শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

মন্দা কাটিয়ে পুঁজিবাজারে উত্থান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবসে সূচকে রেকর্ড ধ্বসের পর গতকাল মঙ্গলবার দেশের উভয় পুঁজিবাজারে সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দর। তবে ডিএসইতে কমেছে গত দিনের তুলনায় লেনদেনের পরিমাণ। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিএসই সূত্রে জানা যায়, দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৬৮৩ কোটি ৩০ লাখ ২৯ হাজার টাকা। যা গত দিনের তুলোনায় ১০৬ কোটি টাকা কম। গতকাল ডিএসইর লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৫৯ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ২৪০টির, কমেছে ১৭টি ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দর।

সর্বশেষ গত সোমবার দিন শেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছিল ৭৮৯ কোটি ৮০ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর কমেছিল বেশিরভাগ কোম্পানি শেয়ার ও ইউনিটের দর। সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৬ কোটি ৭২ লাখ ৭৬ হাজার ৬৪৪ টাকা, যা আগের দিনের তুলনায় ১২ কোটি টাকা কম। এদিন সিএসইর লেনদেনে অংশ নেয়া ২৩৭টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৮টি কোম্পানির। দর কমেছে ৩১টি কোম্পানির। অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দর।

ডিএসইর ওয়েবসাইট ঘুরে দেখা যায়, মঙ্গলবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসই-এক্স সূচক ১২২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে পাঁচ হাজার ৪৯৮ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে এক হাজার ২৩৯ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৬২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে দুই হাজার ৮৬ পয়েন্টে।

অপর দিকে, সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৩৯৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৫ হাজার ৯১৯ পয়েন্টে। সিএসইএক্স সূচক ২৪১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে নয় হাজার ৬০৬ পয়েন্টে। সিএসই-৩০ সূচক ১৬২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১২ হাজার ৬৩৩ পয়েন্টে। সিএসই-৫০ সূচক ৩৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে এক হাজার ২১৩ পয়েন্টে। সিএসআই ৩০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৯৯৫ পয়েন্টে।

উল্লেখ্য, বাজারের মূল্য সংশোধনের নামে গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে নিম্ন ছিল সূচক ও লেনদেনের হার। শুরুর দিকে এই পতনকে মূল্য সংশোধন হিসেবে দেখা হলেও পরবর্তী সময়ে তা কারসাজি বা পরিকল্পিত পতনের কথা বলেছেন পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইস) এই সময়ের মধ্যে বেশ কিছু ব্রোকার হাউজ থেকে অতিরিক্ত শেয়ার বিক্রির প্রমাণ পান। তারই পরিপ্রেক্ষিতে পুঁজিবাজারে বাড়ানো হয় নজরদারি।

কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, লেনদেনের সময়ে অন্য কাজ কম রেখে বাজার মনিটরিংয়ে গুরুত্ব দেয়া হবে। গত রোববার কমিশনের এমন উদ্যোগের পরদিন সোমবার আবারও সূচকের বড় পতন হয় পুঁজিবাজারে। কেন এমন পতন, তার কারণ সন্ধানে ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভা করে বিএসইসি সার্ভিল্যান্স বিভাগ।

ডিবিএ প্রতিনিধিরা জানান, সূচকের হঠাৎ এমন পতনের মৌলিক কোনো কারণ নেই। তবে বড় বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সমন্বয় করে ছোট বিনিয়োগকারীরাও শেয়ার বিক্রি করছেন বলে জানানো হয়। এ বিষয়ে ডিবিএ সভাপতি শরিফ আনোয়ার হোসেন জানান, ব্রোকার হাউজগুলোতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি বড় বিনিয়োগকারীরাও লেনদেন করে থাকেন। ছোট বিনিয়োগকারীরা যখন দেখেন কোনো কোম্পানির বড়সংখ্যক শেয়ার বিক্রি হচ্ছে, তখন তারাও হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের এ বিষয়ে আরও সচেতন হতে হবে। বেশিসংখ্যক শেয়ার যারা বিক্রি করছেন, তাদের হয়তো মুনাফা হয়েছে কিংবা তারা তাদের একটি অংশ বিক্রি করে দিচ্ছেন। এখন তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সবাই যদি সেই কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে দেন তাহলে বাজার নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়ে। স্বল্পসময়ে মুনাফার প্রবণতা থেকেই সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এমনটি করছেন। পতনের মৌলিক কোনো কারণ নেই। বিএসইসি কমিশনার শাসমসুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে পুঁজিবাজারকে বিনিয়োগবান্ধব করা যায়। এরই মধ্যে অনেকগুলো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তারপরও যখন পুঁজিবাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে, সেটি নিয়েও আমরা কাজ করছি। তবে বর্তমানে পতনের মৌলিক কোনো কারণ নেই। বিএসইসির এমন বক্তব্যের পর মঙ্গলবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে সূচক।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন