শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বরিশালে শিক্ষানবিশ আইনজীবী হত্যায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০২১, ৭:৩২ পিএম

বরিশাল মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের নির্যাতনে শিক্ষানবিশ আইনজীবী রেজাউল করিম রেজার মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলাটি সম্পর্কে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের ডিভিশন বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছেন বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।

এর আগে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির গত ৮ ফেব্রুয়ারী ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১ এর (ক) ধারার ক্ষমতাবলে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। আবেদনকারী আইনজীবী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘আইনে যেহেতু সুযোগ আছে, সেহেতু আবেদনকারী সেই সুযোগ পেতে পারেন বলে আদালত বলেছে’ । এ কারনে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেয়া হলো। হাইকোর্টে আবেদনের পক্ষে মোহাম্মদ শিশির মনির ও রাষ্ট্রপক্ষে ডিএজি সারওয়ার হোসেন বাপ্পী শুনানি করেন বলে জানা গেছে।

আবেদনকারী আইনজীবী আরও জানিয়েছেন, শিক্ষানবিশ আইনজীবী রেজাকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার শুনানিতে মেট্রোপলিটন জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক পিবিআই’কে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেন। কিন্তু হত্যার অভিযোগে যেহেতু পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে সেহেতু স্বচ্ছতার স্বার্থে সেটির তদন্তভার আবার পুলিশের কোন বিভাগের ওপরেই দেয়া সমীচীন নয়।

পুলিশ পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত করলে সঠিক তথ্য উঠে না আসা বা ন্যায়বিচার নিয়ে শঙ্কা সৃষ্টি হতে পারে। তাই ফৌজধারি কার্যবিধির ৫৬১ এর (ক) ধারার ক্ষমতাবলে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছিলো। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, রেজা বরিশাল নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের হামিদ খান সড়কের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী ইউনুছ মুন্সীর ছেলে। তিনি জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য জাকির হোসেন মিন্টুর সাথে শিক্ষানবিশ আইনজীবী হিসেবে প্র্যাকটিস করে আসছিলেন। গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে নগরীর হামিদ খান সড়কের একটি চায়ের দোকানের সামনে থেকে রেজাউল করিম রেজাকে আটক করেন ডিবির এসআই মহিউদ্দিন আহমেদ। পরে আহতাবস্থায় রেজাউলকে থানার মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১ জানুয়ারি শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরের দিন ২ জানুয়ারি রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রেজার মৃত্যু ঘটে।

এলাকাবাসি অভিযুক্ত ডিবির এসআই মহিউদ্দিনের বিচারের দাবি করে রেজার লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পুলিশের অমানুষিক নির্যাতনের কারনেই রেজার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে রেজাউলের বাবা গত ৫ জানুয়ারি আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় মহানগর গোয়েন্দা শাখার পুলিশের এসআই মহিউদ্দিন আহমেদ মাহি সহ তিনজনকে আসামি করা হয়। মামলার পর অভিযুক্ত এসআই মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। অবশ্য পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে দীর্ঘদিন সিরিঞ্জের মাধ্যমে মাদক নেয়ায় রেজার শরীরের নিচের অংশে পচন ধরেছিল। এতে অসুস্থ হয়ে তিনি মৃত্যুবরন করেন। কিন্তু ঘটনার দিনও নিহত রেজাউল আদালতে এসেছিলেন কিভাবে তার উত্তর পাওয়া যায়নি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন