নারীদের নিয়ে মন্তব্যের জেরে অবশেষে পদত্যাগ করলেন টোকিও অলিম্পিক গেমসের আয়োজক কমিটির প্রধান ইয়োশিরো মোরি। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে নারীদের নিয়ে অনাকাঙ্খিত মন্তব্যের পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ইয়োশিরো।
শুক্রবার এক বিশেষ কমিটির সভায় ইয়োশিরো মোরি বলেন, এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো টোকিও অলিম্পিকের সফল আয়োজন। আমার উপস্থিতি সেই আয়োজনে বাধা হওয়া উচিত না। এই সভাতেই তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। অলিম্পিক আয়োজক কমিটির শুক্রবারের এক বিশেষ বৈঠকে এই ঘোষণা দেন ৮৩ বছর বয়সী জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
করোনাভাইরাসের কারণে এক বছর পিছিয়ে যাওয়া এই টুর্নামেন্ট শুরুর মাত্র পাঁচ মাস আগে পদত্যাগ করলেন ২০০০ থেকে ২০০১ পর্যন্ত জাপানের প্রধানমন্ত্রী থাকা মোরি।
গত সপ্তাহে অলিম্পিক বোর্ড অব ট্রাস্টির এক রুদ্ধদ্বার সভায় ৮৩ বছর বয়সী জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিরো মোরি বলেন, নারী বোর্ড মেম্বার বাড়াতে চাইলে আগে কোনোভাবে তাদের কথা বলার সময়টা বেঁধে দিতে হবে, কারণ তারা (কথা) শেষ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে। এটা খুব দুশ্চিন্তার।’
তিনি আরও বলেন, বেশিসংখ্যক নারীর সঙ্গে বোর্ড মিটিং করতে অনেক সময় লাগে। কারণ, নারীরা প্রতিযোগিতামূলক। যদি একজন নারী কথার বলার জন্য হাত ওঠায় অন্যরাও তখন মনে করে তাদেরও কথা বলা উচিত।
এমন মন্তব্যের পর পরই বিশ্বব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। তাকে বরখাস্ত করার দাবি ওঠে। তখনই অবশ্য মোরি তার মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন, কিন্তু পদত্যাগ করতে রাজি হননি।
কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে ক্রমাগত চাপ বাড়তে থাকায় সরে যেতে বাধ্য হলেন তিনি। টয়োটাসহ টুর্নামেন্টটির মূল পৃষ্ঠপোষক কোম্পানিগুলো তার মন্তব্যের সমালোচনা শুরু করেছিল।
গত মঙ্গলবার একদল নারী আইন প্রনেতা মোরির ওই মন্তব্যের প্রতিবাদে সাদা পোশাক পরেন। তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশে একই কাজ করেন কিছু পুরুষও। প্রতিবাদস্বরূপ টোকিও গভর্নর ইউরিকো কোয়িকে অলিম্পিকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানান।
বিবিসির খবরে বলা হয়, জাপানের অলিম্পিক আয়োজক কমিটিতে বর্তমানে ২৪ জন সদস্য রয়েছেন। তার মধ্যে পাঁচজন নারী। এই কমিটি জাপানি অলিম্পিয়ানদের বাছাই করে থাকেন। নারীর সংখ্যা ৪০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য ছিল।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলনে অবশ্য পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন। সেখানে স্বীকার করেছিলেন যে, নারীদের বিষয়ে বলা কথাগুলো ভুল ছিল এবং সেগুলো একেবারেই অলিম্পিকের স্পিরিটের সঙ্গে যায় না। ইয়োশিরো মোরি ২০০০ সাল থেকে ২০০১ পর্যন্ত তিনি জাপানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তবে প্রধানমন্ত্রীত্ব চলে গেলেও ২০১২ সাল পর্যন্ত সাংসদ ছিলেন মোরি।
বিতর্কিত মন্তব্যের পর থেকে অলিম্পিক আয়োজক কমিটি থেকেও তাকে সরানোর দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন বিরোধী দলের সাংসদরা।
বিবিসির খবরে বলা হয়, অলিম্পিক কমিটি থেকে ইয়োশিরো মোরির পদত্যাগের পর কমিটির নতুন প্রধান কে হবে সেটা এখনও ঠিক হয়নি। প্রথমিকভাবে তিনি সুপরিচিত ক্রীড়া প্রশাসন সাবুরো কাওয়াবুচিকে বাছাই করেন। কিন্ত্ ুঅনেকে এটার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন