রাজধানীর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩ ও ১৯ নং ওয়ার্ডের মিরপুর-১০ ও ১১ সেকশন, গুলশান, বনানী, নিকেতন এলাকায় ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার প্রজনোন ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে। মৌসুম পরবর্তী এ্যডিস সার্ভে-২০২০ প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল মহাখালীর নিপসম মিলনায়তনে ‘পোস্ট মনসুন এডিস মসকিউটো সার্ভে-২০২০’ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর এবিএম খুরশিদ আলম। অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) প্রফেসর ডা. নাজমুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) প্রফেসর ডা. নাসিমা সুলতানা, নিপসমের পরিচালক প্রফেসর ডা. বায়জিদ খুরশিদ রিয়াজ। এছাড়াও সভায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. জোবায়েদুর রহমান ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শরিফ আহমেদ, আইইডিসিআর’র প্রফেসর ডা. তাহমিনা শিরিন, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. কবিরুল বাশার প্রমুখ।
সভায় ‘পোস্ট মনসুন এ্যাডিস সাার্ভে-২০০২০’ ফলাফল বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল এন্ড এডিস ট্রান্সমিটেড ডিজিজেজ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. আফসানা আলমগীর খান। তিনি বলেন, জরিপ কাজটি ১৮ থেকে ২৭ ডিসেম্বর- ১০ দিন ঢাকা শহরের ৯৮ ওয়ার্ড’র ১০০ টি স্থানে পরিচালিত হয়। রাজধানীর ৩ হাজার বাড়িতে এই জরিপ পরিচালিত হয়। এতে দেখা গেছে, মৌসুম-পরবর্তী শীতকালেও ঢাকা উত্তর ও দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের বেশ কিছু এলাকায় এডিস মশার ঘনত্ব স্বাভাবিক মাত্রার নিচে। তবে প্লাষ্টিক ড্রাম, প্লাষ্টিক বালতি, নির্মানাধীন ভবনের পানির ট্যাঙ্ক, নির্মানাধীন ভবনের মেঝেতে জমানো পানিতে এডিস মশার বংশ বিস্তার বেশি দেখা গেছে।
জরিপে দেখা গেছে, মশার ঘনত্ব পরিমাপক সূচক সর্বোচ্চ বিআই (ব্রুট ইনডেক্স) ১৬ দশমিক ৬৭ পাওয়া গেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩ ও ১৯ নং ওয়ার্ডের মিরপুর-১০ ও ১১ সেকশন, গুলশান, বনানী, নিকেতন এলাকায়। এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটির সর্বোচ্চ ব্রুট ইনডেক্স পাওয়া গেছে ৩৬ নং ওয়ার্ডের রাধিকামোহন বসাক লেইন, আওলাদ হোসেন লেইন, কোর্ট হাউজ স্ট্রীট, শাঁখারিবাজার, রায় সাহেব বাজার এলাকায়।
মৌসুম পরবর্তী জরিপে সর্বাধিক পজিটিভ কনটেইনারসমূহের মধ্যে- মেঝেতে জমানো পানিতে ১৫ দশমিক ৫৭ ভাগ, প্লাস্টিক ড্রামে ১২ দশমিক ১৭ ভাগ, প্লাস্টিক বালতি ৯ বাগ, ব্যবহৃত পরিত্যক্ত টায়ার ৮ দশমিক ৫২ ভাগ, ফুলের টব এবং ট্রে ৮ দশমিক ২৭ ভাগ, পানির ট্যাংকে ৬ দমমিক ০৮ ভাগ, মাটির পাত্রে ৫ দশমিক ১১ ভাগ, প্লাস্টিক বোতল ৩ দশমিক ৬৫ ভাগ, টিনের বালতি ৩ দশমিক ১৬ ভাগ এবং প্লাস্টিক মগে ২ দশমিক ৯২ ভাগে মশার প্রজনন স্থান পাওয়া গেছে।
জরিপে এডিস মশার প্রজনন স্থান পাওয়া গেছে এমন স্থানের মধ্যে বহুতল ভবনে ৫১ দশমিক ৩৪ শতাংশ, নির্মানাধীন ভবনে ২০ দশমিক ৩২ শতাংশ, বস্তি এলাকায় ১২ দশমিক ৮৩ শতাংশ, একক ভবন সমূহে ১২ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং ফাঁকা স্থানে ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ পাওয়া যায়।
মশার ঘনত্ব পরিমাপক সূচক সর্বোচ্চ বিআই (ব্রুট ইনডেক্স) পাওয়া গেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১১ নং ওয়ার্ডের কল্যাণপুর, পাইকপাড়া ও মধ্য পাইকপাড়া এলাকায়। এসব এলাকায় মশার ঘনত্ব ৪৩ দমমিক ৩ শতাংশ। অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫১ নং ওয়ার্ডের মীর হাজারিবাগ, ধোলাইপাড় ও গেন্ডারিয়া এলাকায় সর্বোচ্চ বিআই পাওয়া গেছে শতাংশ।
এছাড়া রাজধানীর অন্যান্য এলাকার মধ্যে মশার ঘনত্ব ১০ পাওয়া গেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩১ নং ওয়ার্ডের তাজমহল রোড, নূরজাহান রোড, জাকির হোসেন রোড এলাকায়। ঘনত্ব ১৩ দশমিক ৩৩ পাওয়া গেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১৬, ১৮, ২৮ নং ওয়ার্ডের কাঁঠালবাগান, গ্রীনরোড, ফ্রী স্কুল স্ট্রীট, হাতির পুল, নিলখেত, টিটি কলেজ, সেন্ট্রাল রোড, উর্দু রোড, চক সার্কুলার রোড, হরনাথ ঘোষ রোড, কে বি রুদ্র রোড এলাকায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন