বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় পাঁচ হাজার ট্রাক

পেট্রাপোল বন্দর, চাঁদা আদায়ের অভিযোগ

বেনাপোল অফিস : | প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

বেনাপোল বন্দরের ওপারে ভারতের পেট্রাপোলে চাঁদা আদায় ও আমদানিতে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে ৫ হাজার ট্রাক। এতে সঠিক সময়ে পণ্য আমদানি করতে না পারায় ক্ষতির মুখে পড়েছে আমদানিকারকরা। প্রভাব পড়ছে দু’দেশের আমদানি রফতানি বাণিজ্যে। ব্যাহত হচ্ছে রাজস্ব আদায়।

অভিযোগ রয়েছে, বনগাঁও পৌরসভার মেয়র শঙ্কর আঢ্য ডাকুর নেতৃত্বে তার লোকজন প্রতিটি পণ্য বোঝাই ট্রাক থেকে প্রতিদিন ২ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করছে। পণ্যবোঝাই একটি ট্রাক ২০ দিন ওপারে আটকে থাকলে তাকে ৪০ হাজার রুপি পরিশোধ করতে হচ্ছে।

এছাড়া পেট্রাপোলে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা ইচ্ছাকৃতভাবে তৈরি করে ট্রাক থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। আমদানিকারক, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টসহ অন্যন্য ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানিতে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি কমিয়ে দিয়েছে। ফলে আমদানিকারকরা মোটা অঙ্কের আর্থিক লোকসানে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছে। সূত্র জানায়, এ বন্দর দিয়ে প্রতিবছর ভারতের সাথে ২৪ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য সম্পন্ন হয়। প্রতিদিন ৭ থেকে ৮শ’ ট্রাক পণ্য আমাদনি হতো ভারতে থেকে। এতে বছরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় করে থাকে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে তার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ থেকে ৪শ’ ট্রাকে। ওপারে বনগাঁও পৌরসভার মেয়র শংকর আড্য ডাকু কালিতলা পার্কিং নামে একটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন পার্ক তৈরি করে সেখানে আমদানিবোঝাই ট্রাক গুলো জোর করে প্রবেশ করানো হচ্ছে। প্রতি ট্রাক থেকে ড্রামারেজ বাবদ ২ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। বর্তমানে একটি ট্রাক বাংলাদেশে আমদানি হতে ১৫ থেকে ২০ দিন করে সময় লাগছে। যার পুরো চাঁদার অর্থ বাংলাদেশি আমদানিকারকদের পরিশোধ করতে হচ্ছে। ফলে মোটা অঙ্কের লোকসানের কথা ভেবে অনেকেই বেনাপোল বন্দর থেকে মুখ ঘুড়িয়ে নিচ্ছে অনেকেই। বেনাপোল কাস্টম ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়াডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা জানান, দেশের ৭৫ ভাগ শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচা মালামালের পাশাপাশি বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য আসে এই বন্দর দিয়ে। ওপারে পণ্য আমদানিতে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানের উপর এর প্রভাব পড়ছে। পাশাপাশি রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়ছে। গত ২ মার্চ সকালে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমান আমদানিকৃত ট্রাকের সংখ্যা বৃদ্ধি ও রাজস্ব আয় বাড়াতে ভারতীয় ব্যবসায়ী ও কাস্টমস এর সাথে বৈঠক করেছেন।

বেনাপোল কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, বেনাপোলের ওপারে এখন ভয়াবহ পণ্যজট লেগে রয়েছে। প্রায় ৫ হাজার ট্রাক আমদানি পণ্য নিয়ে বন্দরের ওপারে অপেক্ষায় রয়েছে। পেট্রাপোলের কালিতলা পার্কিং থেকে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করতে এখন প্রায় ১৫ দিন লেগে যাচ্ছে। ফলে আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের যেমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, তেমনি বেড়ে যাচ্ছে আমদানি ব্যয়।

ভারত বাংলাদেশ চেস্বার অব কমার্সের ডাইরেক্টর মতিয়ার রহমান জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে স্থলপথে পণ্য আমদানি করতে বেনাপোলের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। বনগাঁও পৌরসভার মেয়র শঙ্কর আঢ্য ডাকুর নেতৃত্বে তার লোকজন প্রতিটি পণ্য বোঝাই ট্রাক থেকে প্রতিদিন ২ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করছে। পণ্যবোঝাই একটি ট্রাক ২০ দিন ওপারে আটকে থাকলে তাকে ৪০ হাজার রুপি পরিশোধ করতে হচ্ছে। ফলে আমদানিকারকরা মোটা অঙ্কের আর্থিক লোকসানে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছে।

বেনাপোল কাস্টম ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়াডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, দেশের ৭৫ ভাগ শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচা মালামালের পাশাপাশি বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য আসে এই বন্দর দিয়ে। পণ্য আমদানিতে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানের উপর এর প্রভাব পড়ছে। পাশাপাশি রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়ছে।

বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মো. আজিজুর রহমান জানান, ভারতীয় প্রেটাপোল কালিতলা পার্কিং এ বর্তমানে ৫৫০০ পণ্য বোঝাই ট্রাক আটাকে আাছে । বিষয়টি সমাধানে আমরা ভারতীয় কাস্টমস ও ব্যবসায়ীদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করে যাচ্ছি।

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন