মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার পেছনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা ছিল অনেক

সেমিনারে তথ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০৬ এএম

সবাইকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশে ষড়যন্ত্র হয়েছে, হচ্ছে। সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। দেশ ভাগের আগে পাকিস্তানের রাজনীতিবিদরা যখন উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য পায়তারা করছিলেন, তখনই বঙ্গবন্ধু বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার কথা বলেছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্লেসক্লাব আয়োজিত ‘ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৮ সালে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় এসে প্রথম কার্জন হলে বৈঠক করেছিলেন, সেখানে নানা ধরনের যে প্রতিবাদ হয়েছিল, তাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সব ঘটনার সাক্ষ্য প্রবাহ বলে, বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার পেছনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা ছিল।

হাছান মাহমুদ বলেন, ভাষা আন্দোলন সংগঠিত করার অপরাধে শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৪৯ সালে গ্রেফতার করা হয়।একটানা বায়ান্ন সাল পর্যন্ত তিনি কারাগারে ছিলেন। কারাগারে থাকাকালীন তিনি কিন্তু বসে ছিলেন না। সেখানে বসে তিনি ভাষা আন্দোলন করার ক্ষেত্রে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এমনকি তিনি জেলখানায় অনশন করেছেন। ফরিদপুরের জেলখানায় বসে ভাষা আন্দোলনের জন্য যে অন্যায় করা হচ্ছে, বাধা দেওয়া হচ্ছে, সেগুলোর প্রতিবাদে তিনি অনশন করেছেন। এ বিষয়গুলো আগে জনসম্মুখে প্রকাশিত হয়নি।

তিনি বলেন, কোনও একটি বিষয় কখন বলতে হয় সেটা বঙ্গবন্ধু জানতেন। সে জন্যই তিনি রাজনীতির কবি। বঙ্গবন্ধু ৬৬ সালে যদি ছয় দফা দাবি উত্থাপন করে স্বাধীনতার কথা না বলতেন, তাহলে আজকে স্বাধীনতা আসতো না। ছয় দফা দাবি উত্থাপন করে প্রথমে তিনি বাঙালির মনে স্বাধীনতার জন্য মনন তৈরি করেছিলেন। তিনি জানতেন সত্তর সালের নির্বাচনের পর পাকিস্তানিরা ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না। তারপর কী করতে হবে সেই পরিকল্পনাও তিনি তৈরি করে রেখেছিলেন। সেই পরিকল্পনা অনুসারে কিন্তু তিনি ৭ মার্চের ভাষণ দিয়েছেন। ৭ মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়ে তিনি কার্যত স্বাধীনতা ঘোষণা করে ফেলেছিলেন। বাংলাদেশ স্বাধীন শুধু এই ঘোষণাটা তিনি করেননি। ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে অনেকেই লিখেছেন, চতুর শেখ মুজিব কার্যত পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করে ফেলেছেন। কিন্তু তিনি বাংলাদেশ স্বাধীন সেই কথা বলেননি।

হাছান মাছুদ বলেন, মাতৃভাষার বিষয়ে ইউনেস্কো জানিয়ে ছিল কোনও ব্যক্তি আবেদন করলে সেটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এ জন্য রাষ্ট্রকে আবেদন করতে হবে। এই খবর যখন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানলেন তখন হাতে মাত্র দুই দিন সময়। দুই দিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রস্তাব পাঠানো কোনও রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব না। কিন্তু শেখ হাসিনা শুধু প্রস্তাব পাঠাননি, এর জন্য লবিংও করেছেন ওই সময়ের মধ্যে। শিক্ষামন্ত্রীকে প্যারিসে পাঠিয়েছেন। সেখানে প্রস্তাব করা হয়েছে, লবিং করেছেন এবং ভোটাভোটির মাধ্যমে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আর শহীদ মিনার সারা পৃথিবীতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার সিম্বল হিসেবে গৃহীত হয়েছে। এটি হয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা মাধ্যমে। এটিও বাঙালি জাতির বড় অর্জন। সবাইকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে ষড়যন্ত্র হয়েছে, হচ্ছে। সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি শামসুজ্জামান খান, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সদস্য আইয়ুব ভূঁইয়া প্রমুখ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন