সেলিম আহমেদ, সাভার থেকে
সাভার উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যহারের অভিযোগ তুলেছেন খোদ অফিসের কর্মকর্তারাই। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করতে দেখে তারা কাজ বন্ধ রাখতে বললেও নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান রাতের আঁধারে গোপনে কাজ করছে বলেও তাদের অভিযোগ। সরেজমিন সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশে অবস্থিত উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে গিয়ে দেখা যায় নতুন নির্মাণাধীন দ্বিতল ভবনটিতে নিম্নমানের ইট, বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। কাঠের দরজাগুলোর নিম্নমানের (রেডিমেট) লাগানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ এ দরজা লাগাতে নিষেধ করলেও গোপনে লাগিয়ে দিয়েছে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ‘ইরান কনস্ট্রাকশ’ এর দায়িত্বরত কর্মচারীরা। এনিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে প্রাণিসম্পদ অফিসের কর্মকর্তাদের মধ্যে। এছাড়া মূল ফটক নির্মাণে যে মালামাল ব্যবহার করার কথা ছিল তা না করে পুরাতন ফটকের পিলারের উপর থেকেই কাজ করতে দেখা গেছে নির্মাণ শ্রমিকদের। এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামসহ কত টাকা কাজ, কোন প্রকল্পের কাজ তা লেখা সাইনবোর্ড টাঙ্গানো থাকার কথা থাকলেও খুঁজে পাওয়া যায়নি সাইনবোর্ডটি। তবে দায়িত্বরত শ্রমিকরা জানায়, সাইবোর্ড লাগানো ছিল হয়তো কেউ উঠিয়ে ফেলে দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে জানান, ভবন নির্মাণে যে সকল নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে তা খুবই নিম্নমানের। এক নম্বর ইট ব্যবহারের কথা থাকলেও সেখানে ব্যবহার করা হচ্ছে গৌরা ইট। নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের ফলে আমারা একাধিকবার বাধা দিয়ে কাজ বন্ধ রেখেছিলাম। কিন্তু রাতের আঁধারে তারা কাজ করে ফেলছে। প্রায় এক কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনটি নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের ফলে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার আশঙ্কা প্রাকাশ করছেন এ কর্মকর্তা। তিনি আরো বলেন, মূল ফটক নির্মাণে যে অনিয়ম করা হয়েছে তা প্রকাশ পাওয়ায় গত বুধবার তা ভেঙে পুনরায় নির্মাণ করছে। তাছাড়া এ ভবন নির্মাণ ৩০ জুনের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও এখনও কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ প্রসঙ্গে জানতে সাভার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী ম-লের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি কয়েকদিন ধরে ঢাকায় ট্রেনিংয়ে ছিলাম। বর্তমানে সেখানে কি হচ্ছে তা বলতে পারছি না। তবে প্রকল্প পরিচালকের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ভবন নির্মাণ প্রসঙ্গে জানতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক আরিফুল ইসলাম শাহীনের মুঠফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি। এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইরান কনস্ট্রাকশনের দায়িত্বরত নির্মাণ কাজের পরিচালনাকারী টুটুল হাসেন বলেন, প্রতিষ্ঠানটি আওয়ামী লীগ নেতার। এখানে নিম্নমানের সামগ্রী নয়, ভালো জিনিস দিয়েই কাজ করা হচ্ছে। আলাপের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, আমাদের যেভাবে দেখানো হচ্ছে, যে মালামাল দেয়া হচ্ছে তা দিয়েই কাজ চলছে। তবে মূল ফটক ভাঙা প্রসঙ্গে বলেন, ডিজাইন বদলের কারণেই ভেঙে নতুন করে করা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন