পার্বত্য বান্দরবান জেলার দুর্গম চিম্বুকপাড়া এলাকায় পাহাড়ী জঙ্গলের বন্য ভালুকের আক্রমণে গুরুতর আহত হয় মুরং উপজাতি শিশু মঙ্গোলীও (৬)। সুচিকিৎসায় তাকে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার দুপুরে দুর্গম সীমান্তবর্তী চিম্বুকপাড়া থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ২৪ পদাতিক ডিভিশনের উদ্যোগে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার যোগে তাকে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে আনা হয়।
আহত মঙ্গোলীও মুরংয়ের বাবা রিং রাং রাও জানান, শিশুটি চিম্বুক পাড়া জঙ্গলের পাশে খেলছিল। হঠাৎ একটি বৃদ্ধ ভালুক আক্রমণ করে তাকে।
শিশুটিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে তার দাদা ইয়ং ওয়াই মুরং (৪৮)। তখন ভালুকটি দুজনকেই মারাত্মকভাবে আহত করে।
এরপর আহত দুজনকে নিকটস্থ সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তাৎক্ষণিক তাদেরকে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে আসে।
সিএমএইচ চট্টগ্রাম সূত্রে জানা গেছে, দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করে সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি এ দুজনকে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে আসার নির্দেশ দেন। নির্দেশ পেয়েই দুপুর আড়াইটার দিকে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার যোগে চট্টগ্রাম ক্যান্টমেন্টে আনা হয়।
আহত মঙ্গোলীও মুরংয়ের বাবা রিং রাং রাও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর মানবিক কর্মকাণ্ডে পাহাড়ের দুর্গম জনপদের মানুষগুলো নতুনভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছে।
তিনি বলেন, তারা যেই গ্রামে বসবাস করছেন সেখান থেকে গাড়ী চলে এমন কোনো সড়কে যেতে হলে টানা ৫ ঘন্টা পায়ে হেঁটে যেতে হয়। নেই কোনো সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। ঝিরি-ঝরণা, খাল ও গিরিপথ পাড়ি দিয়ে হাট-বাজারের দেখা পান তারা। জীবন-জীবিকার তাগিদে ওই পাহাড়ি জনপদে বসবাস করছেন তারা।
জানাগেছে, এরআগে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বিজিবির যৌথ প্রচেষ্টায় গত ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ইং সোনাপতি চাকমা এবং ২৯ এপ্রিল ২০২০ইং জতনী তঞ্চংগ্যা নামে দুইজন মৃত্যুপথযাত্রী উপজাতি প্রসূতি নারীকে হেলিকপ্টার যোগে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়। পরে তারা সুস্থ ফুটফুটে বাচ্চা নিয়ে বাড়ি ফিরেন। বেঁচে যায় দুই উপজাতীয় নবজাতক ও মায়ের জীবন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন