মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

আল কোরআন আল্লাহর চিরন্তন কালাম

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৫ এএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

আল কোরআন কি? এই প্রশ্নের উত্তর কোরআন নিজেই প্রদান করেছে। যথা : (ক) এটি (আল্লাহর) কিতাব, এতে কোনো সন্দেহ নেই, মুত্তাকীনদের জন্য হেদায়েত। (সূরা বাকারাহ : আয়াত ২)। (খ) আর এটি এমন কিতাব, যা আমি বরকতময় করে নাযিল করেছি, সুতরাং তোমরা তার অনুসরণ করো এবং তাকওয়া অবলম্বন করো, যাতে তোমরা রহমতপ্রাপ্ত হও। (সূরা আনয়াম : আয়াত ১৫৫)। (গ) এটা মানুষের জন্য স্পষ্ট বর্ণনা ও হিদায়াত এবং মুত্তাকীদের জন্য উপদেশ। (সূরা আলে ইমরান : আয়াত ১৩৮)। (ঘ) নিশ্চয় এই কোরআন তোমার জন্য এবং তোমার কাওমের জন্য উপদেশ। আর অচিরেই তোমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে। (সূরা যুখরুফ : আয়াত ৪৪)।

কোরআন পাঠ করা ফরজ। ইরশাদ হয়েছে : (ক) পাঠ করো তোমার পরওয়ারদিগারের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। (সূরা আলাক : আয়াত ১)। (খ) কোরআনের যতটুকু সহজ লাগে তা; পাঠ করো। (সূরা মুযযাম্মিল : আয়াত ২০)। (গ) ফজরে কোরআন পাঠ করো, কেননা ফজরের কোরআন পাঠ সাক্ষ্য হিসেবে গণ্য হবে। (সূরা বাণী ইসরাঈল : আয়াত ৭৮)। (ঘ) আর স্পষ্টভাবে ধীরেধীরে কোরআন আবৃত্তি করো। (সূরা মুযযাম্মিল : আয়াত ৪)। (ঙ) আর যখন তাদের ওপর তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয়, তখন তা’ তাদের ঈমান বৃদ্ধি করে। (সূরা আনফাল : আয়াত ২)।

সমগ্র মানবজাতির জন্যই এই কোরআন। যথা: ইরশাদ হয়েছে : (ক) আলিফ-লাম-রা, এই কিতাব যা আমি তোমাদের প্রতি নাযিল করেছি যাতে তুমি মানুষকে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আন, পরাক্রমশালী সর্ব প্রশংসিতের পথের দিকে। (সূরা ইব্রাহীম : আয়াত ১)। (খ) এটি আল কিতাব, যা তোমার প্রতি নাযিল করা হয়েছে। সুতরাং তার সম্পর্কে তোমার মনে যেন কোনো সঙ্কীর্ণতা না থাকে, যাতে তুমি তার মাধ্যমে সতর্ক করতে পার এবং তা’ মুমিনদের জন্য উপদেশ। (সূরা আ’রাফ : আয়াত ২)।

(গ) আর আমি আপনার ওপর কিতাব নাযিল করেছি প্রতিটি বিষয়ের স্পষ্ট বর্ণনা, হিদায়াত, রহমত ও মুসলিমদের জন্য সুসংবাদদাতা স্বরূপ। (সূরা নাহল : আয়াত ৮৯)। (ঘ) আর আমি কোরআন নাযিল করেছি যা মুমিনদের জন্য শিফা ও রহমত। (সূরা বাণী ইসরাঈল : আয়াত ৮২)। (ঙ) আমি কোরআনে কোনো কিছু বাদ দেইনি। (সূরা আনয়াম : আয়াত ৩৮)।

আল কোরআনের হেফাজতকারী স্বয়ং আল্লাহ। ইরশাদ হয়েছে : (ক) নিশ্চয়ই আমি কোরআন নাযিল করেছি, আর আমিই তার হেফাজতকারী। (সূরা হিজর : আয়াত ৯)। এই আয়াতে বলে দেয়া হয়েছে যে, সকল অবস্থায়ই আল্লাহপাক কোরআনকে হেফাজত করবেন। এবং যারা এই কোরআনকে উপেক্ষা করবে, তারা কঠিন শাস্তি ভোগ করবে।

আল কোরআনে ‘কোরআন’ নামটি ৬৮ বার এসেছে। তার একক (৬+৮) = ১৪। আল কোআনে ১৪টি তিলাওয়াতের সিজদাহ রয়েছে। কোরআন হচ্ছে ওহীর লিখিত রূপ। আর মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জাগতিক জীবন হচ্ছে আল কোরআনের জীবন্ত রূপ। ইরশাদ হয়েছে : (ক) আর আমাকের নির্দেশ দেয়া হয়েছে যেন আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত হই, আর আমি যেন আল কোরআন অধ্যয়ন করি। (সূরা নামল : আয়াত ৯১-৯২)।

কোরআন শব্দের অক্ষর সংখ্যা ৪। এবং এই অক্ষর চতুষ্টয়ের ধ্বনি সংখ্যা ১১। যা আল্লাহ নাম ও আহমাদ নাম মোবারকের অক্ষর সংখ্যা ও ধ্বনি সমষ্টির সাথে মিলে যায়। এটা আল্লাহপাকের অসীম কুদরতের বহিঃপ্রকাশ। সুবহানাল্লাহ!

আল কোরআনের ১৪টি অনন্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যথা : ১. কোরআনুল কারীম আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রত্যক্ষ ওহী। ২. আল্ কোরআন হযরত জিব্রাঈল (আ.) এর মাধ্যমে নাযিল হয়েছে। ৩. আল কোরআনের শব্দাবলী ও ভাষা আল্লাহর নিজের। ৪. আল কোরআন হলো অহীয়ে মাতলু বা পঠিতব্য প্রত্যাদেশ। ৫. কোরআন পাঠ ছাড়া সালাত আদায় করা যায় না। সালাতে কোরআন পাঠ করা ফরজ। ৬.আল কোরআনের সকল আয়াতই মুতাওয়াতির বা অবিচ্ছিন্ন ও সর্ব সম্মতভাবে বর্ণিত। ৭. আল কোরআন ইসলামী শরীয়াতের অকাট্য দলিল। ৮. কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার জন্য আল্লাহ ও রাসূলের মধ্যে ফিরিশতার মাধ্যম প্রয়োজন। ৯. আল কোরআনের যে কোনো বিষয় অস্বীকার করলে কাফির হতে হয়। ১০. আল কোরআন অপবিত্র অবস্থায় স্পর্শ করা নিষেধ। ১১. আল কোরআন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর এক চিরন্তন মুজিযা। ১২. আল কোরআনে ইসলামী শরীয়াতের যাবতীয় মূলনীতি সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণিত। ১৩. আল কোরআন সর্বশেষ আসমানী কিতাব। পৃথিবীতে আর কোনো কিতাব নাযিল হবে না। ১৪. আল কোরআন কেউ বিকৃত ও ধ্বংস করতে পারবে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
রোমান ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ২:২৭ এএম says : 0
মহাগ্রন্থ আল কোরআন চিন্তা ও গবেষণায় বিবেকবোধকে কার্যকর করার পয়গাম দিয়েছে। অনুভব ও উপলব্ধিকে কাজে লাগাতে বলেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে নবী! বলে দাও, আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে, তার প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করো।’ (সূরা ইউনুস, আয়াত ১০১)
Total Reply(0)
সোলায়মান ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ২:২৮ এএম says : 0
আমাদের প্রত্যেকের অবশ্যকর্তব্য নিয়মিত কোরআন পড়া, আল কোরআনের চর্চা করা। নয় তো আমাদের অন্তর বিরান ঘরের মতো হয়ে যাবে।
Total Reply(0)
হুমায়ূন কবির ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ২:২৯ এএম says : 0
কোরআন তার পাঠকারীর জন্য কিয়ামতের দিন সুপারিশ করবে। তাই রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াতের নির্দেশ দিয়েছেন।
Total Reply(0)
আবদুর রহমান ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ২:২৯ এএম says : 0
কোরআন মহান আল্লাহর পাক কালাম বা পবিত্র বাণী। কোরআন শব্দের অর্থ যা পাঠ করা হয়, পাঠযোগ্য ও বারবার পাঠের উপযুক্ত। কোরআন অর্থ যা নিকটে পৌঁছে দেয় বা নৈকট্য অর্জনের মাধ্যম। কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জন করা যায় বলেই এই নামকরণ।
Total Reply(0)
মারিয়া ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ২:৩০ এএম says : 0
লেখাটির জন্য লেখক ও ইনকিলাবকে মোবারকবাদ জানাচ্ছি
Total Reply(0)
Monjur Rashed ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ পিএম says : 0
Special thanks to the writer for mentioning the dignity of the holy Quran and Rasul ( sm) simultaneously. Supreme dignity to Rasul (sm) is urgently needed to understand the meaning ( hakikat ) of the holy Quran because he is the true demonstrator and implementer of this eternal book.
Total Reply(0)
মীর সাব্বির আল মাহমুদ ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৩:৩৪ পিএম says : 0
সুন্দর উপস্থাপনশৈলী। ধন্যবাদ লেখক এবং ইনকিলাবকে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন