শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

জনসনের টিকার এক ডোজই যথেষ্ট

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০৭ এএম

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর এক ডোজের ভ্যাকসিন তৈরি করেছে জনসন অ্যান্ড জনসন। তাছাড়া এই ভ্যাকসিন ফাইজার বা মডার্নার মতো ফ্রিজারে খুব কম তাপমাত্রায় রাখার দরকার হয় না। সাধারণ ফ্রিজে রাখলেই হয়। ফলে এই টিকা দিতে খরচও কম হবে। এদিকে এক গবেষণায় জানা গেছে, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ফাইজার ও জার্মানির বায়োএনটেকের তৈরি ভ্যাকসিন বাস্তাবেও ৯৪ শতাংশ কার্যকর।

জনসন অ্যান্ড জনসনের দাবি, পরীক্ষায় দেখা গেছে, তাদের টিকা খুবই কার্যকর। খুব ক্ষতিকর করোনা ভাইরাসকেও তা ঠেকাতে সক্ষম। মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) প্রকাশ করা তথ্যও এই দাবিকে সমর্থন করছে। যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই ভ্যাকসিন খুব খারাপ ধরনের স্ট্রেইনের মোকাবিলাও করতে পারে। নতুন স্ট্রেইনগুলির ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের সাফল্যের হার ৮৫ শতাংশ। তবে সাধারণ করোনা ঠেকাবার ক্ষেত্রে সাফল্যের হার ৬৬ শতাংশ। গত ২৮ দিন ধরে চলা পরীক্ষায় এই ভ্যাকসিনের বিশেষ কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। কাউকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়নি। এই অবস্থায় শুক্রবার বিশেষজ্ঞরা বৈঠক করে ঠিক করবেন, যুক্তরাষ্ট্রে জনসন অ্যান্ড জনসনের ভ্যাকসিন চালুর অনুমতি দেয়া হবে কি না।

পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এক ডোজের এই টিকাও বেশ নিরাপদ ও কার্যকর। এই স্বীকৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রে জনসনের এ টিকার অনুমোদন পাওয়ার পথ প্রশস্ত হবে। সম্ভবত কয়েক দিনের মধ্যে তা অনুমোদন পাবে। সে ক্ষেত্রে এটি হবে দেশটিতে অনুমোদন পাওয়া করোনার তৃতীয় টিকা। ফাইজার ও মডার্নার টিকার অর্থসাশ্রয়ী বিকল্প হবে এটি। আর তা সংরক্ষণ করা যাবে রেফ্রিজারেটরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায়; প্রয়োজন পড়বে না ফ্রিজারের।

হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অনুমোদন পেয়ে গেলে আগামী সপ্তাহে জনসন অ্যান্ড জনসনের ৩০ লাখ ভ্যাকসিন দেয়া হবে। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, মার্চের মধ্যে দুই কোটি ডোজ তৈরি হয়ে যাবে। আর আমেরিকার সঙ্গে আগাম চুক্তি অনুসারে জুনের মধ্যে দশ কোটি ডোজ সরবরাহ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে তারা এগোচ্ছেন।

এদিকে, এখন পর্যন্ত করোনা ভ্যাকসিনগুলোর কার্যকরিতা নিয়ে যত তথ্য রয়েছে তা সবই নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে চালানো ট্রায়াল থেকে পাওয়া। তবে এবার বাস্তবেও কোন ভ্যাকসিনের কার্যকরিতার স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। ইসরাইলে বিশ্বের সবথেকে সফল ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলার পরে করা এই গবেষণায় জানা গেছে, সকল বয়সীদের জন্যেই ফাইজারের ভ্যাকসিন ৯৪ শতাংশ সংক্রমণ কমিয়ে আনছে দেশটিতে। ট্রায়ালের বাইরে এই প্রথমবারের মতো কোন ভ্যাকসিনের কার্যকরিতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই গবেষণা চালানো হয় ১২ লাখ মানুষের দেয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে। গবেষণা দলের সদস্য র‌্যান বালিস বলেন, বাস্তবে অনেক কিছুই নিয়ন্ত্রণ করা হয়না এবং এখানে প্রচুর বৃদ্ধ ও অসুস্থদের ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে। ফলে আমরা আশঙ্কা করছিলাম, ট্রায়ালে যে সফলতা পাওয়া গেছে তা এখানে পাওয়া যাবে না। তবে এখন দেখা যাচ্ছে ভ্যাকসিন আসলেই কার্যকরি। ভ্যাকসিন ট্রায়ালের মতোই কার্যকরি বাস্তব দুনিয়ায়।

নাগরিকদের করোনা থেকে বাঁচাতে সবথেকে এগিয়ে আছে ইসরাইল। এরইমধ্যে দেশের বেশিরভাগ মানুষ ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়েছেন। গত বুধবার দেশটি নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, ফাইজারের ভ্যাকসিনের এক ডোজ নেয়ার দুই সপ্তাহ পরই তা করোনার সংক্রমণ ৫৭ শতাংশ কমিয়ে আনে। গবেষণটি যৌথভাবে করেছে হার্ভার্ড টি এইচ, চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেলথ ও হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল। সহযোগিতায় ছিল বোস্টন চিলড্রেনস হসপিটাল। এই গবেষণায় আরেকটি বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, ফাইজারের ভ্যাকসিন ব্রিটেনে ছড়িয়ে পরা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধেও কার্যকরি। তবে গবেষকরা এখনো এর কার্যকরিতার মাত্রা প্রকাশ করেননি। সূত্র : সিএনএন, রয়টার্স।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন