেউ যদি আসে তাহলে সে আমার শরীয়তের অনুসরণ করবে।” (ফতুহাতে মক্কীয়াহ্, খন্ড- ২, পৃষ্ঠা: ৭৩) ২. হযরত ইমাম আব্দুল ওয়াহাব শিরানি (রহ.) বলেন, قولہ صلی اللہ علیہ و سلم فلا نبی بعدی ولا رسول المراد بہ مشرع بعدی– অর্থ: “মহানবী (সা.) এর এই কথা যে, আমার পর নবী নেই আর রসূলও নেই- এর অর্থ হল, আমার পর শরীয়তধারী কোন নবী নেই।” (আল-ইয়াওকিয়াত ওয়াল জাওয়াহের, খন্ড- ২, পৃষ্ঠা: ৪২)
Total Reply(0)
Joseph ১০ এপ্রিল, ২০২১, ৭:৫৫ পিএম says : 0
[ মুসার (আ.) দোয়া হাদীসে - ‘উম্মতের নবী’ বা উম্মতি নবী ] ______________________________________________________ হযরত আনাস (রা.) থেকে একটি সুদীর্ঘ হাদীসে বর্ণিত রয়েছে যে, “আল্লাহ্’পাক একবার মুসা (আ.) কে উদ্দেশ্য করে এরশাদ করেছেন : তুমি বনী ইসরাঈলীদের জানিয়ে দাও, যে ব্যক্তি আহমদ (সা.) প্রতি অবিশ্বাসী অবস্থায় আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, সে যেই হোক আমি থাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাব। হযরত মুসা (আ.) আরজ করলেন, আহমদ কে ? আল্লাহ্’পাক এরশাদ করলেন : হে মুসা ! আমার ইজ্জত ও গৌরবের শপথ ! আমি সমস্ত সৃষ্টি জগতের মধ্যে তার চেয়ে অধিক সম্মানিত কাউকে সৃষ্টি করিনি ! আমি তাঁর নাম আরশের মধ্যে আমার নামের সাথে আসমান ও জমিন এবং চন্দ্র ও সূর্য সৃষ্টির বিশ লক্ষ বছর পূর্বে লিপিবদ্ধ করেছি। আমার ইজ্জত ও গৌরবের শপথ আমার সমস্ত মাখলুকের জন্য জান্নাত হারাম, যতক্ষণ মুহাম্মদ (সা.) এবং তাঁর উম্মত জান্নাত প্রবেশ না করবে। অতপর মুসা (আ.) আরজ করলেন : হে আল্লাহ্ আমাকে সেই উম্মতের নবী বানিয়ে দাও। আল্লাহ্’পাক এরশাদ করলেন : সেই উম্মতের নবী তাদের মধ্য থেকেই হবে। মুসা (আ.) পুনরায় আরজ করলেন : তবে আমাকে সেই নবীর একজন উম্মত বানিয়ে দাও। আল্লাহ্’পাক এরশাদ করলেন : তুমি তাঁর পূর্বেই নবী রূপে আবির্ভূত হয়েছে আর সেই নবী তোমার পরে প্রেরিত হবেন। তবে জান্নাত তাঁর সঙ্গে তোমাকে একত্রিত করে দিব।” [ ১. মেশকাত, দারামী, ২. হুলিয়া) যে ফুলের খুশবুতে সারা জাহান মাতোয়ারা - পৃষ্টা ১৮৪]
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন