বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সকলে আগ্রহ নিয়ে টিকা নিচ্ছেন

ভ্যাকসিন নিলেও সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা মানতে হবে ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টার ও হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০৩ এএম

করোনা ভ্যাকসিন দেয়া সত্বেও সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এক সময় টিকা দেওয়া নিয়ে দ্বিধাদ্ব›দ্ব থাকলেও এখন আর কোন সমস্যা নেই, সকলে আগ্রহ নিয়ে টিকা কেন্দ্রে এসে টিকা নিচ্ছেন। আমরা বলে দিয়েছি ৪০ বছরের উপরে যারা তারা টিকা পাবে এবং আইডি কার্ড সাথে নিয়ে গেলে তারা ফর্ম পাবেন এবং রেজিস্ট্রৈশনও করতে পারবেন। গত শনিবারও প্রায় এক লাখ ৯৪ হাজার মানুষ টিকা নিয়েছেন এবং আমরা ৩ কোটি টিকা কিনে রেখেছি। একেবারে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের সকলকেই আমরা টিকা দেব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন দেয়া সত্বেও সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলতে হবে। মাস্ক পরতে হবে, হাত ধুতে হবে এবং পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। তাহলে আমি মনে করি আমাদের দেশ থেকে করোনার প্রাদুর্ভাব পুরোপুরি চলে যাবে। তাই সাবাইকে এটা মেনে চলার অনুরোধ জানাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন,
গতকাল ‘কুমুদিনী ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সাইন্স এন্ড ক্যান্সার রিসার্চ’ নামে নারায়ণগঞ্জে একটি ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টার ও হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কুমুদিনী কমপ্লেক্স নারায়ণগঞ্জে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে সঙ্গে যুক্ত হন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিকিৎসা বিজ্ঞান বিশেষ করে ক্যান্সারের ওপর আরো গবেষণায় গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, দেশের পরিবেশ এবং জলবায়ুর সাথে ক্যান্সার কিভাবে বিস্তার লাভ করে সেজন্য গবেষণা দরকার। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে গবেষণার সুযোগ খুবই কম। বিশেষ করে চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা খুব বেশি একটা হচ্ছেনা। যেটা হওয়া একান্তভাবে প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ক্যান্সার এমন একটা রোগ এবং যেভাবে এর প্রাদুর্ভাব হচ্ছে তার সেভাবে ডায়াগনোসিস আমাদের দেশে হচ্ছে না। দেশের পরিবেশ এবং জলবায়ুর সাথে এই ক্যান্সার কীভাবে বিস্তার লাভ করে সেটার চিকিৎসার জন্য যে গবেষণা দরকার সেটা আমাদের দেশে খুব কমই হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ’৯৬ সালে সরকার গঠনের পর রিসার্চের জন্য অনেকগুলো ইনস্টিটিউট তৈরি করে দিয়েছিলাম এবং পরবর্তীতে ক্ষমতায় এসে সেগুলোকে আরো উন্নত করার পাশাপাশি আরো নতুন ইনস্টিটিউট করে দিয়েছি। কারন গবেষণা আমাদের জন্য একান্ত অপরিহার্য।

শেখ হাসিনা বলেন, কুমুদিনী ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সাইন্স এন্ড ক্যান্সার রিসার্চ’ শীর্ষক এই সেন্টারটা যখন তৈরি হবে তখন এদেশে ক্যান্সার চিকিৎসার সুযোগ মানুষ আরো ভালভাবে পাবে। কারণ দেশের সকল মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) প্রতিষ্ঠার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, দেশের সকল বিভাগে অন্তত একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা সরকারের পরিকল্পনায় রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সকল বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হলে সেখানে রিসার্চের সুযোগ হবে। তবে, আমি মনে করি যে, বেসরকারি খাতকে সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, দানবীর রনদা প্রসাদ সাহার নাতি এবং কুমুদিনী ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজিব প্রসাদ সাহা, পরিচালক শ্রীমতি সাহা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। স্থানীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

কুমুদিনী ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্ট এবং এর প্রতিষ্ঠাতা রনদা প্রসাদ সাহার ওপর অনুষ্ঠানে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারী প্রচারিত হয়। ১৯৭১ সালের ১৭ মে দানবীর রনদা প্রসাদ এবং তার পুত্র ভবানী প্রসাদকে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী নারায়ণগঞ্জে তাদের বাসভবন থেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর তারা আর ফেরেনি।

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বলেন, ’৯৬ সাল থেকেই সরকার বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করেছে। শুধু তাই নয় বেসরকারি খাতে হাসপাতাল করতে যেসব যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয় বা সরঞ্জমাদির প্রয়োজন হয় সেগুলোকে ট্যাক্স ফ্রি এবং ট্যাক্স কমিয়ে দেয়া হয়েছে। শিল্প প্রতিষ্ঠায় যেমন সুযোগ দেয়া হয়ে থাকে।

তিনি বলেন, এমনকি শিশুদের জন্য ইনকিউবেটরসহ যা যা প্রয়োজনে সেগুলোও আমি সম্পূর্ণ ট্যাক্স ফ্রি করে দিয়েছিলাম। যে কারণে আমাদের দেশে অনেকগুলো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা হয়েছে। তবে, এখানে কুমুাদনী ট্রাস্ট সব সময় অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে এবং সব থেকে বেশি উদ্যোক্তা তারা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই যেটা উদ্যোগ কুমদিনী ট্রাস্ট নিয়েছে তা অত্যন্ত সফলভাবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। সেজন্য আমি কুমুদিনী ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্টের সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই এবং বিশেষ করে স্রীমতি সাহা এবং রাজিব সাহার প্রতি। কেননা দাদা এবং বাবার কাজ গুলো এখনও যে ধরে রেখেছেন এবং করে যাচ্ছেন সেই সাথে তাদের বোন এবং আত্বীয়-স্বজনরাও করে যাচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, আমাদের দেশের চিকিৎসকরাও গবেষণায় খুব একটা সময় ব্যয় না করে রোগী দেখেই সময় কাটান। আসলে যাদের রিসার্চ করার কথা সেসব চিকিৎসকরা রোগী দেখতে এত ব্যস্ত কাজেই হাতে গোনা খুব কমজনকেই আমি দেখি তাদের পাবলিকেশন্স এবং রিসার্চ।

যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনকালেই জাতির পিতা প্রতিটি ইউনিয়নে ১০ শয্যার একটি করে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসা সেবা জনগণের একদম দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়াই তার লক্ষ্য ছিল। তিনি বলেন, দেশ যখন স্বাধীনতার পর ঘুরে দাঁড়িয়ে নতুনভাবে এগিয়ে চলা শুরু করেছে তখনই ঘাতকচক্র ’৭৫ এর ১৫ আগষ্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে সেই অগ্রগতির চাকাকে স্তব্ধ করে দেয়। এর মাধ্যমে একটি আদর্শকে হত্যা করা হয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করা হয়। শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস আসার পরেই ৭ দিনের মধ্যে আমরা ২ হাজার ডাক্তার, ৬ হাজার নার্স এবং টেকনিশিয়ান নিয়োগ দিয়েছি এবং ভবিষ্যতে আরো নিয়োগের পদক্ষেপও নেয়া হয়েছে।

করোনাভাইরাস মোকাবেলার জন্য যা যা করা দরকার সরকার তা করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের এই পদক্ষেপের ফলে আজকে করোনাভাইরাস অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ সময় প্রথম ভ্যাকসিন গ্রহিতা কুমুদিনী হাসপাতালের সিনিয়র নার্স বেরোনিকা ডি কস্তাকেও তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

সরকার প্রধান বলেন, কুমুদিনী ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সাইন্স এন্ড ক্যান্সার রিসার্চের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মাধ্যমে আমাদের দেশের স্বাস্থ্যখাত আরো একধাপ এগিয়ে গেল এবং বেসরকারি খাত আরো উৎসাহিত হবে এবং সকলেই চাইবে যেন এ ধরনের সেবামূলক কাজ করতে পারে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
ম নাছিরউদ্দীন শাহ ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১:১৮ এএম says : 1
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে হাজারো শ্রদ্ধা সালাম আজ বাংলাদেশের মানুষ আগ্রহ ভরে টিকা নিচ্ছেন আপনাকে খুশী দেখে আনন্দীত হলাম। আপনি মানবতার মা বিশ্বের মাঝেই একমাত্র বিশ্ব মানবতার মা আপনি। মহামারীতে আক্রান্ত সারা পৃথিবী দিশেহারা পৃথিবীর মানুষের মাঝেই আমরাও। মহান আল্লাহর সাহায্য আপনার আন্তরিকতা আপনার সাহসিকতা আপনার পরিকল্পনা লক্ষ কোটির প্রনোদনা দেশের মানুষের নিরাপত্তা খাদ্যের সহায়তায় কঠিন ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে দেশ জাতি উদ্ধার করেছেন বাংলাদেশ আপনার কাছেই নিরাপদ। দেশের মানুষের জীবন রক্ষার জন্যে টিকা দিচ্ছেন। আপনাকে দেশজাতি শ্রদ্ধাভরে দোয়া করছেন। আপনার বিশালাকার ব‍্যাক্তিত্বে আপনি বিশ্বের প্রভাবশালী নেতাদের একজন। দক্ষিণ এশিয়াই দক্ষ ক‍্যারেশম‍্যাটিক লিডারবাংলাদেশের ইতিহাসে দক্ষ বিচক্ষন বুদ্ধিদীপ্ত আন্তর্জাতিক মানের নেতা আপনি। কেন টিকা নিচ্ছেন না আপনাকে বূঝাবার সাহস শক্তি"" রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব‍্যাক্তিও প্রতিষ্টান বাংলাদেশের মানুষের প্রতি গভীর ভালোবাসার জন্যে বঙ্গবন্ধুর কন‍্যার পরিক্ষা দিতে হবে?নিজের জীবনের নিরাপত্তা কে তুচ্ছজ্ঞান কেন? বাংলাদেশের নির্বাহী প্রধানের জরুরী টিকানেওয়া প্রয়োজন জাতীয় নেতৃবৃন্দ আওয়ামীলীগের নেতারা দেশের বিজ্ঞজন রাষ্ট্রের নিরাপত্তায় নিয়োজিতরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থবিষয়ক উপদেষ্টারা যার যার অবস্থান হতে প্রধানমন্ত্রী কে টিকা নিতে বলুন। আমি ক্ষুদ্র মতামতের কলমে শত শতবার রাষ্ট্রের নির্বাহী প্রধান কে নিঃস্বার্থ ভাবে মা সম্বোধন করেছি। জাতীয় আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এই মানবতাবাদী মহান রাষ্ট্র প্রধান বঙ্গবন্ধুর কন‍্যার পক্ষে সুচিন্তিত দায়িত্বশীল মতামত দিয়েছি। আজও আপনার প্রতি বিনীতভাবে অনুরোধ টিকা নিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। মহান আল্লাহর করুনার দরবারে আপনার শারীরিক সুস্থতা দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
Total Reply(0)
মেহেরিন ফারজানা ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ২:১৩ এএম says : 0
টিকা ছাড়া ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ
Total Reply(0)
Mihilima Sultana ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ২:১৪ এএম says : 0
খুব ভালো মনের একজন মানুষ, স্যার বেঁচে থাকুক অনেকদিন
Total Reply(0)
Solaiman ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ২:১৮ এএম says : 0
সবচেয়ে কার্যকরী ভ্যাকসিন আল্লাহর উপর ভরসা আল্লাহ কবুল করুক আল্লাহু আকবার আমিন
Total Reply(0)
Ujjal Chowdhury ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ২:১৯ এএম says : 0
ফাইজার এর টিকা দেশে আনা উচিত
Total Reply(0)
Noman Uddin ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ২:২২ এএম says : 0
তরিৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে টিকা কার্যক্রমকে সফল করার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন