শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বরিশালে পরিবহন ধর্মঘট আর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের অবরোধে ১৭টি রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ

দুই শ্রমিক গ্রেফতারের জের

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৭:৩৯ পিএম

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের মেসে হামলার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে দুই পরিবহন শ্রমিককে গ্রেফতারের প্রতিবাদে শনিবার সকাল ১১টার পরে বরিশালর সাথে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৭টি রুটে পরিবহন ধর্মঘটে জনজীবনে চরম দূর্ভোগ নেমে আসে। অপরদিকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সহ তাদের ওপর হামলার দ্রুত বিচার এবং পরিবহন শ্রমিকদের নৈরাজ্য বন্ধের দাবীতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সবধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখে ছাত্র-ছাত্রীরা । ২১ ফেব্রুয়ারী উপলক্ষে সন্ধ্যায় সাময়িকভাবে অবস্থান ও অবরোধ তুলে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা।

বরিশাল মহানগরীর রূপাতলী মিনিবাস টার্মিনাল এলাকা সহ নগরীর অপর পাড়ে কীর্তনখোলা নদী তীরে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বরিশাল-পটুয়াখালী-বরগুনা/কুয়াকাটা ও বরিশাল-ভোলা মহাসড়কে চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি অব্যাহত ছিল দিনভর। গত এক সপ্তাহে বরিশাল মিনিবাস টার্মিনাল এলাকা সহ বন্ধ থাকা বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও সংলগ্ন মহাসড়কে ব্যাপক উত্তেজনার মুখে এলাকার মানুষও আতংকে। বার বার সড়ক পরিবহন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ সব বর্ণনার বাইরে। গত মঙ্গলবার থেকে এসব মহাসড়কে বিআরটিসির কোন বাসও চলতে দিচ্ছে না ছাত্ররা। বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে এবারের এ গোলযোগের সূত্রপাত বিআরটিসির বাস কাউন্টারের কলম্যানের সাথে কথা কাটাকাটি থেকে।

পূর্ব ঘোষিত তিন দফা দাবি না মানায় ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম শেষে শুক্রবার সন্ধ্যার পরে পুনরায় মহাসড়ক অবরোধে নামে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে বরিশাল-পটুয়াখালী-বরগুনা/কুয়াকাটা ও বরিশাল-ভোলা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এরআগে বিকেল ৫ টায় শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিলও করে ক্যাম্পাসে। রাতে মহাসড়কে মশাল মিছিলও বের করে ছাত্ররা।

এ সড়ক অবরোধের ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ে বরিশাল সহ ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা ও কুয়াকাটাগামী যাত্রীরা। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে তাদের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় পুলিশ রহস্যজনক কারণে এখনো কাউকে গ্রেফতার করেনি। আবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহতরা হামলাকারীদের নামের তালিকা প্রদান করলেও তাদের বিরুদ্ধে মামলা না করে অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। যা শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখ্যান করেছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণাও দেয় শিক্ষার্থীরা।

এ অবস্থাতেই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের ওপর হামলায় জড়িত থাকার দায়ে শুক্রবার মধ্যরাতের পরে দুজন পরিবহন শ্রমিককে আটক করে পুলিশ। আর এর রেশ ধরেই শনিবার সকাল ১১টার পরে বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো বরিশাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো জেলা ছাড়াও খুলনা বিভাগের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় । ফলে এ অঞ্চলের ১৭টি রুটে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

অপরদিকে পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট শুরুর কিচ্ছুক্ষণের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছত্ররাও ক্যাম্পাসের সামনে জাতীয় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করে। পরিস্থিতির অবনতি রোধে মিনিবাস টার্মিনাল এলাকা সহ বিশ^বিদ্যলয় ক্যাম্পাসের বাইরে বরিশাল-পটুয়াখালী-বরগুনা/কুয়াকাটা ও বরিশাল-ভোলা মহাসড়কে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দিনভর ছাত্রদের অবরোধ আর পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ধর্মঘটে চরমঅচলবস্থায় দক্ষিণাঞ্চলের সুষ্ঠু সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা।

গত বুধবার সকাল ৭ টা থেকে পরবর্তী ১০ ঘন্টা এসব মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছিল শিক্ষার্থীরা। সেদিন বিকেলে মঙ্গলবারের রাতের হামলার ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা করা,দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা এবং অনাবাসিক সকল শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধানে ভূমিকা নেয়ার তিন দফা দাবি উত্থাপন করে শিক্ষার্থীরা। এসব দাবি পূরণে শুক্রবার বিকেল ৫ টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলো তারা। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৭ দিনের সময় চেয়েছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন