৭ বছর ধরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী হিসেবে ভূমিকা রাখায় নানান বিতর্কের মুখে পড়ে জাতীয় পার্টি। এরশাদের গড়া দলটিকে মানুষ আওয়ামী লীগের ‘নাচের পুতুল’ হিসেবে অবিহিত করে সাধারণ মানুষ। এ অবস্থায় কয়েকদিন আগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ঘোষণা দেন তার দল আর কোনো জোট-মহাজোটে নেই। এ ঘোষণার কয়েকদিন পর গতকাল নিজের ৭৩তম জন্মদিনের অনুষ্ঠানে জিএম কাদের বলেছেন, জাতীয় পার্টি রাজনীতির মাঠে পরগাছা হয়ে থাকবে না। অস্তিত্বহীন রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতীয় পার্টি কখনোই বিলীন হবে না। জাতীয় পার্টির অস্তিত্ব আছে এবং নিজস্ব রাজনীতি আছে। নিজস্ব রাজনীতি নিয়ে জাতীয় পার্টি সামনে এগিয়ে যাবে।
গতকাল বুধবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে জিএম কাদেরের ৭৩তম জন্মদিন পালন করা হয়। এ সময় জিএম কাদের বলেন, গণমানুষের মাঝে জাতীয় পার্টির গ্রহণযোগ্যতা আছে। তাই দেশ ও জনগণের স্বার্থে কথা বলবে জাতীয় পার্টি। কোনও ভয়ভীতির কাছে জাতীয় পার্টি মাথা নত করবে না।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে জিএম কাদের বলেন, দেশ ও মানুষের কথা বলতে গিয়ে যদি অত্যাচার ও নির্যাতন সইতে হয়, সেজন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। প্রয়োজনে লাঠি ও গুলির সামনে সাহস নিয়ে দাঁড়াতে হবে। নির্যাতন এলে তা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত থাকতে হবে। অস্তিত্বহীন বা শেকড়হীন রাজনৈতিক দলকে কোনও দলই মূল্যায়ন করবে না। রাজনীতিতে পরগাছা বা শেকড়হীন দলকে মানুষ ঘৃণা করে।
জি এম কাদের বলেন, ঘরে বসে হাতি-ঘোড়া মারার দিন শেষ হয়ে গেছে। এখন রাজনীতির মতো রাজনীতি করবে জাতীয় পার্টি। ১৯৯১ সালের পর থেকে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে একনায়কতন্ত্র চলছে। দেশের প্রধান তিনটি স্তম্ভের মধ্যে নির্বাহী বিভাগ, আইন সভা ও বিচার বিভাগের নিম্ন আদালত এক ব্যক্তির হাতে। তাছাড়া উচ্চ আদালতের নিয়োগও প্রেসিডেন্টের মাধ্যমে তার হাতেই। তাই দেশের সব ক্ষমতাই এখন এক ব্যক্তি হাতে। তিনি যাই বলেন তার বাইরে কিছুই হয় না। এটাকে কখনোই গণতন্ত্র বলা যায় না। এক ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা থাকার কারণে ক্ষমতার অপব্যবহার হচ্ছে। এটাকেই বলে স্বৈরতন্ত্র। সাধারণ মানুষের স্বার্থ ভুলণ্ঠিত করে দুর্ণীতি ও দলীয়করণ চলছে। সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা অঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন দলের মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু কো চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদার, মুজিবুল হক চুন্নু, এডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, মীর আব্দুস সবুর আসুদ প্রমূখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন