মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

রোহিঙ্গাদের জন্য অব্যাহত সহায়তার ঘোষণা

আন্তর্জাতিক মিশন প্রধানদের কক্সবাজার সফর

কূটনৈতিক সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশনার এবং জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতদের সমন্বয়ে গঠিত এক প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের শরণার্থী সেবা কার্যক্রমে ধারাবাহিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। গত ৩-৪ মার্চের সফরকালে প্রতিনিধিরা একটি দুর্যোগ প্রস্তুতি প্রকল্প, খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম, একটি শিক্ষাকেন্দ্র এবং একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী স্বাস্থ্যকর্মীদের সাথে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প ও আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠীর মধ্যে কোভিড-১৯ মোকাবেলা কার্যক্রমে তাদের ভূমিকা বিষয়ে আলাপ করেন।

জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবরে রোহিঙ্গা কার্যক্রমের দাতা সম্মেলনের পর এটিই প্রথম সফর। সেই সম্মেলনে আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠী ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য অতিরিক্ত প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার ত্রাণ তহবিল সংস্থান হয়েছিলো।
২০১৭ সালে মিয়ানমারে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে এই সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় সহযোগিতা দিয়ে আসছে। সেই সময়ে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তা হিসেবে অস্ট্রেলিয়া ২৪০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ সহায়তা দিয়েছে, জাপান দিয়েছে ১৪০ মিলিয়ন ডলার, এবং বাংলাদেশের আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠীসহ ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ১.২ বিলিয়ন ডলার সহায়তা নিয়ে সাড়া দিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রতিনিধিরা ক্যাম্প ৪-এ খাদ্য সহায়তা গ্রহণকারী সুফলভোগীদের পরিচয়পত্র স্পর্শহীনভাবে যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ/জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা প্রণীত কুইক রেসপন্স কোডের একটি উদ্ভাবনী ব্যবহার প্রত্যক্ষ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচীর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের তহবিলের আওতায় এই দলটি কক্সবাজার জেলার প্রায় সকল শরণার্থীকে অর্থাৎ প্রতি মাসে প্রায় ৮ লাখ ৫৭ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ব্লকচেইন লেজার ভিত্তিক ই-ভাউচারের মাধ্যমে জরুরী খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে। প্রতিনিধিরা ক্যাম্পের বাসিন্দাদের মধ্যে মহামারী প্রতিরোধে সুরক্ষা পন্থা বিষয়ে জরুরী তথ্যপ্রদানকারী সাহসী শরণার্থী স্বেচ্ছাসেবীদের সাথেও সাক্ষাৎ করেন।

প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশ সরকার এবং ইন্টার সেক্টর কোঅর্ডিনেশন গ্রুপ, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা, জাতিসংঘ শিশু তহবিল, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কর্মকর্তাদের সাথেও সাক্ষাৎ করেন। সফরকালে অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশনার ব্রুয়ার বলেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানের জন্য বাংলাদেশের প্রতি আমাদের জোরালো সহায়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করতে চাই। জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো বলেন, বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আমাদের সহায়তা আরো ত্বরান্বিত করা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বেসরকারী সংস্থাগুলোর সাথে সহযোগিতা জোরদার করার উদ্দেশ্যে আমরা এই যৌথ মিশনে যুক্ত হয়েছি। কক্সবাজারে মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি রাখাইন রাজ্য থেকে বিতাড়িত জনগোষ্ঠীকে অতিসত্ত্বর ফিরিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে জাপান কাজ করে যাবে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় শরণার্থী বা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা ও আশ্রয় দানকারী জনগোষ্ঠীর কথা ভুলে যায়নি। শরণার্থীদেরকে স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদার সাথে ও স্থায়ীভাবে ফিরিয়ে নেবার লক্ষ্যে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য মায়ানমারকে উৎসাহিত করতে আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাথে অব্যাহতভাবে কাজ করবো। সেই লক্ষ্যে, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর, অন্যায়ভাবে গ্রেফতারকৃত সকলকে মুক্তি দান এবং সাংবাদিক, আন্দোলনকর্মী ও অন্যান্যদের প্রতি আক্রমণ বন্ধে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রতি আহ্বানকারী সকলের প্রতি আমরা জোর সমর্থন জানাচ্ছি। এখন সামরিক বাহিনীকে সর্বোচ্চ সংযম দেখাতে হবে এবং অতিরিক্ত সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে হবে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন