করোনার কারণে বহু দেশ থেকেই হারিয়ে যাচ্ছে সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু। চলতি মৌসুমে আমেরিকায় নেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এমনটাই বলছে পরিসংখ্যান। দেখা যাচ্ছে, চলতি মৌসুমে যে সংখ্যক মানুষের ফ্লু হয়েছে, তা ১৩০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ১৮৮৯-৯০ সালে ফ্লুর আগে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণ এতটা কমে গিয়েছিল। তারপর থেকে গত ১৩০ বছরে ফ্লুয়ের পরিমাণ কখনও এতটা কমেনি যতটা এবার কমেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর প্রধান জন ম্যাককালে সম্প্রতি জানিয়েছেন, ১৮৮৯-৯০ সালে ফ্লু অতিমারির আগে ১৮৮৮ সালে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণ এতটা কমে গিয়েছিল। ‘‘তার পর থেকে গত ১৩০ বছরে ফ্লুয়ের পরিমাণ কখনও এতটা কমে যায়নি’’, বলছেন তিনি। সাধারণত জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে আমেরিকায় এই সর্দি-জ্বরের পরিমাণ সবচেয়ে বেড়ে যায়। কিন্তু চলতি মরসুমে তার পরিমাণ চোখে পড়ার মতো করে কমে গিয়েছে। প্রতি ১ লক্ষ মানুযের মধ্যে যেখানে ২৭ জন ফ্লুয়ে আক্রান্ত হতেন, সেখানে এবার আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র ১.১ জন। এই যদি আমেরিকার অবস্থা হয়, তাহলে তার পাশে ইংল্যান্ডের অবস্থা আরও স্পষ্ট। সেখানে সংখ্যাটা প্রায় শূন্যয় নেমে গিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্য বলছে, শুধু এই দুই দেশেই নয়, গোটা পৃথিবী জুড়েই তীব্রভাবে কমে গিয়েছে ফ্লুয়ের ঘটনা।
করোনার কারণে মানুষ বেশ কিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেছেন। মাস্কের ব্যবহার তো আছেই, তার সঙ্গে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা বা দূরত্ব বজায় রাখার মতো বিষয়ও আছে। ফলে একের থেকে অন্যের সংক্রমণ ছড়ানোর হারও কমে গিয়েছে কিন্তু ফ্লুয়ের ভাইরাস অতটাও সংক্রামক নয়।
প্রতি বছর ইংল্যান্ডে প্রায় ১০ হাজার মানুষ প্রাণ হারান এই ফ্লুয়ে আক্রান্ত হয়ে। এই শীতে করোনার উপরে ফ্লুয়ের সংক্রমণ হলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে যেতে পারত। কিন্তু পরিস্থিতি উল্টে ভালোর দিকে গিয়েছে। তবে সাধারণ সর্দি কাশি হলে কয়জন ফ্লুর পরীক্ষা করান এইটাও চিন্তার বিষয়।
ভারতে এমন কিছু হচ্ছে কি না, তা জানার জন্য পরিসংখ্যান নেওয়া প্রয়োজন। সেই পরিসংখ্যান যতক্ষণ না পাওয়া যাচ্ছে, ততক্ষণ এ বিষয়ে কিছুই বলা যাবে না বলে মত যোগীরাজ রায়ের। ‘‘ফ্লুয়ের পরীক্ষা এখানে হয়। কিন্তু ব্যাপক হারে হয় না। সাধারণ সর্দিকাশি হলে কজনই বা ফ্লুয়ের পরীক্ষা করান। যতক্ষণ না ভারতে এ বিষয়ে পর্যাপ্ত পরিসংখ্যান নেওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ বলা সম্ভব নয়, এখানেও ফ্লু কমে গিয়েছে কি না’’, বলছেন তিনি।
করোনার কারণে সাধারণ ফ্লুও নিজের চেহারা বদলে ফেলবে কিনা তাই এখন চিন্তার বিষয়। এ চিত্র দেখতে হলে অপেক্ষা করতে হবে আরো কয়েক মাস। সূত্র: আনন্দবাজার
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন