বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ছাড়পত্র ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না ভবন

অগ্নিকান্ড সচেতনতা মহড়ায় ত্রাণপ্রতিমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০৫ এএম

বহুতল ভবন নির্মাণে নির্ধারিত নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে। ভবন নির্মাণের পর সবকিছু যাচাই সাপেক্ষে সার্টিফিকেট না পেলে ভবন ব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।

গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর মহাখালী কড়াইল বেলতলা আদর্শ নগর বস্তিতে জাতীয় দুর্যোগ প্রস্ততি দিবস-২০২১ উপলক্ষে ‘ভূমিকম্প ও অগ্নিকান্ড বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি মহড়ায়’ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পর এসব দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়, কিন্তু পরবর্তীতে এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে দেখা যায় না এমন প্রশ্বের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটা সত্যি দুর্ঘটনার পর যেসব সুপারিশ করা হয়, অনেক ক্ষেত্রে তার বাস্তবায়ন হয় না। তবে আমরা একেবারে বসে নেই, নতুন একটি বিল্ডিং কোড প্রস্তত করেছি। এটি আইন হয়ে পাস হলে যে কেউ যত্রতত্র ভবন তৈরি করতে পারবেন না। নতুন কোড অনুযায়ী সাড়ে সাত রিখটার স্কেলের ভূমিকম্প সহনীয় করে ভবন প্রস্ততের কথা বলা হয়েছে। ভবনের ফায়ার ব্যবস্থাপনাসহ সবকিছু দেখার পর সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। সার্টিফিকেট না পেলে ওই ভবন ব্যবহার করতে পারবে না। বহুতল ভবনে অগ্নিকান্ডের সময় উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতার বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের সর্বোচ্চ ল্যাডারগুলো দিয়ে ২০ তলা পর্যন্ত উদ্ধার কাজ পরিচালনার সক্ষমতা আছে। সর্বোচ্চ ভবন পর্যন্ত যেন এ সক্ষমতা বাড়ানো যায় সেই পরিকল্পনা রয়েছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যে ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করছে আমরাও সেটা অনুসরণ করবো।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, অগ্নিকান্ডের ঘটনার সময় আমাদের পানি সংকটের বিষয়টি লক্ষ্য করেছি। এ বিষয়ে ওয়াসার সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা পথে পথে ওয়াটার হাইড্রেন্ট তৈরি করবেন বলে জানিয়েছেন। সেগুলো হলে আর এ সমস্যা থাকবে না। ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ২২০ কোটি টাকার বিভিন্ন যন্ত্র সংযোজন করা হয়েছে। নতুন করে আমরা এবার আড়াই হাজার কোটি টাকার যন্ত্র কিনে দেবো। এর মধ্যে চারটি হেলিকপ্টার, পানিতে ও স্থলে চলাচল করতে সক্ষম এমন চারটি হোবারক্রাফট ফায়ার সার্ভিসে যুক্ত করা হবে। তিনি বলেন, নতুন ৬০টি ল্যাডার যুক্ত করা হবে। বিভাগীয় শহরের জন্য ৬৫ মিটার, জেলা শহরের জন্য ৫৫ মিটার ও উপজেলা পর্যায়ে ব্যবহারের জন্য ৩৫ মিটার উচ্চতার ল্যাডার ক্রয় করা হবে। আগামী দিনে দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা পৃথিবীর যেকোনো উন্নত দেশের মতো হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই না আপনারা আজীবন বস্তিতে থাকেন। কারণ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা ধনী দেশে পরিণত হচ্ছি। তাই বস্তিবাসীদের জন্য স্থায়ী সমাধান হিসেবে অ্যাপার্টমেন্ট করে দিতে চাই। ডিএনসিসি মেয়রকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি জায়গার বন্দোবস্ত করেন, ভবন করতে আমি টাকা দেবো। আমাদের মন্ত্রণালয়ের অনেক টাকা আছে, আমরা প্রতিবছর এক-দুই হাজার কোটি টাকা করে দিতে পারবো। ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, যারা বড় বড় ভবন করছেন তাদের নিজস্ব ইন বিল্ট ফায়ার সিস্টেম থাকতে হবে। এত বড় ভবন করবেন আর ইন বিল্ট ফায়ার সিস্টেম থাকবে না এটি হবে না। ভবন তৈরির পর ফায়ার ড্রিল করে সার্টিফিকেট নেবেন তারপর ভবনে উঠতে দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, আমরা এরইমধ্যে ২০টি ভবনকে কমপ্লায়েন্স বিল্ডিং হিসেবে ঘোষণা করতে চাই। যেন সবাই এতে উদ্বুদ্ধ হয়। গার্মেন্টসে নিজেরাই ব্যবসার স্বার্থে ফায়ার সেফটি, ইলেকট্রিক সেফটি মেনে নিজেদের ভবন কমপ্লায়েন্স করে।

তাহলে অন্যরা কেন করতে পারবেন না?
তিনি বলেন, বস্তিবাসীর বিষয়ে স্থায়ী সমাধান দিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ করে স্যাম্পল হিসেবে কিছু অট্টালিকা করতে চাই। প্রথম অবস্থায় পরীক্ষামূলকভাবে এ বছরই মিরপুরে বহুতল ভবনে ৭২০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে স্থানান্তর করা হবে, যারা এতদিন বস্তিতে বসবাস করছেন।
এ সময় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইনসহ ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন