শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

দীঘিনালায় মিষ্টি পান চাষে সাফল্য

মো. ইব্রাহিম শেখ, খাগড়াছড়ি থেকে | প্রকাশের সময় : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

জুমের সাথে এবার পাহাড়ে চূড়ায় পান চাষ করে রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছে পাহাড়ি জনপদ খাগড়াছড়ির দীঘিনালার সীমানা পাড়া এলাকার অন্তত ৬০ জন পানচাষি। বিস্ময়কর হলেও পাহাড়ের চূড়ায় পান চাষ করে সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করেছেন তারা। খাগড়াছড়ির দীঘিনালার পাহাড়ের চূড়ায় প্রথমবারের মতো পানের আবাদ করেছে চাষিরা।
জানা যায়, এক সময় এসব পাহাড়ে কেবল জুম চাষ হলেও সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে এখন পাহাড়ের চূড়া বা ঢালুতে পানের বরজ দৃশ্যমান। বৃষ্টি শুরু হওয়ার পরপর পানের আবাদ শুরু করেন চাষিরা। প্রতি ২৫ শতক জমিতে পানের আবাদ করতে খরচ হয় প্রায় ৪০ হাজার টাকা। পানের দাম ভালো পাওয়া গেলে প্রায় দেড় লাখ টাকা লাভ হয়। এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় পান চাষিরা। দীঘিনালার সীমানা পাড়া এলাকায় পাহাড়ের ঢালুতে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি পান চাষ করেছেন নবীন ত্রিপুরা। সস্ত্রীক বরজে পানের যত্ম নিচ্ছেন এ প্রান্তিক কৃষক।
এক স্বজনের মাধ্যমে পাহাড়ের চূড়ায় পান চাষের কৌশল সর্ম্পকে ধারণা নেয়ার কথা জানিয়ে নবীন ত্রিপুরা জানান, জুম চাষের পাশাপাশি ২০ শতক জমিতে পান চাষ শুরু করেছি। মে মাসে পানের বরজে চারা রোপণ করার কথা জানিয়ে তিনি আরো জানান, ধীরে ধীরে পাহাড়ের চূড়ায় গড়ে তোলা পুরো বরজ সবুজ পানে ভরে গেছে। প্রতি সপ্তাহে ১শ’ বিড়া পান বিক্রি করেন এ চাষি। বিশ শতক জমির পানের বরজ থেকে অন্তত দেড় লাখ টাকার পান বিক্রি করতে পারবেন বলেও জানান নবীন ত্রিপুরা। পান চাষের আয় থেকে ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার পাশাপাশি সংসার চলে। পাহাড়ের চূড়ায় প্রথমবারে পান চাষ করেই সাফল্য পেয়েছেন বলে জানান প্রান্তিক চাষি নবীন ত্রিপুরার স্ত্রী।
একই এলাকার আরেক পানচাষি সাবেক ইউপি সদস্য হতেন ত্রিপুরা পান চাষে নানা সমস্যার কথা জানিয়ে বলেন, প্রথমবারের মতো পাহাড়ের ঢালুতে পানের বরজ গড়ে তুলেছি। কয়েকদিনের মধ্যে পান বিক্রি শুরু করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, অধিকাংশ পাহাড়ে চাষ হয় প্রথাগতভাবে। এসব জমির রেজিস্ট্রি না থাকায় চাষিরা কোনো ধরনের সরকারি ঋণ সহায়তা ও আর্থিক প্রণোদনা পায় না। কৃষি বিভাগ চাষিদের ঋণ সহায়তা দিলে পাহাড়ের কৃষকরা আর্থিক সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পারবে।
পাহাড়ের চূড়ায় পান চাষকে নতুন সম্ভাবনা হিসেবে দেখছেন দীঘিনালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওঙ্কার বিশ্বাস। কৃষকদের আর্থিক প্রণোদনা ও ঋণ সহায়তা প্রদানে ব্যাংকগুলোকে অনুরোধ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদেরকে ঋণ সহায়তার আওতায় আনতে পারলে সবুজ পাহাড়ে সোনা ফলবে। শুষ্ক মৌসুমে পানির সঙ্কট থাকার পরও পাহাড়ে পান চাষ করে চাষিরা লাভবান হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন