বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মুসলমানের দেশ ইন্দোনেশিয়ার পাবলিক স্কুলগুলোতে ধর্মীয় পোশাক পরতে বাধ্য করা যাবে না বলে রায় দিয়েছে দেশটির হাইকোর্ট। এক খ্রিস্টান ছাত্রীকে ক্লাসে হিজাব পরতে জোর করার ঘটনা আলোচনায় আসার পর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। খবর বিবিসির।
ওই মেয়েটি যে স্কুলের শিক্ষার্থী সেখানে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক ছিল। এ সংক্রান্ত নিয়ম যেসব স্কুলে রয়েছে সেগুলো প্রত্যাহার করতে স্কুলগুলোকে ৩০ দিন সময় দিয়েছে সরকার।
ইন্দোনেশিয়া মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি দেশ যেখানে অন্য ধর্মগুলোকেও স্বীকৃতি দেয়া হয়। গত বুধবার সরকারি ফরমান হিসেবে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। যেসব স্কুল এই নির্দেশ মানবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।
এ প্রসঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী নাদিয়েম মাকারিম বলেন, ধর্মীয় পোশাক পরবে কিনা তা ‘একজনের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারে না।
দেশটির পাদাং শহরের একটি কারিগরি স্কুলের এক ছাত্রীকে হিজাব পরতে বারবার জোর করার পর ঘটনাটি সম্প্রতি জাতীয় পর্যায়ে আলোচনায় আসে।
ছাত্রীটি হিজাব পড়তে অস্বীকৃতি জানালে তার অভিভাবকদের স্কুলে তলব করা হয়। অভিভাবকরা স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের সেই ভিডিও গোপনে ধারণ করেন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করেন। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে অনলাইনে ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, কর্মকর্তারা বলছেন, স্কুলের নিয়ম অনুযায়ী অমুসলিমসহ সকল নারী শিক্ষার্থীদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক।
ওই ছাত্রীর বাবা এলিয়ানু হিয়া বিবিসি ইন্দোনেশিয়াকে বলেন, ‘হিজাব না পরার কারণে প্রায় প্রতিদিন আমার মেয়েকে তলব করা হত। আর তার উত্তর হল সে মুসলিম নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি যদি আমার মেয়েকে হিজাব পরতে বাধ্য করি, তাহলে আমার মেয়ের ধর্মীয় পরিচয় সম্পর্কে আমাকে মিথ্যা বলতে হবে।’ ‘কোথায় আমার ধর্মীয় স্বাধীনতা? এটি কোনো পাবলিক স্কুলের মধ্যেই পড়ে না,’ যোগ করেন হিয়া।
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল এ ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। ওই ছাত্রীকে তার ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী পোশাক পরতে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি। সূত্র : বিবিসি
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন