শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

বড় প্রকল্পে বিনিয়োগে আগ্রহী বিদেশিরা : বিএসইসি চেয়ারম্যান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৭:৫৪ পিএম

পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে সরকারি বড় বড় প্রকল্পে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে আগ্রহী। তারা আমাদের পাওয়ার প্লান্ট এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচারেও আসতে আগ্রহী। তবে তারা শর্টটামে নয়, লংটার্মে বিনিয়োগে আসতে চায়।

সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিএসইসি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। স¤প্রতি দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত রোড শো নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত বলেন, আমরা দুবাইয়ে রোড শো’তে আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরলাম, আমরা কোথায় আছি টোটাল তথ্য প্রবাহসহ। কিছু কিছু জায়গায় ওরা আমাদের অনেক প্রশ্ন করেছে, অনেক কিছু জানল এবং সামনাসামনি অনেক কিছু শোনার পরে ওরা ডিসিশন নিল এখন ওরা কি করবে। এখন আমাদের প্রত্যেক দিন মেইল আসে। তাদের মধ্যে কিছু কিছু মিউচ্যুয়াল ফান্ডে ইনভেস্ট করতে চায়। সেখানে কি কি কারেকশন দরকার সেটার বিষয়ে ওরা সাজেশন দেয়।

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের যে প্রজেক্টগুলো আসছে সেগুলোর সাইজ ৫০০ কোটি, হাজার কোটি, দুই হাজার কোটি, চার হাজার কোটি এরকম বিরাট বিরাট সাইজ। শুধু ইক্যুইটি মার্কেট দিয়ে এটার কোনো সলিউশন দেয়া সম্ভব না বলেই আমার বন্ডের কাজ করছি। বন্ডের মাধ্যমে একমাত্র আমাদের এই সলিউশন দেয়া সম্ভব। দেখা গেছে, বন্ডের কনভেনশনাল বন্ড এবং সুকুক মার্কেটে ট্রিলিয়ন ডলারের উপর আছে। এবং তারা বিনিয়োগের জায়গা খুঁজে পাচ্ছে না।

তিনি বলেন, আমরা যখন এই প্রেজেন্টেশনটা করলাম, প্রেজেন্টেশনের পরে এরা প্রত্যেকেই আমাদের সাথে আলাদা আলাদা মিটিং করেছে। প্রত্যেকটা বড় বড় ইনভেস্টর। এখানে ওয়ার্ল্ডের সব নাম করা যাদের সাত ট্রিলিয়ন, তিন ট্রিলিয়ন ফান্ড আছে। তারা ভালো জায়গা খুঁজছে কোথায় ইনভেস্ট করতে পারে। তাদের দেশে বিনিয়োগ করে তারা তেমন কোনো রিটার্ন পাচ্ছে না।

প্রফেসর শিবলী বলেন, বাংলাদেশের যে ভবিষ্যত আমরা দেখতে পাচ্ছি এবং বাংলাদেশের ক্যাপিটাল মার্কেটে রোল প্লে করা উচিৎ বলে আমরা মনে করি, সেখানে প্রচুর ব্যাংকি সেক্টর থেকে লোন নিয়ে মানুষ বড় বড় প্রজেক্ট লংটার্মে করছে। সেখানে সামনের দিনগুলোতে আমাদের বিরাট ভ‚মিকা রাখতে হবে। সেটা রাখতে গিয়ে আমরা দেখেছি ইক্যুইটি মার্কেটে আমরা যেই সাইজের ক্যাপিটাল ইনজেক্ট করি, এটা দিয়ে বাংলাদেশের সামনের দিনগুলোতে কাজ করবে না।

বাংলাদেশের প্রতি বিদেশীদের একটা নেগেটিভ ভাবমূর্তি ছিল উল্লেখ করে বিএসইসির চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত বলেন, আগে তারা আমাদের নিয়ে কেমন একটা ভাবতো। কিন্তু আমরা চেষ্টা করছি দেশের ঠিক পজিশনটা সবার কাছে তুলে ধরতে। সেজন্যই আমরা দুবাইতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে বাংলাদেশর সঠিক ডাটা তুলে ধরলাম। তারা আমাদের ডাটা দেখে অবাক হয়েছে। তারা জনতে চেয়েছে আমার ঠিক বলেছি কিনা, আমরা বলেছি এগুলো সব সঠিক। কোথাও তোমাদের সন্দেহ থাকলে গুগল সার্চ করে দেখতে পারো। তখন তারা বিশ্বাস করা শুরু করল।

এমনকি সা¤প্রতিক সময়ে দুবাইতে অবস্থানরত দুই তিন জন বাংলাদেশী ব্যবসায়ী বলল আমরা এখানে খুব সম্মান পাচ্ছি। যখন কোনো কাজে ব্যাংকে যাই, তারা আমাদের সম্মানের চোখে দেখে। আগের মতো তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে না। এভাবেই আমাদের ভাবমূর্তিটা আস্তে আস্তে উজ্জল হবে।

প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত বলেন, অথচ কিছু মানুষ বাংলাদেশ সম্পর্কে নেগেটিভ প্রপাগান্ডাই করে গেছে সারাজীবন এবং এখনো। আমাদের ভালোটা কেউ বলি না, খারাপটাই খুঁজে দেখি। এসব কারণে আমাদের এই রোড শোটা বাংলাদেশের সঠিক তথ্যচিত্র তুলে ধরার মাধ্যমে বিদেশে বাংলাদেশের অর্থনীতির যথার্থ তথ্যচিত্র উঠে এসেছে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা যদি বিভিন্ন জায়গায় অর্থাৎ আর্থিক কেন্দ্রগুলো (ফাইন্যান্সিয়াল হাব) দুবাই, লন্ডন, নিউ ইয়ার্ক, হংকং বা সিঙ্গাপুর যদি বাংলাদেশের সঠিক তথ্য মানুষের কাছে, বিয়োগকারীর কাছে, বিদেশের সংবাদপত্র বা বিদেশের ব্যবসায়ীদের সামনে তুলে ধরতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ সম্পর্কে যে একটা নেতিবাচক মনোভাব অনেক বছর ধরে রয়ে গেছে, সেখান থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারব। আমাদেরকে মানুষ সম্মানের চোখে দেখবে। এখনো তারা ভাবে আমরা বোধহয় মানুষের অনুদানের (ডোনেশন) উপর চলি। আমাদের যে এখন ডোনেশন লাগে না, সেটা তারা জানে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন