বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

জাতিসঙ্ঘের মূল্যায়নে সরকারের সাফল্য প্রতিফলিত হয়েছে

স্বল্পোন্নত দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণের স্বীকৃতিতে ডিসিসিআই’র অভিনন্দন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

জাতিসংঘের ডেভেলপমেন্ট পলিসি (ইউএন সিডিপি) কমিটি তাদের দ্বিতীয় পর্যালোচনায় বাংলাদেশকে স্বল্পন্নোত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুপারিশ করেছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ৩টি মূল সূচক, মাথাপিছু আয় (১২৩০ মার্কিন ডলারের বিপরীতে ১৮২৭ মার্কিন ডলার), মানব সম্পদ (৬৬ পয়েন্ট এর বিপরীতে ৭৫ দশমিক ৩ পয়েন্ট) এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা (৩২ পয়েন্ট এর চেয়ে কম ২৭ পয়েন্ট) সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির এ আনন্দঘন মুহূর্তে এমন একটি সুখবর আসা সত্যিই সম্মানজনক বলে মনে করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে গত ১ দশকে সামাজিক ও অর্থনীতির সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যুগান্তকারী অগ্রগতি সাধন করেছে। বিশেষ করে, কোভিড-১৯ মহামারী সময়কালেও বর্তমান সরকার দেশের মানুষের জীবন-জীবিকা ও অর্থনীতির মধ্যকার সমন্বয় খুব সাফলতার সাথে সমন্বয় করতে পেরেছে। বর্তমান করোনা মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসা-বাণিজ্যের কার্যক্রমে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে অত্যন্ত সময়পোযোগী প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে এবং বেশ সফলভাবে এর বাস্তবায়ন করেছে। ইউএন সিডিপি কমিটি দ্বিতীয় মূল্যায়নে বাংলাদেশে ইতোমধ্যে অর্জিত ব্যপক উন্নয়ন কর্মকান্ড, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বির্নিমানের প্রত্যয়ের সাথে সাথে বর্তমান সরকার গৃহীত ভিশনসমূহের সাফল্য প্রতিফলিত হয়েছে বলে ঢাকা চেম্বার মনে করে।

স্বল্পন্নোত ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে প্রতিটি দেশকেই বেশকিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয় এবং বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তা ব্যতিক্রম নয়। এলডিসিভুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ২০২৬ সাল পর্যন্ত ইউরোপসহ বেশ কিছু দেশে পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পাবে, তবে এলডিসি হতে উত্তরণের পর বাংলাদেশকে আইপিআর এবং ট্রিপস চুক্তির আওতায় শর্তাবলী ও শিল্পের কমপ্লায়েন্সের মেনে চলার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। উপরন্তু মধ্যম আয়ের দেশে হিসেবে রফতানি বাজারে অন্যান্য মধ্যম আয়ের দেশসমূহের সাথে প্রতিযেগিতার মুখোমুখি হতে হবে। পাশাপাশি উন্নত দেশগুলো থেকে প্রাপ্ত অগ্রাধিকার ও বিশেষ সুবিধা কমে আসবে, রপ্তানির বাজারে সম প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাবে, বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি হ্রাস পাবে এবং ছোট ছোট স্থানীয় শিল্পে সহায়তা কমে আসতে পারে।

রফতানিমুখী উৎপাদন খাতের এসকল চ্যালেঞ্জ থাকা সত্বেও এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের ফলে আমাদের উৎপাদন খাতেও নতুন সম্ভাবনার তৈরি হবে। এলডিসি হতে বাংলাদেশের সফল উত্তরণের পর বাংলাদেশ স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা পেতে পারে, ক্রেডিট রেটিং-এ উন্নতি সাধিত হবে, বেসরকারি খাত আরো প্রতিযোগী হতে পারবে, উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে এবং কমপ্লায়েস ইস্যুতে বাংলাদেশের আরো দক্ষতা বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হবে। উপরন্তু, এ অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের সাথে বাণিজ্য সংলাপসমূহে নিজেদের অবস্থান আরো সুদৃঢ় করতে পারবে এবং সর্বোপরি শক্তিশালী আইপিআর অবকাঠামো গড়ে তুলতে পারলে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষনে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা ও আগ্রহ বাড়বে।

মধ্যম আয়ের দেশে উত্তোরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায়, ঢাকা চেম্বার বাণিজ্যিকভাবে সম্ভাবনাময় দেশেসমূহের দ্বি-পাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি, অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি অথবা আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর, বাণিজ্য মধ্যস্থতায় দক্ষতা অর্জন, ট্রিপস চুক্তির শর্তাবলী বাস্তবায়নের প্রস্তুতি গ্রহণ, হাই ভেলু প্রডাক্ট ডিজাইন ও ইনোভেশন সেন্টার স্থাপন, আন্তর্জাতিক মান স্বীকৃতি গ্রহণে সহায়তা করা, দক্ষিণপূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকার বাজার অন্বেষণ, এফডিআই আকর্ষণে সংশ্লিষ্ট নীতিমালা ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, রাজস্ব কাঠামোর অটোমেশন ও আধুনিকায়ন, কর-জিডিপি’র অনুপাত বৃদ্ধি, সাপ্লাই চেইন ও লজিস্টিক ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। আর এগুলো আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দেশের স্বার্থ সুরক্ষায় সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন