বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

স্পেশাল ম্যারেজ রেজিস্ট্রার অঞ্জনা রানীকে হাইকোর্টে তলব

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

স্পেশাল ম্যারেজ রেজিস্ট্রার অঞ্জনা রানী ভৌমিককে তলব করেছেন হাইকোর্ট। বিমানের পাইলট মরহুম মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের দ্বিতীয় স্ত্রী দাবিদার আঞ্জু কাপুরের সম্পত্তি দখল থেকে উদ্ভুত মামলায় মতামত জানতে গতকাল মঙ্গলবার তাকে তলব করা হয়েছে। বিচারপতি মো.নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ডিভিশন বেঞ্চে আগামি ৮ মার্চ তাকে হাজির হতে হবে। আঞ্জু কাপুর একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভারতীয় নাগরিক। তাকে বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ বিয়ে করেছেন কি না- সেই বিয়ে নিবন্ধন সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখাতেই অঞ্জনা রানী ভৌমিককে তলব করেন আদালত।

ওই বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক জানান, রাজধানীর গুলশানে ১০ কাঠা জমির ওপর নির্মিত বাড়ির দখলদারিত্ব নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ওই বাড়ির মালিক মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ। তিনি ছিলেন পাইলট। মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ গতবছর ১০ অক্টোবর মারা যান। মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশ দুই মেয়ে মুশফিকা মোস্তফা ও মোবাশ্বেরা মোস্তফা ওই বাড়ির সামনে অবস্থান নেন। টানা দুই দিন তারা বাড়িটির সামনে বসে থাকেন। বাড়িটি দখল করে রেখেছেন তার বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবিদার আঞ্জু কাপুর । আঞ্জু কিছুতেই ওই বাড়িতে মুশফিকা-মোবাশ্বেরাকে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না। মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ সংগীতশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদের সহোদর। ফেরদৌস ওয়াহিদ ছাড়া বাংলাদেশে আর কেউ বসবাস করেন না।

ওই সময় মুশফিকা মোস্তফা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ১৯৮৪ সালে তার বাবা মাকে নিয়ে গুলশানের এই বাসাতেই সংসার শুরু করেছিলেন। তাদের জন্ম এই বাড়িতে। ২০০৫ সালে তাদের মা-বাবার বিচ্ছেদ হয়। পরে আঞ্জু কাপুর নামের এক ভারতীয় নারীকে তাদের বাবা বিয়ে করেন। তিনি একাই এখন এই বাড়ির ভোগদখল করছেন। অন্যদিকে আঞ্জু কাপুর দাবি করেন, মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ বাড়িটি তার নামে উইল করে গেছেন। বাড়ির সামনের রাস্তায় মুশফিকা- মোবাশ্বেরার অবস্থান করার বিষয়টি আমলে নিয়ে গতবছর ২৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃ প্রণোদিত হয়ে আদেশ দেন। আদেশে অনতিবিলম্বে তাদের বাবা মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের গুলশান-২ এর ৯৫ নম্বর সড়কের বাসায় প্রবেশ নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে রাতেই ওই বাড়িতে তাদের প্রবেশ ও অবস্থান নিশ্চিত করতে বলেন। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসারকে টেলিফোনে এ বিষয়ক অগ্রগতি অবহিত করতে গুলশান থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। এ ধারাবাহিকতায় গতবছর ৩ ডিসেম্বর জগলুল ওয়াহিদের তার বিদেশী ও বিধর্মী স্ত্রীকে বাড়ি উইল করা নিয়ে আইনগত বিষয়ে মতামত জানতে চার অ্যামিকাস কিউরি (আদালত সহায়ক আইনজীবী) নিয়োগ দেন। তারা হলেন, অ্যাডভোকেট এ এফ হাসান আরিফ, কামরুল হক সিদ্দিকী, কামাল-উল-আলম ও অ্যাডভোকেট মো. নূরুল আমিন। পরে আদালতের স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট ১৮৭২ অনুসারে কোনো মুসলিম পুরুষ কোনো বিদেশী হিন্দু নারীকে বিয়ে করতে পারেন কি না এবং বিবাহিত স্ত্রী হিসাবে তাকে দেওয়া জগলুল ওয়াহিদের সম্পূর্ণ বাড়ি উইল করার আইনগত ভিত্তি রয়েছে কিনা-মতামত দেন অ্যামিকাস কিউরিগণ। আদালতে মুশফিকা- মোবাশ্বেরার শুনানি করেন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পীস ফর বাংলাদেশ’র চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ শুনানি করেন। মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদে দ্বিতীয় স্ত্রী দাবিদার আঞ্জু কাপুরের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাসুদ আর সোবহান। শুনানির এ পর্যায়ে আদালত স্পেশাল নিকাহ রেজিস্ট্রার মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ এবং আঞ্জু কাপুরের মধ্যকার বিয়ে সংক্রান্ত নথিসহ হাজির হতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, ঢাকার স্পেশাল ম্যারিজ রেজিস্ট্রার হচ্ছেন অঞ্জনা রানী ভৌমিক। তিনি হিন্দু রীতিতে সম্পাদিত বিয়ের নিবন্ধন করেন।

এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ ইনকিলাবকে বলেন, জগলুল ওয়াহিদের তার বিদেশী হিন্দু স্ত্রীকে বিয়ে সংক্রান্ত নথিপত্র দেখতে স্পেশাল ম্যারিজ রেজিস্ট্রারকে তলব করা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন