মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

শরীরে দীর্ঘ অস্বস্তিতে ক্যান্সারের আশঙ্কা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

দীর্ঘদিন ধরে ব্যথা, চুলকানি, গলা খুসখুস জাতীয় কোনো অস্বস্তি হচ্ছে শরীরে? তাহলে অবিলম্বে ডাক্তার দেখান। কারণ, যে কোনও দীর্ঘস্থায়ী অস্বস্তি থেকেই হতে পারে ক্যান্সার, এমনটাই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে জানিয়েছেন ভারতের নীলরতন সরকার হাসপাতালের অঙ্কোলজি বিভাগের প্রধান ডা. শঙ্কর মন্ডল।

তিনি বলেন, থার্ড বা ফোর্থ স্টেজে গিয়ে কখনও ক্যান্সার হয় না। ধাপে ধাপেই এগোতে থাকে মারণরোগ। কাজেই প্রথম থেকেই তা জানান দিতে থাকে তার অস্তিত্ব। কিন্তু আমরা ব্যস্ততার মাঝে তা এড়িয়ে যাই। সামান্য কোনও অস্বস্তি হলে যতক্ষণ পর্যন্ত তা বেদনাদায়ক অবস্থায় না পৌঁছচ্ছে, ততক্ষণ এড়িয়ে চলি। এর ফলে যখন বাড়াবাড়ি হয়ে যায়, তখনই দেখা যায় ম্যালিগনেন্সি পৌঁছে গিয়েছে থার্ড বা ফোর্থ স্টেজে। যেখান থেকে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগীকে ফেরত আনা সম্ভব হয় না।

ডা. মন্ডল বলেন, ‘গলা খুসখুস, গলায় ব্যথা, গলা বসে যাচ্ছে, এমন কিছু যদি দীর্ঘদিন ধরে হয়, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। সাধারণত আমরা ধরে নিই গলায় ব্যথা মানেই ঠান্ডা লেগেছে, অথবা টনসিল গ্ল্যান্ড ফুলেছে ভেবে গার্গল করতে থাকি। অবশ্যই তা করা উচিত, কিন্তু যদি দেখেন মাঝে মাঝেই এমনটা হচ্ছে, মাস ঘুরছে না অথচ আপনি ফের অস্বস্তি বোধ করছেন, যার ফলে খেতে সমস্যা হচ্ছে, গলা বসে যাচ্ছে, তাহলে চটজলদি ডাক্তার দেখান। কারণ, কোনো ক্রনিক ইরিটেশন ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়’।

তিনি আরও বলেন, ‘ভারতে যাবতীয় যত ক্যান্সার রোগী আছেন, তাদের মধ্যে ৫০ শতাংশ ‘হেড-নেক’ ক্যান্সারে আক্রান্ত। কারণ, এদেশে ধূমপান, জর্দা সেবনের প্রবণতা বেশি। কথায় আছে, কোনও কিছুই অতিরিক্ত মাত্রায় ভালো নয়। যাঁরা নেশা করেন, তারা মুখের মধ্যে সারাক্ষণ এই ধরনের জিনিস রাখেন। যার ফলে গালে, মাড়িতে, জিভে প্রদাহ তৈরি হয়ে থাকে। সেখানই জন্ম নেয় মারণরোগ। কিন্তু নেশার তাড়নায় প্রাথমিক অস্বস্তির তোয়াক্কা করেন না অনেকেই। যথারীতি দিন গড়ালে ক্যান্সারের মত ভয়াবহ রোগের মুখোমুখি হতে হয়। উত্তরবঙ্গে মানুষের অভ্যাস আছে, মুখে গোটা সুপুরি রেখে দেওয়ার। সেখান থেকেও ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা খুব বেশি থাকে।

ডা. মন্ডল জানিয়েছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কারোর দাঁত ধারালো হয়ে আছে। সেই দাঁতের সঙ্গে বারবার গালের ঘষা লাগছে। সেক্ষেত্রে উচিত, রাতারাতি দাঁতের ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া। কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, অনেকের অভ্যাস দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ানোর, সেক্ষেত্রে যদি ঘা হয়ে যায়, সেখান থেকেও হতে পারে ক্যান্সার। সুতরাং, কোনোরকম দীর্ঘস্থায়ী অস্বস্তি হওয়া মানেই ক্যান্সারের সূচনা হতে পারে।

স্তন বা ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত অসংখ্য মহিলা। এখনকার দিনে অনেকেই স্তন বাদ দিতে চান না, সেক্ষেত্রে চিকিৎসা পদ্ধতি জটিল হয়ে ওঠে। প্রতি মাসে একবার করে নিজেই নিজের স্তন পরীক্ষা করে দেখার পরামরশ দেন চিকিৎসকরা। যদি কোনো উঁচু মাংসপিন্ড হাতে লাগে বা ব্যথার অনুভ‚তি হয়, তাহলে সরাসরি ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। মনে রাখবেন, ব্রেস্ট ক্যান্সার আজকের দিনে ভয়ের কারণ নয়। এটি নির্মূল করা সম্ভব।
কোলন ক্যান্সার অনেক সময় জন্ম সম্বন্ধীয় বা জেনেটিক হয়। কিন্তু খাবারের নিয়মিত উনিশ বিশ হলেও কোলন ক্যান্সারের সম্ভাবনা থাকে। বর্তমানে যেহেতু আমরা নিজেদের জীবনযাত্রাকে পশ্চিমী ধাঁচে গড়ে নিয়েছি, তাই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়া রোগীর সংখ্যাও ক্রমশ বাড়ছে। আমাদের আবহাওয়ায় রেড মিট, হাই-প্রোটিন খাবার যথাসম্ভব কম খাওয়া উচিত, বলেন বিশেষজ্ঞরা।

ডা. মন্ডল আরো বলছেন, ‘শরীরের কোনোরকম অস্বস্তিকে সাধারণ না ভেবে তার দিকে নজর দিন। অস্বাভাবিক মনে হলেই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। তাহলেই, প্রাথমিক পর্যায় থেকে চিকিৎসা করা সম্ভব এবং আপনার মূল্যবান জীবন বাঁচাতে পারবেন। দেরি হয়ে গেলেই সমস্যা গুরুতর হয়ে যায়। তখন ভয়ঙ্কর বাস্তবের সম্মুখীন হতে হয়’। সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
মাসুম ৭ মার্চ, ২০২১, ৪:১৯ এএম says : 0
নিউজটির জন্য দৈনিক ইনকিলাবকে অসংখ্য ধন্যবাদ
Total Reply(0)
বিদ্যুৎ মিয়া ৭ মার্চ, ২০২১, ৪:১৯ এএম says : 0
সচেতনতাই মানুষকে অনেক বড় ধরনের রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে
Total Reply(0)
জহির ৭ মার্চ, ২০২১, ৪:২০ এএম says : 0
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সকল মুসিবত থেকে হেফাজত করুক
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন