উত্তর : যে কোন কাজে আমরা তাড়াহুড়া করি। অল্পতে অস্থির হয়ে যাই। বেকারার ও বেচাইন হই। বিপদে ভেঙ্গে পড়ি। মুসিবত দেখলে উথলে উঠি। শেষ পর্যন্ত আমরা ঈমান থেকেও দূরে সরে যাই, তা কিন্তু আমরা জানিই না। আল্লাহকে গালি দিয়ে বসি। শিরিকমূলক বিভিন্ন শব্দ আমাদের মূখ থেকে উচ্চারিত হয়। আমাদের ঈমান রক্ষার্থে। আমাদের দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতার জন্য আল্লাহ তাআলা অনেক সুযোগ করে দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা আসলে বান্দাকে বাঁচানোর জন্য সুযোগ খুঁজেন। তাই আমাদের কাজ হলো একটু চেষ্টা করা। একটু কৌশলী হওয়া। যে কৌশলে আল্লাহ তাআলাকে রাজি করা যায়। আল্লাহকে পাওয়া যায়। আল্লাহকে নিজের সাথী করা যায়। ধৈর্য এমন একটি কাজ। যে কাজের মাধ্যমে আল্লাহকে আমার আপনার সাথি করতে পারবো। আল্লাহ বলেন, ‘এমন ঘটনার অনেক নিদর্শন রয়েছে যে, আল্লাহর অনুমতিক্রমে একটি ক্ষুদ্্রদল একটি বৃহৎ দলের উপর বিজয়ী হয়েছে। মূলত আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন। (সূরা বাকারা, আয়াত: ২৪৯)
আল্লাহ তাআলা স্বয়ং রাসূল সা.কে বলেছেন যে, আপনি সবর করুন উত্তম সবর, (সূরা মায়ারিজ-৫)। আসলেই ধৈর্যের মাধ্যমেই কাজ করলে সফলতা আসে, যে কোন কাজে অধৈর্য হলে যেমনি সফলতা আসতে বিলম্ব হয় তেমনি কাজে অনেক ছোট ছোট ভুল থেকে যায়। আর এ ভুলের কারণে ক্ষতির সম্মুখিন হতে হয়। আবার ফল দেখতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, অতএব তুমি সবর কর, শুভ পরিণতি তো মুত্তাকীদের জন্যেই নির্দিষ্ট। (সূরা হুদ, আয়াত: ৪৯)
শুভ পরিণতির জন্য মুত্তাকীর সাথে সবরও লাগবে। আমরা দুনিয়া বা আখেরাতের যে কোন কাজ করি তার ফল তাড়াতাড়িই দেখতে চাই। দোয়া করি এবং পরক্ষণে বলি দোয়া কবুল হচ্ছে না কেন? আমল করি বা সালাতুল হাজাত পড়ি দ্বিধায় থাকি। আর আল্লাহ তাআলা বলেন, ধৈর্য ধর, আল্লাহ মুহসিনদের কর্মফল বিনষ্ট করেন না। (সূরা হুদ-১১৫) আল্লাহ তাআলা ধৈর্য ও নামাযের সাথে সাহায্য চাওয়ার জন্য বলেছেন। একটু অসুস্থ হলে কোন মুসিবতে পড়লে অস্থির হয়ে যাওয়াটাই আমাদের স্বভাব। অথচ রাসূল সা. বলেন, কোন মুসলিম ব্যক্তি মানসিক বা শারীরিক কষ্ট পেলে, কোন শোক বা দুঃখ পেলে, অথবা চিন্তাগ্রস্থ হলে সে যদি ধৈর্য ধারণ করে তাহলে আল্লাহ প্রতিদানে তার সকল গুনাহ মাফ করে দিবেন। এমনকি যদি সামন্য একটি কাটাও পায়ে বিধে তাও তার গুণাহ মাফের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। (বুখারী, মুসলিম) আল্লাহর রাসূল সা. বলেন, যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণের চেষ্টা করবে আল্লাহ তাকে ধৈর্যের শক্তি প্রদান করবেন। আর ধৈর্য হতে অধিক উত্তম ও ব্যাপক কল্যাণকর বস্তু আর কিছুই কাউকে দান করা হয়নি। (আবু সাইদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, বুখারী ও মুসলিম) তাহলে বুঝা গেলো ধৈর্য হলো অধিক কল্যাণকর তবে যে ধৈর্য ধরতে চায় আল্লাহ তাকে ধৈর্য ধরার শক্তিও দিয়ে দিবেন। আসলে ধৈর্য একটি কষ্টকর জিনিস। তবে তা একেবারে অসম্ভব এমন নয়। এমন কোন কাজ নেই যা মানুষে চেষ্টা করলে পারবে না। আমরা যদি চেষ্টা করি তবে প্রতিটি কাজে ধৈর্য ধরতে পারবো।
তাই আমরা বিপদে ধৈর্য ধারণ করি আর আল্লাহকে সাথী করি।
উত্তর দিচ্ছেন : মুফতি কাজী সিকান্দার
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন