মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

রংপুরে ধর্ষণ মামলার রায়

ধর্ষকের যাবজ্জীবন কারাদন্ডসহ জন্ম নেয়া শিশুকে ধর্ষকের ওয়ারিশ হিসেবে স্বীকৃতি দানের নির্দেশ

রংপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৬:৪২ পিএম

রংপুরে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ধর্ষণের ফলে জন্ম নেয়া সন্তানকে ওয়ারিশ হিসেবে স্বীকৃতি দানসহ ভরণ-পোষণের নির্দেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ বিচারক।

আজ সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এর বিজ্ঞ বিচারক মোঃ রোকনুজ্জামান এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, রংপুরের পীরগাছা উপজেলার অন্নদানগর গ্রামের দিনমজুর হানিফ উদ্দিন স্ত্রীসহ দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে অন্যত্র চলে গিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর থেকে তার স্ত্রী ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ওই ইউনিয়নের সাতদরগাহ গ্রামে মায়ের বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। এ সময় হানিফের বড় মেয়েকে (তৎকালীন ১৪ বছর বয়স) প্রায়ই উত্যক্ত করতেন প্রতিবেশী মৃত মজিবর রহমানের ছেলে পান ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম (তৎকালীন ২২ বছর বয়স)। এক পর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই কিশোরীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন শফিকুল। ঘটনার দিন ২০০৭ সালের ২৬ অক্টোবর বিকেলে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন শফিকুল। পরে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। ২০০৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ওই বাড়িতে গিয়ে জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন শফিকুল ও তার স্বজনরা। পরবর্তীতে ধর্ষণের ঘটনা এবং সন্তানের স্বীকৃতি অস্বীকার করলে প্রায় চার মাসের অন্তঃসত্ত¡া অবস্থায় মেয়েটি নিজে বাদী হয়ে ২০০৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে শফিকুলসহ তার বাবা মজিবর, চাচা মমতাজ উদ্দিন ও ফুফু নজিরনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা চলাকালীন অবস্থায় ২০০৮ সালের ৪ আগস্ট একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন ওই কিশোরী।

পরে শফিকুলের বাবা মামলার আসামি মজিবর মারা যান এবং শফিকুল অন্যত্র বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে ধর্ষণে জন্ম নেয়া শিশু এবং ধর্ষকের ডিএনএ পরীক্ষা ও ৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে দীর্ঘ ১৩ বছর পর সোমবার এ রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে অপর দুই আসামিকে খালাস দেয়া হয়। ধর্ষক শফিকুলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ছাড়াও এক লাখ টাকা জরিমানা এবং শিশুটিকে ধর্ষক শফিকুলের ওয়ারিশ হিসেবে সম্পত্তির অংশীদারিত্ব প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ বিচারক। যদি ধর্ষকের কোনো সম্পত্তি না থাকে তাহলে ওই শিশুর ব্যয়ভার রাষ্ট্রকে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এর পিপি জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট জহুরুল ইসলাম।##

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন