মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে জিয়াউর রহমানকে দেওয়া ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)।
শুক্রবার এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে গণমাধ্যমে এক বিবৃতি পাঠিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম।
সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ কামরুল আহছান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোঃ কামরুল আহসান স্বাক্ষরিত এই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সাথে জানাচ্ছি যে, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) গত ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২১ (মঙ্গলবার) তাদের ৭২ তম সভায় স্বাধীনতার ঘোষক, মহান রাষ্ট্রপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিল করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। মুক্তিযুদ্ধে অতুলনীয় ও অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘বীর উত্তম’ খেতাব দেওয়া হয়। স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর পর তাঁর এই রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিল একদিকে যেমন মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল চেতনার পরিপন্থী অন্যদিকে এই অযাচিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ‘প্রকৃত’ মুক্তিযোদ্ধাদের চরম আসম্মান করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি।
বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ এই মহামানবের কণ্ঠ-নিঃসৃত বানী "উই রিভোল্ট" সমগ্র জাতীকে সাহসে উজ্জীবিত করেছিল। জাতীর সেই ক্রান্তিকালে সম্মুখ যুদ্ধে জীবনবাজী রেখে যুদ্ধ করে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা দেশবাসীকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। এছাড়াও রাষ্ট্রপতি পদে থাকাকালীন উপযোগী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কর্মপন্থা গ্রহণ ও সেগুলো সততা ও নিষ্ঠার সাথে বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভিত্তির উপর দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন।
আমরা ধারণা করছি, সম্প্রতি কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম (টিভি চ্যানেল) আল জাজিরা বাংলাদেশ সরকার প্রধানের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের ক্ষমতার সীমাহীন অপব্যবহার ও দুর্নীতি নিয়ে "অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স ম্যান" শিরোনামে প্রচারিত সংবাদে যে অভিযোগ তুলে ধরেছে চিরাচরিত অভ্যাস অনুযায়ী জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট মহল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে এই ঘৃণিত, কুরুচিপূর্ণ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
এটি দিবালোকের মত স্পষ্ট যে, বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের হৃদয়ের গভীরে মহান রাষ্ট্রপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের নাম চির অম্লান হয়ে আছে এবং থাকবে। স্বাধীনতার ঘোষক, বাংলাদেশের সফলতম রাষ্ট্রনায়ক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে গৃহীত এই অবমাননাকর সিদ্ধান্ত কার্যকর করার বিরুদ্ধে আপামর জনসাধারণ দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে আমরা মনে করি।
সঙ্গতকারণে করোনাকালীন এই মহামারিতে দেশের ভেতরে যদি কোনো অরাজক ও জনদুর্ভোগ পরিস্থিতি তৈরি হয় তাহলে দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায় সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলের উপরই বর্তাবে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, দেশ একটি চরম রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা দিকে ধাবিত হওয়ার পূর্বেই সংশ্লিষ্ট মহল হঠকারী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন থেকে বিরত থেকে দেশবাসীর প্রতি দায়িত্বজ্ঞানের পরিচয় দেবে।
বিবৃতি দেয়া শিক্ষকরা হলেন- অধ্যাপক ফজলুল করিম পাটোয়ারী, অধ্যাপক মোঃ নুরুল ইসলাম, অধ্যাপক সোহেল রানা, শরিফুল হুদা, মাহবুব কবির, মাসুম শাহরিয়ার, জামাল উদ্দিন, এ এস এমন মোস্তাফিজুর রহমান, সালেহ আহমেদ, আবদুল হালিম, কিবরিয়া, জাহিদুল ইসলাম, আবেদা সুলতানা, শামিমা সুলতানা, নাসরিন ইসলাম খান, মাফরুহী সাত্তার, জাকির হোসেন, মামূন হোসেন, শামসুন্নাহার, ভ. বোরহান, রেজাউল রকিব প্রমূখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন