শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মাফিয়াতন্ত্র আড়াল করতে জিয়াউর রহমানের খেতার বাতিলের সুপারিশ

ঢাবিতে মানববন্ধনে সাদা দল

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:৪১ এএম

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সুপারিশের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এসময় জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের এখতিয়ার জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) নেই বলে মন্তব্য করে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি আল জাজিরায় প্রকাশিত সরকারের মাফিয়াতন্ত্রের প্রতিবেদন থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্য এবং নিজেদের ব্যার্থতা ও কুকর্ম আড়াল করতে সরকার এ ঘৃণ্য তৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে।
সাদা দলের আহবায়ক প্রফেসর লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড. আখতার হোসেন খান, প্রফেসর ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, যুগ্ম আহবায়ক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান খান। এছাড়াও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, প্রফেসর ড. মোঃ হাসানুজ্জামান, প্রফেসর এবিএম শহিদুল ইসলাম, প্রফেসর আবুল কালাম সরকার, প্রফেসর ড. মামুন আহমেদ, প্রফেসর আল মোজাদ্দেদী আলফেছানি, প্রফেসর ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ, প্রফেসর গোলাম রাব্বানী, প্রফেসর আলমগীর হোসেন সম্রাট, প্রফেসর নুরুল আমিন, প্রফেসর মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ, এ্যাসোসিয়েট প্রফেসর আল আমিন প্রমুখ।
স্বাগত বক্তব্যে প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের খেতাব কারো দয়ার দান নয়, এটা তার অর্জন। মুক্তিযুদ্ধে সর্বোচ্চ অবদান রেখেই তিনি এই খেতাব অর্জন করেছেন। যথার্থভাবেই বাংলাদেশ সরকার তাকে মূল্যায়িত করেছেন। এই খেতাব বাতিলে জামুকার আইনগত কোনো এখতিয়ার নেই। শহীদ জিয়া জাতির ক্রান্তিকালে মুক্তির দিশা দিয়েছেন। যখন আওয়ামী লীগের নেতারা আত্মগোপনে চলে যান তখন শহীদ জিয়া উই রিভোল্ট বলে পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তার নেতৃত্বে চট্টগ্রাম অঞ্চলে ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়। মুক্তিযুদ্ধে প্রথম ফোর্স গঠন করা হয় জিয়ার নামের অদ্যাক্ষর দিয়ে ‘জেড‘ ফোর্স। দেশের ক্ষমতাসীনদের সীমাহীন দুর্নীতি নিয়ে যখন আলজাজিরায় রিপোর্ট প্রকাশ হলো সেটাকে চাপা দিতেই জিয়ার খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
প্রফেসর এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার মানে হচ্ছে বঙ্গবন্ধুকে অপমান করা। বাবা (বঙ্গবন্ধু) কি ভুল করছিলো যে, প্রধানমন্ত্রী সংশোধন করছেন। আসলে সরকারের দুইটা মন্ত্রণালয় এখন সক্রিয়। একটি জিয়া পরিবার দমন মন্ত্রণালয় অপরটি দুর্নীতি দমন মন্ত্রণালয়। কিন্তু কোনো লাভ নেই জিয়াউর রহমানের প্রতি মানুষের ভালোবাসা, বিএনপির প্রতি ভালোবাসা আছে, থাকবে। কাগজে নয়, খোদাই করে নয়, জিয়াউর রহমানের নাম সকলের হৃদয়ে আছে। এই কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ান, সঠিক ইতিহাস চর্চা করুন। না হলে আগামীতে আপনাদের খেসারত দিতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ হাসানুজ্জামান বলেন, ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকেও এখনো রাতের ভোটের মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায় যেতে হয়। এত বছর পরেও জিয়াউর রহমান এদেশের মানুষের কাছে এত জনপ্রিয়। তাদের দুঃখ ও হিংসা এখানেই। এজন্যই তারা এ অপরাজনীতির কৌশল বেছে নিয়েছে। একটা অগণতান্ত্রিক সরকারের কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করা যায় না। এ ষড়যন্ত্র বহু আগে থেকেই। এইদিন শেষদিন নয়, বাংলার মটিতে এর বিচার একদিন হবে। বর্তমান সরকারের মাফিয়াতন্ত্রের ইতিহাস নিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদন যাতে মাটিতে মিশে যায়, সাংবাদিকরা যাতে এই বিষয় বাদ দিয়ে জিয়াউর রহমানের ইস্যু নিয়ে লেখালেখি করে সে জন্যই এই বিষয়টি এখন তোলা হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে সাদা দলের আহবায়ক প্রফেসর লুৎফর রহমান বলেন, যে খেতাবটি দিয়েছিল শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার। যেটি তৈরি করেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। জামুকার দায়িত্ব ছিল এ দেশের মানুষের সঠিক তালিকা তৈরি করা, মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসন করা। ইতিহাস বিকৃত করার কারনে বর্তমান প্রজন্ম যারা জিয়াউর রহমানকে ভুলতে বসেছিল, সে প্রজন্ম আজ জেগে উঠেছে নতুন করে জিয়াউর রহমানকে জানার জন্য। বর্তমান সরকারকে বলব আপনারা জামুকার এই সুপারিশে কর্ণপাত করবেন না, যদি করেন আজ যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জেগে উঠেছে, তেমনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জেগে উঠবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন