বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

দেশেই তৈরি করতে পারব যুদ্ধবিমান

বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার জন্য তার সরকারের দৃঢ় প্রত্যয়ের কথা জানিয়ে বলেছেন, এ বছর আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করব। সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের প্রাক্কালে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই নিজেদের দেশপ্রেমিক ও নির্ভীক হিসেবে গড়ে তুলতে। আমার একটা আকাক্সক্ষা আছে, এ বাংলাদেশেই একদিন আমরা যুদ্ধবিমান তৈরি করতে পারব। কাজেই এর ওপর গবেষণা করা এবং আমাদের আকাশসীমা সংরক্ষিত রাখার কাজটা আমরা নিজেরাও যাতে করতে পারি, সেইভাবে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।

গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ১১ স্কোয়াড্রন এবং ২১ স্কোয়াড্রনকে জাতীয় পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যশোরের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমানবাহিনী ঘাঁটির সঙ্গে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিমানবাহিনী প্রধান মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদানের লক্ষ্যে ইউনিট কমান্ডকে জাতীয় পতাকা হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন। এ সময় তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হয়। বিমানবাহিনীর প্রধান অনুষ্ঠানে তাকে ধন্যবাদ জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বিশ্বায়নের এ যুগে যেকোনো দেশের জন্য একটি পেশাদার বিমানবাহিনী অপরিহার্য। তিনি একটি আধুনিক ও চৌকস বিমানবাহিনী গড়ে তোলায় তার সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, এ জন্য ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনীতির গতি স্থবির হয়ে গেছে। সরকার সীমিত সামর্থ্য নিয়েই এ অর্থনীতিকে গতিশীল রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে অর্থনীতির চাকা সচল রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে প্রতিটি গৃহহারা মানুষ ঘর পাবে, প্রতি ঘরে বিদ্যুতের আলো জ্বলবে এবং সবাই উন্নত জীবন পাবে, এটাই আমাদের উপহার হবে। করোনার টিকা নিলেও মাস্ক ব্যবহার করা, হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো বিষয়গুলো মেনে চলতে দেশবাসীর প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
তিনি আরো বলেন, জাতির পিতার সুদূরপ্রসারী কর্মপরিকল্পনা ও দূরদৃষ্টিকে সামনে রেখেই তার সরকার ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করেছে। ইতোমধ্যে তার সরকার বিমানবাহিনীতে সংযোজন করেছে মিগ-২৯সহ বিভিন্ন ধরনের ফাইটার বিমান, সর্বাধুনিক অ্যাভিওনিক্স-সমৃদ্ধ পরিবহন বিমান, ইউটিলিটি হেলিকপ্টার, যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ বিমান, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এয়ার ডিফেন্স রাডার, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, নতুন নতুন ঘাঁটিট, ইউনিট ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে উৎকর্ষ আনতে বিমানবাহিনী একাডেমির জন্য এ ঘাঁটিতে নির্মাণ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স। মহাকাশ গবেষণা, দেশের বিমানবাহিনী এবং বেসামরিক বিমানকে দ্রুত এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়।

প্রধানমন্ত্রী ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড পাওয়া ইউনিট দুটির সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, পতাকা হলো জাতির স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, সম্মান ও মর্যাদার প্রতীক। তাই পতাকার মান রক্ষা করা সামরিক বাহিনীর সব সদস্যের পবিত্র দায়িত্ব। জাতীয় পতাকা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করা যেকোনো ইউনিটের জন্য একটি বিরল সম্মান ও গৌরবের বিষয়। ১১ স্কোয়াড্রন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিমানবাহিনীর ক্যাডেটদের মৌলিক উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ প্রদানের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সুচারুভাবে সম্পন্ন করে আসছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলোর সামরিক বৈমানিকদেরও এ স্কোয়াড্রন সাফল্যের সঙ্গে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ স্কোয়াড্রন বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সম্মুখসারির নিবেদিত আক্রমণাত্মক স্কোয়াড্রন। এ স্কোয়াড্রন এফটি-৬ এবং এ-৫ যুদ্ধবিমান পরিচালনার মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। পরবর্তী সময়ে ২০১৫ সালে এ স্কোয়াড্রনে সংযুক্ত হয় ৪র্থ প্রজন্মের ইয়াক-১৩০ কম্ব্যাট ট্রেইনার বিমান, যা ২১ স্কোয়াড্রনকে আকাশসীমা প্রতিরক্ষার দায়িত্বে আরও শক্তিশালী ও নির্ভরযোগ্য করে তোলে। বর্তমানে এ স্কোয়াড্রন আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা শনাক্তকরণ অঞ্চলের সর্বোচ্চ শেষ সীমানায় পর্যবেক্ষণ মিশন পরিচালনা করে, যা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
ইব্রাহিম ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১:২৪ এএম says : 0
ইনশা আল্লাহ
Total Reply(0)
Harunur Rashid ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১:৪৭ এএম says : 0
Well said, madam PM , congratulation !
Total Reply(0)
Mehedi Hasan Munna ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৮:৪১ এএম says : 0
ইনশায়াল্লাহ, আমরাও আশাবাদি হতে চাই।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন