সরকারের অবস্থা ভালো না জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশে-বিদেশে উন্মোচিত হওয়ার পর তাদের ঘরে-বাইরে মুখ দেখাতে না পেরে চক্রান্তে মেতে উঠেছে। আল জাজিরার পর ডয়েচে ভেলে, এরপর আবার ‘দ্য ইকোনমিস্ট’! রাষ্ট্রের সব গোপন অপকর্ম প্রকাশ হয়ে যাচ্ছে। বিদেশী গণমাধ্যমে বাংলাদেশ আজ আর কোনো রাষ্ট্র নয়, প্রজাতন্ত্র নয়, বৈদেশিক শক্তিনির্ভর এক মাফিয়াতন্ত্র মাত্র। অধঃপতিত এ পদ্ধতিতে নীতি, আদর্শ, প্রজ্ঞা বা দূরদর্শিতা নয়, বরং প্রতিহিংসাপরায়ণতা, হঠকারিতা ও অবিমৃষ্যকারিতাই এখন এ সরকারের চলার পথপ্রদর্শক। এখন সরকারের অবস্থা ‘দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ।’ চারিদিকে নানা কথাবার্তা, ফিসফাস শুনতে পাচ্ছে জনগণ। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার নানা নাটক, রঙ্গ করছে। আবার নতুন করে গ্রেফতার, মামলা, হামলা, নিপীড়ন, নিষ্ঠুর দমননীতি শুরু করেছে। জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে নতুন নতুন ইস্যু তৈরি করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ৪ ফেব্রুয়ারি নড়াইলের আদালত একটি মিথ্যা ও ভুয়া মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দুই বছরের কারাদন্ড দেয়। এরপর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অর্জিত বীরত্বসূচক ‘বীর উত্তম’ পদক ছিনতাই করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে সরকার। কোনটাতেই হালে পানি না পেয়ে হতাশ হয়ে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মানহানির মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে নড়াইলের আদালত। এ ঘটনায় পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় যে, আইন আদালত শেখ হাসিনার হাতের মুঠোয় এবং আওয়ামী লীগেরই একটি বর্ধিত প্রতিষ্ঠান।
সারাদেশে সরকার কিছু মামলাবাজ পুষে রেখেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এদের কাজই হলো সরকারের নির্দেশে বিরোধী দলকে ঘায়েল করতে মিথ্যা মামলা ঠুকে দেয়া। এদের মধ্যে নড়াইলের শহীদ শেখ জামাল জাতীয় স্মৃতি পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ আশিক বিল্লাহ, কালিয়া উপজেলার মো. রায়হান ফারুকী ইমাম, আর জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী। যাদের পেশা মামলা করা। সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে এ ধরনের বিকারগ্রস্ত লোকেরা প্রায়ই বিএনপি চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত নেতাকর্মীদের নামে উদ্ভট, বানোয়াট ও আজগুবি মামলা একের পর এক দায়ের করে যাচ্ছে। মিথ্যা-ভুয়া মামলা দিয়ে হয়রানি করার উদ্দেশ্য হলো সরকারের নেক নজরে থেকে আখের গুছিয়ে নেয়া।
আইনের ভিত্তিতে হলে মানহানির মামলা বাতিল হতো মন্তব্য করে এড. রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ছাড়া কেউ কারো বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানির মামলা করতে পারেন না। কিন্তু সেখানে মামলা হলো, গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে দুই দফা। মুক্তিযোদ্ধার তালিকা এখনো যোগ বিয়োগ হচ্ছে। কাটাছেঁড়া হচ্ছে। তাহলে ওনারা কি ভুল বলেছে? আদালত কি এতোটা বেখবর হয়ে গেল?
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনদের বিপক্ষে কোন সত্য উচ্চারণ এবং সমালোচনা করলেই সেটা হয়ে যায় তাদের চোখে রাষ্ট্রদ্রোহিতা। আর তাদের লোকজন বললে হয় দেশপ্রেম। আমাদের দলের ভাইস চেয়ারম্যান রণাঙ্গণের বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, ‘৭১ এ যুদ্ধকালে মুক্তিযোদ্ধার মোট সংখ্যা ছিলো ৮০ হাজার। এখন কিভাবে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মুক্তিযোদ্ধা আড়াই লাখ হল? এ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা কারা? এটা জাতি জানতে চায়। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এ নেতা বুধবার গ্রেফতার হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আহবায়ক রাকিবুল ইসলামের মুক্তি দাবি করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন