বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

দুই দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণে যোগাযোগ ও বন্দর অবকাঠামোর উন্নয়ন প্রয়োজন

ডিসিসিআই সভাপতিকে ভারতীয় হাইকমিশনার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৭:০৭ পিএম

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমান-এর সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীর দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সভা মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা চেম্বার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় ডিসিসিআই’র পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ভারতীয় হাইকমিশনারকে স্বাগত জানিয়ে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ভারত এবং বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৬ দশমিক ৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ভারতীয় বিনিয়োগ এসেছে প্রায় ৬৪৫ দশমিক ৫৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি দু’দেশের বাণিজ্য ব্যবধান কমাতে বাংলাদেশ হতে ওভেন গার্মেন্টস্, নিটওয়্যার, টেক্সটাইল ফাইবার, হোম টেক্সটাইল প্রভৃতি পণ্য আরো বেশি হারে আমদানির জন্য ভারতীয় উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, সরকার দেশে বিনিয়োগ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও নানাবিধ সুবিধা সম্বলিত বিনিয়োগ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে এবং এ ধরনের সুযোগ গ্রহণ করে অটোমোবাইল, তথ্য-প্রযুক্তি, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পুঁজিবাজার, ওষুধ, খাদ্য ও কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং হালকা প্রকৌশল প্রভৃতি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

রিজওয়ান রাহমান বলেন, ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশের প্রতি টন পাটজাত পণ্যে ভারতে রফতানির ক্ষেত্রে ১৯ থেকে ৩৫১ দশমিক ৭২ মার্কিন ডলারের এন্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। যার ফলে ভারতের বাজারে আমাদের পাট রফতানি কমে এসেছে এবং এ অবস্থা নিরসনে দ্রুততার সাথে আরোপিত শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেন।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, ২০২০ সাল হতে ভারত সরকারের চালুকৃত ‘কাস্টমস রুলস ২০২০’ আইনের কারণে ‘সাফটা’ ও ‘আপটা’-এর আওতায় ভারতের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা গ্রহণ হতে সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি তিনি পুনঃবিবেচনার আহ্বান জানান। রিজওয়ান রাহমান বলেন, ভারতের দিল্লীতে বাংলাদেশের রফতানিমুখী পণ্য সমুদ্র পথে পরিবহনের খরচ যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশসমূহের চেয়ে তুলনামূলক বেশি, যা দুদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হিসেবে উল্লেখ করেন ডিসিসিআই সভাপতি। একই সঙ্গে তিনি স্থলবন্দর সমূহের অবকাঠমো উন্নয়নে গুরুত্বারোপ করেন।

ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, বাংলাদেশে উৎপাদিত ভোজ্যতেল অথবা আমাদানিকৃত ভোজ্যতেলের কমপক্ষে ২০ শতাংশ মূল্য সংযোজন করা সম্ভব হলে, তা ভারতে রফতানি করতে কোন বাধা নেই। তিনি বলেন, বিশেষকরে বাংলাদেশের ভোগ্যপণ্য সহ অন্যান্য পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে বিএসটিআই’র সনদ-এর সত্যয়ন যেন ভারতে গ্রহণযোগ্য হয়, তা নিয়ে ভারত সরকার কাজ করছে এবং আশা-প্রকাশ করেন এ বিষয়ে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া সম্ভব হবে। হাইকমিশনার বলেন, সমুদ্র পথে ঢাকা হতে দিল্লীতে পণ্য পরিবহনের খরচ অত্যন্ত বেশি, যা কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং তা কমিয়ে আনতে দু’দেশের ব্যবসায়ী সমাজকে নিজ নিজ দেশের সরকারের সাথে আলোচনার পরামর্শ প্রদান করেন। তিনি বলেন, বেনাপোল এবং পেট্রপোলসহ বাংলাদেশের সকল স্থলবন্দর সমূহের ভৌত অবকাঠামো এবং প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধার উন্নয়ন আবশ্যক, কারণ এ ধরনের সেবার অনুপস্থিতির কারণে পণ্য পরিবহনে দীর্ঘসূত্রিতার ফলে ব্যবসা পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও ভারতীয় হাইকমিশনার পণ্য পরিবহনে রেলপথ ব্যয় সাশ্রয়ী হওয়ায়, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার পণ্য আমদানি-রফতানিতে রেল পথের ব্যবহার বাড়ানোর উপর জোরারোপ করেন এবং এ লক্ষ্যে বাংলাদেশের রেল ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বাড়ানোর আহŸান জানান, পাশাপাশি সিরাজগঞ্জে রেলওয়ের একটি কনন্টেইনার ডিপো স্থাপনেরও প্রস্তাব করেন। তিনি জানান, বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ নৌ-বন্দর ব্যবহারের ভারত অত্যন্ত আগ্রহী, তবে এ জন্য বিদ্যমান নৌ-পথের বেশকিছু জায়গা নাব্যতা বৃদ্ধিতে ড্রেজিং করা খুবই জরুরী এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট কিছু নীতিমালার সংষ্কার প্রয়োজন। কাঙ্খিত মাত্রায় ভারতীয় বিনিয়োগ বাংলাদেশে আকর্ষন এবং এদেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য তিনি দু’দেশের ব্যবসায়ীদের একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন