বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

জিয়ার ‘বীরোত্তম’ খেতাব বাতিল মুক্তিযুদ্ধের প্রতি কলঙ্ক

প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

জিয়াউর রহমানের ‘বীরোত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রতি কলঙ্ক’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের কোয়ারেন্টাইনে থাকা বিএনপি মহাসচিব গতকাল টেলিফোনে ইনকিলাবের কাছে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

মির্জা আলমগীর বলেন, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল খেতাবটি বাতিলের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এটাকে আমি মনে করি সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক। এই সিদ্ধান্ত যারা নিয়েছ তাদেরকে আমি কখনোই মুক্তিযুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মনে করি না। তারা স্বাধীনতার বিপক্ষে, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে এবং পুরোপুরিভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের প্রতি কলংঙ্ক লেপন করা হলো। আমি এহেন সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল(জামুকা) জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি হিসেবে ‘বীরোত্তম’ বাতিল করেছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি শরিফুল হক ডালিম, নুর চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিনের রাষ্ট্রীয় খেতাবও বাতিল করেছে জামুকা। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে জামুকার সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই খেতাবটা বাতিলের সিদ্ধান্ত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল নিয়েছে এবং তারা সরকারকে জানাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একে আমি মনে করি, জনগনের গণতন্ত্রের প্রতি এবং এই সরকারের অপকর্ম এবং যে সমস্ত দুর্নীতির চিত্রগুলো বেরিয়ে আসছে বিভিন্নভাবে তার থেকে জনগনের দৃষ্টি দ‚রে সরিয়ে দেওয়ার জন্যই এটা করা হয়েছে।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের স্মরণীয় ভুমিকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীরোত্তম শুধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েই বসে ছিলেন না। তিনি দীর্ঘ ৯ মাস সেক্টার কমান্ডার হিসেবে দেশের ভেতর থেকে লড়াই করেছেন এবং বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ শুধু নয়, সারা পৃথিবীর মানুষ জানে যে, তার ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু হয়েছিলো। এই সম্পর্কে বাংলাদেশের শুধু নয়, বাইরের বহু লেখকের বহু লেখায় যার প্রমাণ রয়েছে। এই যে বীরোত্তম খেতাবটি তিনি পেয়েছিলেন সেই খেতাবটি পেয়েছিলেন কিন্তু স্বাধীনতার পরের যে সরকার শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার, সেই সরকারই এই খেতাব তাকে দিয়েছিলো।

গত ৩০ জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য বিএনপি মহাসচিব স্ত্রী রাহাত আরা বেগমকে নিয়ে সিঙ্গাপুরে যান। সেখানে ফারার পার্ক হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। মহাসচিব জানান, প্রথম তিনদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পর ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইটে আছেন। এটা শেষ হলে আবার হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হবে। ২০১৫ সালে কারাবন্দি অবস্থায় ঘাড়ে ইন্টারন্যাল ক্যারোটিভ আর্টারিতে ব্লক ধরা পড়লে সিঙ্গাপুরে তার চিকিৎসা করিয়েছিলেন ৭৩ বছর বয়েসী মির্জা আলমগীর। এর চিকিৎসা বাংলাদেশে না থাকায় প্রতিবছরই ফলোআপ করতে তাকে সিঙ্গাপুরে যেতে হয়। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৪ অক্টোবর তিনি সিঙ্গাপুরে যান।

নয়া পল্টনে সংবাদ সম্মেলন
জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের খেতাব কেড়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত ‘সরকারের কুটিল প্রতিহিংসার বহির্প্রকাশ’ বলে এর নিন্দা জানিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। দুপুরে নয়া পল্টনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর পর স্বাধীনতার ঘোষক, রনাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা, জেড ফোর্সে অধিনায়ক সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব কেড়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত সরকারের অবিনাশী কুটিল প্রতিহিংসার বর্হিপ্রকাশ। রাষ্ট্রয়ন্ত্রের নিষ্ঠুর থাবায় জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করতে না পেরে দেশ মাতৃকার এই মহান বীরের অবদানকে মুছে ফেলার ব্যর্থ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সরকার প্রধানের পদলেহকারী কতিপয় ব্যক্তি এই সিদ্ধান্ত েিন্য়্ছে। আমি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব কেড়ে নেয়ার সিদ্ধান্তের তীব্র ঘৃণা জানাচ্ছি, নিন্দা, ধিক্কার ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এ ধরণের কুটিল সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহবান জানাচ্ছি।

রিজভী বলেন, যে মহান ব্যক্তি দেশের জন্য অকুতোভয়ে লড়াই করেছেন সেই জিয়াউর রহমানের ন্যায় বীরের খেতাব মাফিয়া রাষ্ট্রশক্তির জোরে কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করা হলেও জনমনে যে ইতিহাস রচিত হয়ে আছে সেই ইতিহাস অমর, অব্যয়, অক্ষয়, তা রাষ্ট্রযন্ত্রের হুমকিতে কখনো মুছে ফেলা যাবে না। জিয়াউর রহমানের কীর্তি দেশবাসীর অন্তরে আজও ?অম্লান

সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্মিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পদক আাবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন